স্বপ্না সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। লেখাপড়ায় যেমন ভালো খেলাধুলাতেও তেমনি। এজন্য সহপাঠীরা স্বপ্নাকে খুব ভালোবাসতো। একদিন স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় একটি হাত ও একটি পা হারাতে হয় তাকে। এতে স্বপ্না মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। সবার সামনে আসতে বিব্রতবোধ করে। লেখাপড়া যে আর হবে না সে ও তার পরিবার নিশ্চিত হয়ে যায়। কিন্তু তার সহপাঠীরা সান্ত্বনা, সহযোগিতা আর সাহস দিয়ে তাকে আবার লেখাপড়ার ব্যাপারে উৎসাহী করে তোলে। এই স্বপ্নাই একদিন এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে স্কুলের সুনাম বৃদ্ধি করে।
মোহিনীদেবী আর শৈলবালা দুই বান্ধবী। দুজনের ছেলেই এবার পঞ্চম শ্রেণিতে। মোহিনীদেবী এ বয়সেই তার ছেলে অমিতকে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার বানিয়ে ফেলতে চান। খেলাধুলা ও আমোদ-প্রমোদ বাদ দিয়ে সবসময় লেখাপড়ার চাপে রাখেন। এতে অমিত মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অপরদিকে শৈলবালা মোহিনীদেবীর বিপরীত। ছেলের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো কাজ করেন না। পাঠ্যবইয়ের বাইরে ছেলে যে বই পড়তে ভালোবাসে লাইব্রেরি থেকে এনে পড়তে দেন। এতে পড়ালেখার প্রতি ছেলের আগ্রহ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায় এবং সে মানসিকভাবে চাঙ্গা হয়ে উঠে।
উদ্দীপক (i) : রূপালি গৃহস্থালির কাজে বেশ পটু। বাড়ির সদস্যদের প্রয়োজনে যতটুকু কাজ করা দরকার তার চেয়ে বেশিই করে। ভদ্র ও অমায়িক আচরণের জন্য বাড়ির সবাই তার প্রতি সন্তুষ্ট।
উদ্দীপক (ii) : এত স্নিগ্ধ নদী কাহার, কোথায় এমন ধূম্র পাহাড়, কোথায় এমন হরিৎ ক্ষেত্র আকাশতলে মেশে । এমন ধানের উপর ঢেউ খেলে যায় বাতাস কাহার দেশে। এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, ও সে সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি ।
প্রমিত ও অনুরাগ দুই বন্ধু। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি তারা সাহিত্যবিষয়ক বই পড়তে খুবই পছন্দ করে। প্রমিত গদ্যে লিখিত বৃহৎ পরিধির কাহিনীনির্ভর সাহিত্য পড়তে ভালোবাসে। অপরদিকে অনুরাগ আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে পড়ে ওঠা যায় এমন কাহিনীই পড়তে সাচ্ছন্দ্যবোধ করে। সাহিত্যের এ শাখাটি অনুরোগের খুব প্রিয় ।
হাসান সাহেব ছেলেকে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি করিয়ে গৌরবের শেষ নেই। কারণ তিনি মনে করেন, ভাষিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষা অধিক কার্যকর। অন্যদিকে জামান সাহেব ছেলেকে বাংলা মাধ্যমে পড়াচ্ছেন। তিনি ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর যে কথাটিতে অনুপ্রাণিত হন তা হল “মাতা, মাতৃভাষা ও মাতৃভূমির প্রতি যারা অনুরাগহীন তারা পশু বিশেষ । ”
ইসমাইল সাহেব একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। সুরম্য অট্টালিকায় বাস করেন। একমাত্র আদরের মেয়ে ডলির কোনো ইচ্ছা তিনি অপূর্ণ রাখেন না। হঠাৎ ডলি অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েন। দেশে-বিদেশে চিকিৎসা করিয়েও কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। রোগমুক্তির আশায় প্রচুর দান-খয়রাত করার পাশাপাশি সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছেন, তিনি যেন ডলিকে দ্রুত সুস্থ করে দেন ।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বিজয়পুর গ্রামে প্রবেশ করে নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করে । চারদিক থেকে মুহুর্মুহু গুলির আওয়াজ ভেসে আসছে। পথে পথে রক্তের দাগ। প্রাণ বাঁচাতে আতঙ্কিত মানুষ যে যেদিকে পারে ছুটছে। এসব দেখে এ গ্রামেরই কিশোর বিপ্লব মনে মনে সিদ্ধান্ত নিল এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে তাকে রুখে দাঁড়াতেই হবে। তাই দেশমাতৃকার ডাকে সাড়া দিয়ে বিপ্লব যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
২০২০ সালের এপ্রিল মাসে ৪/৫ দিনের ব্যবধানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৫ম শ্রেণি পড়ুয়া ফাতিনের মা-বাবা এবং বড় দুইবোন মৃত্যুবরণ করে। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় ফাতিন । চোখের সামনে প্রিয়জনদের মরতে দেখে সে হতবিহ্বল ও শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়ে। কখন কী করে ঠিক-ঠিকানা নেই। লোকে বলে ফাতিন পাগল হয়ে গেছে। যেখানে-সেখানে রাত কাটায়। পাড়া প্রতিবেশী যা দেয় তা খেয়েই কোনো রকমে বেঁচে আছে ফাতিন ।
আরমান সাহেবের ছেলে কঠিন রোগে আক্রান্ত। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। একান্ত নিরূপায় হয়ে তিনি প্রতিবেশি ধনী জোতদার বাদশা মিয়ার শরণাপন্ন হন। তিনি টাকা ধার দিতে রাজি হলেও শর্ত দেন যে, তার ছেলের সাথে আরমান সাহেবের মেয়ের বিয়ে দিতে হবে। কিন্তু আরমান সাহেবের মেয়ে এ বিয়েতে রাজি নয়। বিয়ের শর্তে টাকা ধার না নেয়ার বিষয়টি জানাতে গেলে বাদশা মিয়া বলেন যে, “শর্ত ছাড়াই প্রতিবেশী হিসেবে আমি আপনাকে ধার দেব।”
রিমি স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে একটি এনজিওতে কাজ নিয়েছে। কাজের প্রয়োজনে তাকে মোটর সাইকেলে করে গ্রামের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঘুরে বেড়াতে হয়। ধৰ্মীয়- গোঁড়ামি ও কুসংস্কারের কারণে গ্রামের কিছু লোক ব্যাপারটি সহজভাবে মেনে নেয়নি। তারা রিমিকে চাকরি ছাড়তে চাপ প্রয়োগ করে, কিন্তু রিমি কিছুতেই তা করতে রাজি নয়। এমন সংকটময় মুহূর্তে তার সাহায্যে এগিয়ে আসেন এলাকার চেয়ারম্যান সাহেব। তিনি ঐ লোকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “নারীপুরুষের সমন্বিত প্রচেষ্টা ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমাদের চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন আনা দরকার ।”