অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি - তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির নিরাপদ ও নৈতিক ব্যবহার | NCTB BOOK

যখনই বিচ্ছিন্নভাবে প্রাপ্ত উপাত্ত সুসংগঠিত হয়, তখন সেটি তথ্যে পরিণত হয়। ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন তথ্য সৃষ্টি করে। রাষ্ট্রীয় কার্যাবলির সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানার অধিকারই হলো তথ্য অধিকার। ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ১৩টি দেশে এই জাতীয় তথ্য জানাকে আইনি অধিকার হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এই জন্য সে সকল দেশে তথ্য অধিকার আইন প্রণীত ও বাস্তবায়িত হয়েছে। বাংলাদেশে তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ সাল থেকে বলবৎ রয়েছে। তথ্য অধিকার আইনে তথ্য প্রাপ্তিকে ব্যক্তির চিন্তা, বিবেক ও বাকস্বাধীনতার পূর্বশর্ত হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

তথ্য অধিকার আইনে তথ্য বলতে কোনো কর্তৃপক্ষের গঠন, কাঠামো ও দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত যেকোনো স্মারক, বই, নকশা, মানচিত্র, চুক্তি, তথ্য-উপাত্ত, লগবই, আদেশ, বিজ্ঞপ্তি, দলিল, নমুনা, পত্র, প্রতিবেদন, হিসাব বিবরণী, প্রকল্প প্রস্তাব, আলোকচিত্র, অডিও, ভিডিও, অতিচিত্র, ফিল্ম, ইলেকট্রনিক প্রক্রিয়ায় প্রস্তুতকৃত যেকোনো ইনট্রুমেন্ট, যান্ত্রিকভাবে পাঠযোগ্য দলিলাদি এবং ভৌতিক গঠন ও বৈশিষ্ট্য নির্বিশেষে অন্য যেকোনো তথ্যবহ বন্ধু বা এদের প্রতিলিপি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে, প্রত্যেক দেশে কিছু বিশেষ তথ্যকে এই আইনের আওতা থেকে মুক্ত রাখা হয়েছে। যেমন তোমার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা, শিক্ষকের সংখ্যা, তোমাদের ফি ইত্যাদি তথ্য জানাটা যেকোনো নাগরিকের অধিকার। কিন্তু পরীক্ষায় কী প্রশ্ন আসবে ভা জানাটা কারো অধিকার নয়।

বিশ্বের দেশে দেশে এ আইনের আওতায় প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান তাদের তথ্যসমূহ প্রকাশ করতে বাধ্য থাকে। এ আইনের বরখেলাপ হলে আইন অনুযায়ী শাস্তি পেতে হয়। যে সকল দেশে এ আইন বলবৎ রয়েছে সে সব দেশে এ আইনের বাস্তবায়ন তদারকি করার জন্য একটি তথ্য কমিশন গঠন করা হয়। বাংলাদেশেও একটি তথ্য কমিশন আছে (http://www.infocom.gov.bd)। কমিশন এই আইনের অভিভাবক হিসাবে কাজ করে এবং কোনো ব্যক্তি এ আইনের আওতার তথ্য পেতে বঞ্চিত হলে কমিশনের কাছে অভিযোগ দাখিল করতে পারে।

Content added By