অষ্টম শ্রেণি (দাখিল) - বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় - বাংলাদেশের সামাজিক সমস্যা | NCTB BOOK

মাদকাসক্ত-সঙ্গীদের সাথে মেলামেশার মধ্য দিয়েই প্রধানত মাদকাসক্তির সূত্রপাত ঘটে। মাদকের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে না জেনেই, কেবল সাময়িক উত্তেজনা লাভের জন্য ও বন্ধুদের প্ররোচনায় কিশোর-কিশোরীরা মাদকদ্রব্য সেবন করে। পরে তা তাদের মরণনেশায় পরিণত হয়। কিশোরমন স্বভাবতই কৌতূহলপ্রবণ। ফলে শুধুমাত্র কৌতূহলের বশেও অনেকে মাদক গ্রহণ করা শুরু করে। পিতা বা বাড়ির অন্য বয়স্কদের পকেট থেকে বিড়ি-সিগারেট চুরি করে শিশু-কিশোররা অনেক সময় তাদের কৌতূহল মিটায়। এই কৌতূহল থেকে একসময় তাদের ধূমপানের অভ্যাস গড়ে উঠে এই ধূমপান থেকেই তারা পরে অন্যান্য নেশাদ্রব্য যেমন-গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন, ইয়াবা প্রভৃতিতে আসক্ত হয়ে পড়ে । বেকারত্ব, নিঃসঙ্গতা, প্রিয়জনের মৃত্যু, পারিবারিক অশান্তি ইত্যাদি কারণে অনেকের মনে হতাশার সৃষ্টি হয়। আর এই হতাশা থেকে মুক্তি লাভের আশায় প্রথমে বন্ধুবান্ধবের পরামর্শে বা তাদের দেখাদেখি অনেকে মাদকদ্রব্য গ্রহণ করতে শুরু করে। পরে এটা তাদের নেশায় পরিণত হয়। মাতাপিতার স্নেহ ও মনোযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে কিংবা পারিবারিক অশান্তি ও ঝগড়াবিবাদ থেকেও অনেক সময় শিশু-কিশোরদের মনে হতাশা জন্ম নেয়। এক পর্যায়ে তারা মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ে।

অপসংস্কৃতির প্রভাবও মাদকাসক্তির পিছনে একটি বড় কারণ হিসাবে কাজ করে। চলচ্চিত্র, টিভি চ্যানেল, ইন্টারনেট প্রভৃতির মাধ্যমে আজকাল এক দেশের সংস্কৃতি সহজেই অন্য দেশের সংস্কৃতি ও জনজীবনকে প্রভাবিত করছে। দুই ভিন্ন সংস্কৃতির টানাপোড়েনে পড়েও যুব সমাজের একটা অংশ বিভ্রান্ত ও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে মাদকে আকৃষ্ট হচ্ছে।

কাজ : শিশু-কিশোরদের মাদকাসক্ত হওয়ার পিছনে কী কী কারণ কাজ করে? আলোচনা করো।

Content added By
Promotion