SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Social Account

অষ্টম শ্রেণি (দাখিল) - তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি - তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির নিরাপদ ও নৈতিক ব্যবহার | NCTB BOOK

পৃথিবী থেকে দুর্নীতি কমানোর জন্য সবাই নানাভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে এবং তথ্যপ্রযুক্তি দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে পরিচিত হয়েছে।

দুর্নীতি করা হয় গোপনে। কারণ কোনো সমাজই দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রাপ্তি সহজতর হয়েছে। কোথাও কোনো দুর্নীতি করা হলে সেটি সবার সামনে প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে। একটি প্রতিষ্ঠানকে দক্ষভাবে চালাতে হলে পুরানো কালের কাগজপত্রে হিসেব রেখে চালানো সম্ভব নয়। তথ্যকে সংরক্ষণ আর প্রক্রিয়া করার জন্য পুরো পদ্ধতিকে তথ্যপ্রযুক্তির আওতায় আনতে হবে। মজার ব্যাপার হচ্ছে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য তথ্যপ্রযুক্তিকে ব্যবহার করা হলেও সেটি একই সাথে দুর্নীতি নিরসনের কাজটিও করছে। তথ্যপ্রযুক্তি দুর্নীতিকে প্রকাশ করে দিচ্ছে। দুর্নীতি করে আর্থিক লেনদেন করা হলে সেটি তথ্যভান্ডারে চলে আসছে এবং স্বচ্ছতার কারণে সেটি প্রকাশ পাচ্ছে।

যে সমস্ত কাজে অনেক টাকা ব্যয় করতে হয়, সেগুলো কীভাবে করতে হয় প্রত্যেক দেশেই তার সুনির্দিষ্ট নিয়ম আছে। প্রচলিত নিয়মানুযায়ী এ কাজগুলো টেন্ডারের মাধ্যমে করা হয় অর্থাৎ কাজের বর্ণনা দিয়ে বিজ্ঞাপ্তি প্রকাশ করা হয় এবং আগ্রহী প্রতিষ্ঠান কত টাকার বিনিময়ে সেই কাজ করতে পারবে, সেটি লিখিতভাবে জানার এবং কর্তৃপক্ষ সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে কাজটি করার জন্য কাউকে বেছে নেয়। একসময় দুর্নীতিপরায়ণ প্রতিষ্ঠান এ বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করত। ভয়ভীতি দেখিয়ে অন্যদের সুযোগ না দিয়ে জোর করে নিজেরাই কাজ করার চেষ্টা করত। আজকাল ই-টেন্ডারিংয়ের মাধ্যমে এগুলো করা হয় এবং কোনো মানুষের সরাসরি মুখোমুখি না হয়ে শুধু তথ্যগুলো নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সরবরাহ করে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয় বলে দুর্নীতি করার সুযোগ অনেক কমে গিয়েছে।

আমাদের দেশে যারা বিক্রি করার জন্য কোনো পণ্য তৈরি করে কিংবা কোনো কিছু উৎপাদন করে, তারা অনেক সময়েই সেগুলো ক্রেতার কাছে সরাসরি বিক্রয় করতে পারে না। কোনো এক ধরনের দালাল পণ্য উৎপাদনকারীর কাছ থেকে কম দামে পণ্যগুলো কিনে বেশি দামে ক্রেতার কাছে বিক্রয় করে। এতে ক্রেতা ক্ষতি হয় এবং পণ্য উৎপাদনকারীরাও নায্যমূল্য পায় না। তথ্যপ্রযুক্তি এবং ইন্টারনেটের কারণে এই দালাল শ্রেণির মানুষের সাহায্য ছাড়াই পণ্য উৎপাদনকারীরা সরাসরি ক্রেতাদের কাছে তাদের পণ্য বিক্রি করার সুযোগ পাচ্ছে। পণ্য বিক্রি করার জন্য কোনো দোকান বা শোরুমের প্রয়োজন হয় না, কোনো গুদামে সেগুলো রাখতে হয় না। কাজেই কোনো অর্থ বা সম্পদের অপচয় হয় না বলে উৎপাদনকারী এবং ক্রেতা দুজনেই লাভবান হয়।

পৃথিবীর অনেক ক্ষমতাশালী দেশ বা প্রতিষ্ঠানও তাদের ক্ষমতার কারণে এই পৃথিবীর নানা দেশে নানা ধরনের অবিচার করে থাকে, যুদ্ধবিগ্রহ শুরু করে এবং সাধারণ মানুষ নানা ধরনের বিপর্যয় এবং দুঃখ-দুর্দশার মুখোমুখি হয়। এর পেছনে হয়তো কোনো অবিবেচক স্বৈরশাসক কিংবা নীতিহীন রাষ্ট্রপ্রধান বা নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্ত কাজ করেছে। একসময় তার বিরুদ্ধে কোনো মানুষের কিছু বলা বা করার ক্ষমতা ছিল না। এখন ইন্টারনেট হওয়ার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের কাছে সরবরাহ করা অনেক গোপন তথ্য পৃথিবীর মানুষের সামনে প্রকাশ করে দিচ্ছে— এটি আইন সম্মত কি না সে বিষয়ে অনেক বিতর্ক থাকলেও পৃথিবীর সাধারণ মানুষ প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রের বড় বড় অপকর্ম কীভাবে করা হয় সে সম্পর্কে ধারণা পাচ্ছে।

লগত কাজ : তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি দুর্নীতিপরায়ণ মানুষকে ধরা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে একটি ছোট নাটিকা মঞ্চস্থ কর।

নতুন শিখলাম : ই-টেন্ডারিং, ই-কমার্স।

Content added By