SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

এসএসসি(ভোকেশনাল) - ফ্রুট এন্ড ভেজিটেবল কাল্টিভেশন-১ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | NCTB BOOK

গাজরের জাত 

গাজরের এশিয়াটিক ও ইউরোপীয় জাত আছে। এশিয়াটিক জাত আকারে বড়, হলুদ গাঢ় বর্ণের এবং খাদে মিষ্টি হয়ে থাকে। এটি উচ্চ তাপমাত্রায় জন্মে এবং শীতের পরিবেশ ছাড়াই বীজ উৎপাদন করতে পারে। ইউরোপীয় জাত কিছুটা ছোট, আকর্ষণীয় ও কম আঁশাল। বাংলাদেশে যে সমস্ত জাত চাষ হয়ে থাকে তার প্রায় সবগুলোই বিদেশ থেকে আনা হয়েছে। বাংলাদেশে চাষকৃত জাত হলো যথা- রয়েল ক্রস, কোরেল ক্রস, কীনকো, সানটিনো রয়েল ও স্কারলেট নান্টেস, কুরোদা-৬৫, জি কুরোদা, ইয়লো রকেট, অরেঞ্জ কীং ইত্যাদি।

জমি তৈরি ও সার প্রয়োগ 

জমি তৈরি : 

জমি অত্যন্ত ঝুরঝুরে ও রসালো হলে গাজর ভালো জন্মে। এর বীজ অত্যন্ত ছোট ও হালকা। তাই বীজ বপনের আগে ১ ভাগ বীজের সাথে ৯ ভাগ বালি বা ছাই মিশিয়ে নিলে সমভাবে বপন করা যায়। জমিতে সরাসরি ছিটিয়ে বা বেডে লাইন করে বীজ বপন/রোপণ করা যায়। বেড়ে বপন করা হলে ২৫সেমি পর পর জোড়া সারি করে ১-১.৫ সেমি. গভীর জুলিতে বীজ বপন করা উত্তম। প্রতি দুই সারি পর পর ৩০ সেমি করে ফাক দেওয়া যেতে পারে । বীজ বপনের জন্য তৈরি জুলিতে এক নাগাড়ে বীজ বুনার পর ঝুর ঝুর মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হয়। প্রয়োজনবোধে মাটির উপরে খড় বিছিয়ে হালকা করে সেচ দেওয়া যেতে পারে। বীজ গজানার পর খড় সরায়ে দিতে হয়। মাটি আগলা ও চারা পাতলা করে ৫-৭ সেমি. দূরত্বে একটি করে গাছ রাখলে ভালো হয়। এ কাজ চারা গজানোর ১৫-২০ দিন পর করতে হয়। 

সার প্রয়োগঃ হেক্টর প্রতি সার প্রয়োগের পরিমাণ নিচে দেওয়া হলো

গোবর সার - ১০ টনটিএসপি সার - ১৫০ টন
ইউরিয়া - ২০০ কেজিএমওপি সার - ১২০ কেজি

গোবর/কম্পোস্ট এবং টিএসপি সার পুরোপুরি এবং ইউরিয়া ও পটাশ সারের ১/৩ অংশ জমি তৈরির শেষ পর্যায়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হয়। অবশিষ্ট ইউরিয়া ও পটাশ সার সমান তিন কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হয়। চারা গজানোর ২০ থেকে ২৫ দিন পর ১ম কিস্তি এবং পরবর্তী ১৫ দিন পর পর ২য় ও ৩য় কিস্তি সার দেওয়া যেতে পারে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় কিত্তির সার ১৫ দিন পর পর সারির দু'পাশে হালকা জুলি কেটে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় কিস্তিতে পটাশ সারও ঐ একইভাবে প্রয়োগ করা যেতে পারে।

বীজ/চারা রোপণ ও অন্তবর্তীকালীন পরিচর্যা 

বীজ বপনঃ গাজরের বীজ খুব ছোট। গাজর বীজ ছিটিয়ে বা সারিতে বপন করা হয়। এর চারা তৈরি করে চাষ করা হয় না। বীজ সমভাবে ও সহজভাবে বপনের জন্য ১ ভাগ বীজের সাথে প্রায় ৯ ভাগ ছাই বা শুকনো বালি মিশিয়ে নিলে ঠিকমত বপন করা যায়। পরিচর্যার সুবিধার্থে চাষকৃত জমিতে ৫০-১০০ সেমি. চওড়া করে বেড় তৈরি করতে হয়।

প্রতি বেড পর পর ২০ সেমি. চওড়া ও ২০ সেমি. গভীর করে নালা তৈরি করতে হয়। বেডে ৩০ সেমি. পর পর সারি টেনে অর্থাৎ প্রতি বেডে জোড়া তিন সারি করে তাতে ১-১.৫ সেমি. গভীর করে নালা/জুলি টানতে হবে। এ নালায় ছাই বা বালি মিশ্রিত বীজ পাতলা করে একনাগাড়ে বপন করে দিতে হয়। তারপর হালকাভাবে ঝুরঝুরে মাটি দিয়ে ঢেকে দিয়ে সামান্য চেপে দিতে হয়। ২-৩ দিনের মধ্যে বীজ গজানো শুরু করে। অনেক সময় বীজ বপনের পর খড় দেওয়া হয়। বীজ গজানোর পর খড় দিলে তা সরায়ে দিয়ে চারা পাতলা করতে হয়। চারা ৫/৭ সেমি. লম্বা হলে প্রতি সারিতে ৫-০ সেমি. পর পর ১টি করে গাছ রেখে অন্যগুলো তুলে ফেলতে হয়। এ কাজ চারা গজানোর ১৫-২০ দিনের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হয়।

পোকামাকড় দমন 

জাব পোকাঃ এ পোকা পাতা ও গাছের কচি অংশের রস চুষে খেয়ে যথেষ্ট ক্ষতি করে। জাব পোকার আক্রমণ হলে ম্যালাথিয়ন ১.২ লিটার ৬০০ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে এক হেক্টর জমিতে স্প্রে করে দমন করা যায় । 

সেচ ও নিষ্কাশন 

আগাছা দমন এবং সেচ ও নিকাশের ব্যবস্থা করতে হয়। সার প্রয়োগ এবং সেচ বা বৃষ্টিপাতের পর মাটি খুচিয়ে আগলা করে দিতে হয়। গাছের গোড়ায় হালকাভাবে মাটি তুলে দিলে গাজর যথাযথভাবে বৃদ্ধি পায় ও ফলন বেশি হয়। এসব কাজ করার সময় শিকড়ের যাতে ক্ষতি না হয় সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হয়।

ফসল সংগ্রহ, সংক্ষণ ও বাজারজাতকরণ 

বীজ বপনের ১১০-১২০ দিনের মধ্যে গাজর সংগ্রহ উপযোগী হয়। তবে ৭০-৭৫ দিন বয়স থেকেই উঠানো যায় । কিন্তু তাতে ফলন কম হয়। হেক্টরে ১৫-২৫ টন গাজর ও ৩০০-৪০০ কেজি বীজ জন্মিতে পারে। বীজের জন্য গাজর বেশি সময় ধরে জমিতে রাখতে হয়। ফুল হওয়ার ৩০-৩৫ দিন পর বীজ শুকিয়ে খড়ের ন্যায় বা বাদামী রং ধারণ করে। এ সময় ভোরে ফুলের ডাটাসহ কেটে আনতে হয়। পরে মাড়াই করার স্থানে শুকিয়ে কাঠি দিয়ে আস্তে আস্তে পিটিয়ে মাড়াই করে ও পরিষ্কার করে বীজ সংগ্রহ করতে হয়। গাজর পরিপক্ক হওয়ার পর উঠিয়ে পাতা বোঁটা পর্যন্ত কেটে ছায়ায় ২-৩দিন শুকাতে হয়। ছায়া ও ঠান্ডা স্থানে গাজর ২-৩ সপ্তাহ রাখা যায়। এরপর আরও ২-৩ মাস রাখতে হলে ঠান্ডা পরিচ্ছন্ন বালি দিয়ে ঢেকে ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হয়।

Content added || updated By

এক কথায় উত্তর 

১. গাজরের কয় ধরনের জাত আছে ? 

২. গাজর বীজ বপনে ১ ভাগ বীজের সাথে কয়ভাগ বালি মেশাতে হয় ? 

৩. গাজর বীজ কয়ভাবে বপন/রোপণ করা যায় ? 

৪. গাজর কতদিনে সংগ্রহ করা যায় ? 

৫. হেক্টরে গাজর কত টন হতে পারে ? 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 

১. গাজরের বীজ বপন পদ্ধতি সম্পর্কে লেখ । 

২. গাজর চাষের হেক্টর প্রতি সারের পরিমাণ উল্লেখ কর। 

রচনামূলক প্রশ্ন 

১. গাজরের চাষ পদ্ধতি বর্ণনা কর ।

Content added By