নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ব্যবসায় উদ্যোগ - মালিকানার ভিত্তিতে ব্যবসায় | NCTB BOOK

বর্তমান প্রেক্ষাপটে অংশীদারি ব্যবসায় একমালিকানা ব্যবসায়ের মতোই প্রাচীন ব্যবসায় সংগঠন। তবে একমালিকানা ব্যবসায়ের কিছু সীমাবদ্ধতা দূর করার প্রয়োজনে অংশীদারি ব্যবসায়ের উদ্ভব হয়। একমালিকানা ব্যবসায়ের সাথে এ ব্যবসায়ের কিছু কিছু মিল থাকলেও অংশীদারি ব্যবসায়ের এমন কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যেগুলো একে একমালিকানা ও অন্যান্য যৌথ উদ্যোগী ব্যবসায় থেকে আলাদা করেছে। নিচে অংশীদারি ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্যগুলো বিশ্লেষণ করা হলো-

১. আইনগত ঝামেলা না থাকায় অংশীদারি ব্যবসায়ের গঠনও বেশ সহজ। চুক্তি সম্পাদনের জন্য যোগ্য একাধিক ব্যক্তি মৌখিক বা লিখিত চুক্তির মাধ্যমে এ ব্যবসায় শুরু করতে পারে। একাধিক ব্যক্তি বলতে সর্বনিম্ন ২ জন এবং সর্বোচ্চ ২০ জনকে বোঝায়। ব্যবসায়টি যদি ব্যাংকিং সংক্রান্ত হয় তখন সদস্য সংখ্যা ১০ জনের বেশি হতে পারবে না।

২. অংশীদারদের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি অংশীদারি ব্যবসায়ের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। চুক্তিবদ্ধ সম্পর্কের আলোকেই এ ব্যবসায় গঠিত, পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। এরূপ চুক্তি হতে পারে মৌখিক বা লিখিত, নিবন্ধিত বা অনিবন্ধিত।

৩. এ ব্যবসায়ের অংশীদারগণ চুক্তিতে বর্ণিত নিয়মানুযায়ী মূলধন সরবরাহ করে থাকে। ব্যবসায়ের লাভ- লোকসানও চুক্তি অনুযায়ী বণ্টিত হয়। চুক্তিতে কিছু উল্লেখ না থাকলে সমান হারে লাভ-লোকসান বণ্টিত হবে। আবার চুক্তিতে উল্লেখ থাকলে কেউ মূলধন না দিয়েও অংশীদার হতে পারে। তবে প্রত্যেক অংশীদারের দায় ব্যক্তিগত ও সামষ্টিকভাবে অসীম। অর্থাৎ কোনো দেনা পরিশোধের জন্য ব্যবসায়িক সম্পদ যথেষ্ট না হলে অংশীদারগণের ব্যক্তিগত সম্পদ সেজন্য দায়বদ্ধ থাকে। কোনো অংশীদার দেউলিয়া হলেও তার দায় অবশিষ্ট অংশীদারগণকে বহন করতে হয়।

৪. পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে এ ব্যবসায় গড়ে উঠে এবং এ ব্যবসায়ের সফলতা এর উপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে অংশীদারগণের মধ্যে আস্থাহীনতা, বিশ্বাসের অভাব ও বিরোধ দেখা দিলে ব্যবসায়ের বিলোপ ঘটে।

৫. অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক নয়। তবে যে সকল অংশীদারি ব্যবসায় নিবন্ধিত হয়, সেগুলো অনিবন্ধিত ব্যবসায় থেকে বেশ কিছু বেশি সুবিধা ভোগ করে থাকে। নিবন্ধিত হলেও এ ব্যবসায়ে কোনো আইনগত সত্তার সৃষ্টি হয় না। ফলে ব্যবসায় নিজস্ব নামে পরিচালিত হতে পারে না। ব্যবসায়ের সকল লেনদেনও অংশীদারদের সাথে ব্যক্তিগতভাবে হয়েছে বলে ধরা হয়। পৃথক আইনগত সত্তা না থাকায় এ ব্যবসায়ের স্থায়িত্ব অংশীদারদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর নির্ভরশীল।

Content added By