নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ব্যবসায় উদ্যোগ - ব্যবসায় নৈতিকতা ও সামাজিক দায়িত্ব | NCTB BOOK

বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায় জগতে ব্যবসায়ীকে নিজের মুনাফা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য অর্জনের পাশাপাশি অনেক পক্ষের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে হয়। এরা হলো রাষ্ট্র, সমাজ, ক্রেতা ও কর্মচারী। এসব পক্ষ কোনো না কোনো ভাবে ব্যবসায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট।


রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধতা ( Responsibility to State): জনগণের স্বার্থ রক্ষা করে ব্যবসা পরিচালিত হোক এটাই রাষ্ট্রের লক্ষ্য। ব্যবসায় স্থাপন ও অগ্রগতির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে জনগণের চাহিদা মেটানো হলে অর্থাৎ পণ্য বা সেবা প্রদানের পাশাপাশি নিয়মিত কর প্রদান করা হলে সরকার খুশি। ব্যবসায়কে রাষ্ট্রের প্রতি নিম্নোক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়— 

ক. সরকারকে নিয়মিত কর ও রাজস্ব প্রদান করা।
খ. সরকারের নিয়মনীতি যথাযথভাবে পালন করা।
গ. কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা ৷


সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা ( Responsibility to Society): সমাজ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেই ব্যবসায়ের উন্নতি ও সমৃদ্ধি ঘটে। তবে ব্যবসায়কে সমাজের প্রতি নিম্নোক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়।

ক. সমাজের প্রয়োজন মাফিক মানসম্মত পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ করা ।
খ. কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।
গ. বিভিন্ন জনহিতকর কাজে সহায়তা করা।
ঘ. জাতীয় দুর্যোগে জনগণের পাশে দাঁড়ানো।
ঙ. পরিবেশ দূষণ থেকে এলাকাকে রক্ষা করা।
চ. পণ্যের মজুতদারি না করা ।

ক্রেতা ও ভোক্তাদের প্রতি দায়বদ্ধতা ( Responsibility to Customer and Consumer ): ক্রেতা ও ভোক্তাদের আস্থা ও সহযোগিতার উপর ব্যবসায়ের সফলতা নির্ভর করে। তাই ব্যবসায়ীকে নিম্নোক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়-
ক. পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখা।
খ. মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করা।
গ. পণ্য সামগ্রী প্রাপ্তি সহজতর করা।
ঘ. পণ্য ও বাজারসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করা।


শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রতি দায়বদ্ধতা (Responsibility to Employees): 

শ্রমিক ও কর্মচারীদের অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলেই ব্যবসায়ে মুনাফা অর্জিত হয়। তাই তাদের স্বার্থকে অবহেলা করে ব্যবসা পরিচালনা করা যায় না। ব্যবসায় উন্নতির সাথে তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি ও বোনাস প্রদান করা এবং তাদের অবস্থার উন্নতির চেষ্টা করা উচিত। একজন ব্যবসায়ীকে তার প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক ও কর্মচারীদের প্রতি নিম্নোক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়-
ক. উপযুক্ত পারিশ্রমিক ও আর্থিক সুবিধা দান।
খ. চাকরির নিরাপত্তা বিধান করা।
গ. কাজের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা।
ঘ. প্রশিক্ষণ ও পদোন্নতির ব্যবস্থা করা। ঙ. বাসস্থান ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।

Content added By