শ্রোণীচক্রের যে গহ্বর পশ্চাৎপদের ফিমারকে ধারণ করে তার নাম -

Created: 2 years ago | Updated: 5 months ago
Updated: 5 months ago

উপাঙ্গীয় কঙ্কাল (Appendicular Skeleton) :

ঊর্ধ্বাঙ্গ (দুই বাহু ও বক্ষ-অস্থিচক্র) ও নিম্নাঙ্গ (দুই পা ও শ্রোণী অস্থিচক্র)-এর অস্থিগুলোকে একত্রে উপাঙ্গীয় কঙ্কাল বলে।

ঊর্ধ্বাঙ্গের অস্থিসমূহঃ
বক্ষ-অস্থিচক্র ও দুবাছ নিয়ে ঊর্ধ্বাঙ্গ গঠিত। দেহের উভয় পাশের ৩২টি করে মোট ৬৪টি অস্থি উর্ধ্বাঙ্গের অন্তর্গত।

ক. বক্ষ-অস্থিচক্র (Pectoral Sirdle) মানুষের বক্ষ-অস্থিচক্র ২ জোড়া অস্থি নিয়ে গঠিত, যথা-একজোড়া ক্ল্যাভিকল (clavicle) ও একজোড়া স্ক্যাপুলা(scapula)।

কাভিকল দেখতে ইটালিক '/' এর মতো বাঁকা অস্থি। এটি একটি দেহ ও দুটি প্রান্ত, যথা স্টার্ণাল (স্টার্ণামের ম্যানুরিয়ামে যুক্ত থাকে) এবং অ্যাক্রোমিয়াল প্রসেস (স্ক্যাপুলায় যুক্ত থাকে) নিয়ে গঠিত।

স্ক্যাপুলা দেখতে চাপা ও ত্রিকোণা অস্থি। এর একটি সম্মুখ বা কোস্টাল তল (costal surface), একটি পশ্চাৎ তল বা কোরাকয়েড এসেস, একটি অ্যাক্রোমিয়াল প্রসেস এবং গ্লেনয়েড গহ্বর নামে একটি সংযোগী অবতল আছে।

সম্মুখ তল পর্ত্তকাগুলোর দিকে মুখ করে থাকে। এতে সাবস্ক্যাপুলার ফসা (subscapular fossa) নামে একটি অবতল অংশ আছে। পশ্চাত্তল স্ক্যাপুলার কাঁটা (spine of scapula) অস্থির পশ্চাত্তলকে সুপ্রাস্পাইনাস (supraspinous) ও ইনফ্রাস্পাইনাস = (infraspinous) ফসায় বিভক্ত করে। প্লেনয়েড গহ্বরে হিউমেরাসের মস্তক আটকানো থাকে।

খ. বাহুর অস্থি (Bones of Forelimb):
বাহুতে ৩টি অঞ্চলে ভাগ করা যায়, যথা ঊর্ধ্ববাহু, সম্মুখবাহু এবং হাতের অস্থি।

১. ঊর্ধ্ববাহুর অস্থি বা হিউমেরাস (Humerus) : (ঊর্ধ্ববাহু হিউমেরাস নামে একটি লম্বা, নলাকার হাড়ে গঠিত। এর ঊর্ধ্বপ্রান্তে রয়েছে মসৃণ, গোল মস্তক যা স্ক্যাপুলার গ্লেনয়েড গহ্বরে প্রবিষ্ট থাকে । তা ছাড়াও আছে ছোট ও বড় টিউবার্কল এবং এর মাঝখানে অ্যানাটমিক গ্রীবা (anatomic neck) নামে একটি খাঁজ। টিউবার্কলের নিচে যে সরু অংশ থেকে হিউমেরাসের মূল দেহ গঠিত হয়। তাকে সার্জিকাল গ্রীবা (surgical neck) বলে (কারণ, দুর্ঘটনায় এ অংশেই সচরাচর ফাটল ধরে)। মূল দেহের মধ্যভাগে পেশি সংযুক্তির জন্য খসখসে ডেলটয়েড রিজ (deltoid ridge) রয়েছে। দেহের কিনারা নিম্নপ্রান্তে এসে এপিকন্ডাইল (epicondyle) গঠন করে। এপিকন্ডাইলের মাঝে কন্ডাইল (condyle) অবস্থিত যা উত্তল ক্যাপিচুলাম ও কপিকলের মতো ট্রকলিয়া (trochlea) নিয়ে গঠিত। সংযোগী তল হিসেবে এ প্রান্তে করনয়েড ও ওলেক্রেনন ফসা-ও থাকে।

২.সম্মুখবাহুর অস্থি বা রেডিয়াস-আলনা (Radius-Ulna) : সম্মুখবাহু দুটি লম্বা, নলাকার ও ঘনসংলগ্ন অস্থি নিয়ে গঠিত, যথা- আলনা ও রেডিয়াস। অন্তর্ভাগের অস্থিটি আলনা। এর ঊর্ধ্বপ্রান্তে করনয়েড প্রসেস ও ওলেক্রেনন প্রসেস, একটি ট্রকলিয়ার নচ ও একটি টিউবারোসিটি (অর্বুদ) অবস্থিত । নিম্নপ্রান্তমাথা ও স্টাইলয়েড প্রসেস-এ বিভক্ত। রেডিয়াসের ঊর্ধ্বপ্রান্তে রয়েছে একটি খাঁজসহ মাথা, গ্রীবা ও অর্বুদ এবং নিম্নপ্রান্তে কার্পাল অস্থির সংযোগী তল ও একটি স্টাইলয়েড প্রসেস। ঊর্ধ্বপ্রান্তে রেডিয়াস ও আলনা অ্যানুলার পেশিতে এবং বাকি অংশ অ্যান্টিব্রাকিয়াল ঝিল্লি দিয়ে যুক্ত থাকে।

৩. হাতের অস্থি : কব্জি, করতল ও আঙ্গুল নিয়ে হাত গঠিত।

কব্জিঃ দুসারিতে ৪টি করে মোট ৮টি ছোট ছোট বিভিন্ন আকৃতির কার্পাল (carpal) অস্থিতে কব্জি গঠিত। গোড়ার দিকের সারিতে থাকে স্ক্যাফয়েড (নেভিকুলার), লুনেট, ট্রাইকুয়েট্রাল ও পিসিফর্ম অস্থি, এবং প্রান্তের দিকে থাকে ট্র্যাপেজিয়াম, ট্র্যাপেজয়েড, ক্যাপিটেট ও হ্যামেট অস্থি।

করতলঃ করতলের ৫টি অস্থিকে মেটাকার্পাল (metacarpal) বলে।) এগুলো লম্বা ও নলাকার এবং একটি গোড়া, শ্যাফট ও মাথা নিয়ে গঠিত ।

আঙ্গুলঃ আঙ্গুলের অস্থিগুলোকে ফ্যালাঞ্জেস (phalanges; একবচনে ফ্যালাংক্স) বলে। এগুলো খাটো ও নলাকার। বৃদ্ধাঙ্গুলে ২টি এবং অন্য আঙ্গুলগুলোতে ৩টি করে ফ্যালাঞ্জেস থাকে।

Content added By
Promotion