একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র | NCTB BOOK

প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে এবং উপায়-উপাদানের সুষ্ঠু ব্যবহারের লক্ষ্যে পরিকল্পনা, সংগঠন, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ কার্যকে ব্যবস্থাপনা বলে । এ সকল কাজ প্রতিষ্ঠানের উচ্চস্তর হতে নিম্নস্তর পর্যন্ত সকল স্তরেই কম বেশি সম্পাদন করা হয়। তাই ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের কোনো একটি মাত্র স্তরেই সীমাবদ্ধ এ কথা বলা যায় না । নিম্নে ব্যবস্থাপনার স্তরসমূহ আলোচনা করা হলো :

১. উচ্চ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা (Top level management) : প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ের নির্বাহীদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা ব্যবস্থাপনাকে উচ্চ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা বলে । প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও নীতি নির্ধারণ এবং দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য, কৌশল ও পরিকল্পনা প্রণয়নের সঙ্গে ব্যবস্থাপনার উচ্চ পর্যায় সম্পৃক্ত থাকে । কোনো কোম্পানির পরিচালকমণ্ডলী, পরিচালকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, সচিব ও ক্ষেত্রবিশেষে জেনারেল ম্যানেজার এ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত। 

২. মধ্য পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা (Mid-level management) : উচ্চ পর্যায়ে গৃহীত লক্ষ্য, পরিকল্পনা ও নীতি- নির্দেশনা বাস্তবায়নে নিম্ন পর্যায়ের ব্যবস্থাপকগণকে কাজে লাগাতে ব্যবস্থাপনার যে পর্যায় কাজ করে তাকে মধ্য পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা বলে । এরূপ পর্যায় উচ্চ ও নিম্ন পর্যায়ের ব্যবস্থাপনার মধ্যে সেতুবন্ধকের ভূমিকা পালন করে । এরূপ পর্যায় উচ্চ পর্যায়ে গৃহীত লক্ষ্য, নীতি, কৌশল ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা গ্রহণ, উপায়-উপকরণাদি সংগঠিতকরণ, পরিচালনা, নেতৃত্ব প্রদান, সমন্বয় এবং নিয়ন্ত্রণ কার্য পরিচালনা করে ।

৩. নিম্ন পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা (Lower level or first line management) : মধ্য পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা কর্তৃক গৃহীত পরিকল্পনা ও নীতি-কৌশল মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনাকে নিম্ন পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা বলে । এ পর্যায়ের ওপরে থাকে মধ্য পর্যায়ের ব্যবস্থাপকগণ ও নিচের দিকে থাকে ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন কর্মী বা শ্রমিক। নিচের দিক থেকে ওপর দিকে চিন্তা করলে একেবারে প্রথম সারির ব্যবস্থাপকগণ এ পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত। এ পর্যায়কে তত্ত্বাবধায়ন পর্যায় (Supervisory level) নামেও আখ্যায়িত করা হয়।
নিম্নে চিত্রের সাহায্যে ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন স্তর প্রদর্শিত হলো :

ব্যবস্থাপনার কাজকে প্রকৃতিগতভাবে চিন্তা করা (Thinking) ও কাজ করা (Doing) এ দু'ভাগে ভাগ করা . হলে উচ্চ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা অধিক মাত্রায় চিন্তনীয় কাজ এবং নিম্নপর্যায়ের ব্যবস্থাপনা অধিক মাত্রায় সরাসরি কাজের তত্ত্বাবধানের সাথে সম্পৃক্ত থাকে। অন্যদিকে মধ্য পর্যায়ের ব্যবস্থাপনার সাথে সম্পৃক্ত নির্বাহীগণ মোটামুটিভাবে উভয় ধরনের কর্ম সম্পাদন করে ।

 

Content added By