On This Page
এসএসসি(ভোকেশনাল) - মেকানিক্যাল ড্রাফটিং উইথ ক্যাড-১ - প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) | NCTB BOOK

স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। স্বাস্থ্যের সঙ্গে মনের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। স্বাস্থ্য ভাল না থাকলে কাজে অনীহা, অবহেলা ও অসতর্কতার ভাব চলে আসে। কাজের সময় এরুপ অসতর্কতার ফলে প্রায়ই নানা রকম দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। একটি দুর্ঘটনা সাড়া জীবনের কান্না। দুর্ঘটনায় পতিত পঙ্গুত্ববরনকারী কর্মীটি পরিবারের বোঝা ও অবহেলার পাত্র হয়ে বেঁচে থাকে। এক মুহূর্তের অসচেনতাই এই দুর্ঘটনার অন্যতম কারন। দুর্ঘটনার ফলে কর্মরত কর্মীর মৃত্যু, অঙ্গহানিসহ যন্ত্রপাতি ও সম্পদের প্রভুত ক্ষতি হয়। এরূপ ক্ষয়ক্ষতি আদৌ কাম্য নয়। ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে- 'Prevention is better than cure' অর্থাৎ 'প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ অধিকতর শ্রেয়। কর্মক্ষেত্রে এরূপ দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিধির যথাযথ অনুশীলন ও প্রয়োগ করা অনস্বীকার্য।

এ অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা-

  • মেকানিক্যাল ড্রাফটিং কাজে OSH নীতি এবং পদ্ধতি ব্যাখ্যা করতে পারবো। 
  • ব্যক্তিগত সুরক্ষার অনুশীলন করার দক্ষতা অর্জন করতে পারবো। 
  • OSH এবং হ্যাজার্ড সনাক্ত করতে পারব এবং প্রতিবেদন তৈরী করতে পারবো। 
  • জরুরি প্রতিক্রিয়া পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারবো। 
  • কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসম্মত নিরাপত্তার রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন করতে পারবো।

উপর্যুক্ত শিখনফল অর্জনের লক্ষ্যে এই অধ্যায়ে আমরা তিনটি জব সম্পন্ন করবো। এ জবের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার সরঞ্জাম সনাক্তকরণপূর্বক তালিকা প্রস্তুত করার দক্ষতা অর্জন করবো। জবগুলো সম্পন্ন করার পূর্বে প্রথমেই প্রয়োজনীয় তাত্ত্বিক বিষয়সমূহ জানবো।

 

 

Content added By

কর্মক্ষেত্রে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা (Safety Precuation in workplace)

আমাদের চারিপাশে ড্রাফটিং ল্যাব, কম্পিউটার ল্যাব, ইলেকট্রিক্যাল শপ, অটো ওয়ার্কশপ, ওয়েন্ডিং ওয়ার্কশপ ইত্যাদি কর্মক্ষেত্রে নানাবিধ কৰ্মকান্ত প্রতিনিয়তই দেখতে পাই। এ সকল কর্মক্ষেত্রে ড্রাফটিং টুলস, হ্যান্ড টুলস, পাওয়ার টুলস, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, নানাবিধ সেইফটি টুলস এন্ড ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রকার ডিজাইন-ড্রইং, যন্ত্রাংশ তৈরী ও মেরামত কাজ করা হয়। এ সকল কাজে টুলস ইকুইপমেন্ট এর সঠিক ব্যবহার নিরাপদ কর্মপরিবেশ উপর নির্ভশীল। ওয়ার্কশপে প্রতিকূল অবস্থা প্রতিরোধের মাধ্যমে নিরাপদ কর্ম-পরিবেশ তৈরী করার নামই অকুপেশনাল সেইফটি বা পেশাগত নিরাপত্তা। ওয়ার্কশপে সামষ্টিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যে সকল সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয় তাদেরকে সেইফটি ইকুপমেন্ট নামে অভিহিত করা হয়। যেমন-হ্যান্ড গ্লোভস, হেলমেট ইত্যাদি। কর্মক্ষেত্রে এরকম সেইফটি ইকুইপমেন্ট ব্যবহারে সতর্কতামূলক বিধি ব্যবস্থা প্রতিপালনের মাধ্যমে প্রতিকূল অবস্থাকে নিরাপদ পরিবেশে রূপান্তর করা হয়। এ লক্ষ্যে নিরাপদে কাজ করা ও নিরাপত্তা রক্ষায় এসব নিম্নম সতর্কতার সাথে মেনে চলা উচিত।

সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে ব্যবহৃত সেইফটি ইকুইপমেন্ট - 

সেইফটি ইকুইপমেন্ট (পিপিই) হলো- এমন ধরনের গোলাক, যন্ত্রপাতি বা বস্তু যা একজন ব্যক্তিকে দুর্ঘটনার কারণে ক্ষতির সম্ভাবনা অথবা অসুস্থ হওযার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে

ড্রাফটিং কাজে ব্যক্তিগত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি বা দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষাম ব্যবহৃত সেইফটি ইকুইপমেন্ট এর নাম নিম্মে চিত্রসহ দেওবা হলো-

ছবিগুলো দেখে তোমাদের কী মনে হচ্ছে ? সাধারন হ্যান্ড টুলস ও সুরক্ষা ডিভাইস এর মধ্যে পার্থক্য | আছে কী ? নিশ্চয়ই ছবি দেখেই বুঝতে পারছ কীভাবে সুরক্ষা ডিভাইস শনাক্তকরনসহ তালিকা তৈরী করা যাবে।

 

সেইফটি ইকুইপমেন্টগুলির ব্যবহার (Uses of Safety Equipment) 

সেইফটি ইকুইপমেন্ট এর ব্যবহার নিম্নে উল্লেখ করা হলো-

চছবিগুলো দেখে তোমাদের কী মনে হচ্ছে ? ওয়ার্কশপে নিরাপদে কাজ করার সহায়ক পরিবেশ আছে কি? ছবি দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছো ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে কাজ করার আগে ও পরে কীভাবে নিজেকে নিরাপদ রাখতে হবে।

 

পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা (Occupational Health and Safety) 

স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ৪২ নং আইন সংশোধনী-২০১৩) যথাযথ ভাবে মেনে চলা উচিত। নিম্নে শ্রম আইন এর সাধারণ নির্দেশাবলি ও সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো উল্লেখ করা হলো-

ধারা- ৫১ ও বিধি-৪০ কর্মক্ষেত্রের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা:

প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং কোন নর্দমা, পায়খানা বা অন্য কোনো জঞ্জাল হতে সৃষ্ট দূষিত বাষ্প হতে মুক্ত রাখতে হবে এবং বিশেষ করে-

ক) প্রতিষ্ঠানের মেঝে, কক্ষ, সিঁড়ি, যাতায়াতের পথ হতে প্রতিদিন ঝাড়ু দিয়ে ময়লা ও আবর্জনাঢাকনা দেওয়া বাক্সে অপসারন করতে হবে, যাতে উক্ত আবর্জনা দুর্গন্ধ বা জীবাণু বিস্তার করতে না পারে; ধাতব পদার্থ, উৎকট গন্ধময় আবর্জনা, রাসায়নিক আবর্জনা ও মেডিকেল আবর্জনা ভিন্ন ভিন্ন বাক্সে প্রতিদিন নিষমিত অপসারণ করতে হবে। 

(খ) প্রত্যেক কর্মক্ষেত্রের মেঝে সপ্তাহে অন্তত একদিন কাজের প্রকৃতি ভেদে পানি দ্বারা ধৌত করতে হবে এবং প্রয়োজনে ধোয়ার কাজে জীবানুনাশক ব্যবহার করতে হবে। অবস্থাভেদে জীবানুনাশক ব্যবহার করে ভিজা কাপড় দ্বারা মেঝে ধুয়ে দিতে হবে।

(গ) যে ক্ষেত্রে উৎপাদন প্রক্রিয়ার কারণে কোনো মেঝে এমনভাবে ভিজে যায় যে, এর জন্য পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে পানি নিষ্কাশনের উপযুক্ত ব্যবস্থা করতে হবে। ধারা ৫১(গ) বিধি ৪২ অনুযায়ী কর্মকক্ষ ভিজে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে- 

(১) উক্ত মেঝে অবশ্যই অভেদ্য পদার্থ (Impervious Material) দ্বারা নির্মিত হতে হবে; 

(২) উক্ত মেঝের নির্মাণ কৌশল ঢালু বিশিষ্ট এবং উপযুক্ত নিষ্কাশন নালার মাধ্যমে কারখানার মূল নর্দমা ব্যবস্থা সাথে সংযুক্ত থাকতে হবে, যাতে নিষ্কাশিত পানি অথবা কোন তরল পদার্থ মেঝেতে জমে থাকতে না পারে।

ঘ) প্রতিষ্ঠানের সকল জাভ্যন্তরীণ দেওয়াল, পার্টিশন, ছাদ, সিঁড়ি,যাতায়াত পথ- 

(১) রং অথবা বার্নিশ করা থাকলে প্রতি তিন বছরে অন্ততঃ একবার পুনরায় রং অথবা বার্নিশ করতে হবে।

২) রং অথবা বার্নিশ করা এবং বহির্ভাগ মসৃণ হলে, প্রতি চৌদ্দ মাসে অন্ততঃ একবার ধারা-৫১(ঘ) বিধি ৪৩ অনুযায়ী পানি, ব্রাশ ও ডিটারজেন্ট দ্বারা ঘষে পরিষ্কার করতে হবে। 

(৩) অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রতি চৌদ্দ মাসে অন্ততঃ একবার চুনকাম বা রং করতে হবে, এবং (ঙ) দফা (ঘ)তে উল্লিখিত কার্যাবলি সম্পন্ন করার তারিখ ধারা ৫১ (ঘ) বিধি-৪৪ অনুযায়ী ফরম-২০ ব্যবহার রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে রাখতে হবে।

 

ধারা-৫২ ও বিধি-৪৫ বায়ু চলাচল ও তাপমাত্রা:

১) প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কর্মকক্ষে নির্মল বায়ু প্রবাহের জন্য পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল ব্যবস্থা রাখতে হবে । 

(২) উক্তরুপ প্রত্যেক কক্ষে তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে এবং প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কর্মকক্ষে নির্মল বায়ু প্রবাহের সুবিধার্থে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিপরীতমুখী জানালার ব্যবস্থা থাকতে হবে ;

 

ধারা-৫৬। অতিরিক্ত ভীড়

১) প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকক্ষে কর্মরত শ্রমিকদের স্বাস্থ্য হানি হয় এই প্রকার অতিরিক্ত ভীড় করা যাবে না। 

(২) উপর্যুক্ত বিধানের হানি না করে,প্রত্যেক কর্মকক্ষে কর্মরত শ্রমিকের জন্য অন্ততঃ ৯.৫ কিউবিক মিটার পরিমাণ জায়গার ব্যবস্থা করতে হবে।

 

ধারা-৫৭ ও বিধি-৪৯ আলোর ব্যবস্থা:

(১) কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক অংশে, যেখানে শ্রমিকগণ কাজ করে বা যাতায়াত করেন, যথেষ্ট স্বাভাবিক বা কৃত্রিম বা উভয়বিধ আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। 

(২) প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে কর্মক্ষেত্র আলোকিত করার জন্য ব্যবহৃত সকল কাঁচের জানালা এবং ছাদে বসানো জানালা সমূহের উভয় পার্শ্ব পরিষ্কার রাখতে হবে। 

(৩) প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে- 

(ক) কোনো স্বচ্ছ পদার্থ বা বাতি হতে বিচ্ছুরিত বা প্রতিফলিত আলোকচ্ছটা, অথবা 

(খ) কোনো শ্রমিকের চোখের উপর চাপ পড়তে পারে বা তার দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকতে পারে, এরূপ কোনো সৃষ্ট ছায়া প্রতিরোধ করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা থাকতে হবে।

 

 

Content added By

স্বাস্থ্য সচেতনতা (Awareness about Health)

স্বাস্থ্য (Health) : 

স্বাস্থ্যই সকল সুখের মুল। একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীগণ শারীরিকভাবে সুস্থ না থাকলে তারা মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারে না। ফলে কাজে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে এবং কাজে অনুপস্থিতির হার বেড়ে যায়। অসুস্থ্যতা কখনও বা দুর্ঘটনা ঘটার কারনও বটে। ফলে মালিক ও কর্মী উভয় পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সুতরাং কর্মী, প্রশাসন এবং মালিকপক্ষের সকলকেই স্বাস্থ্য সচেতন থাকা একান্ত প্রয়োজন।

স্বাস্থ্যবিধি (Hygiene ): 

স্বাস্থ্যবিধি হলো এমন একটি বিজ্ঞান যাতে অসুস্থ্যতার পূর্বে তার প্রতিরোধ ও স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে আলোকপাত করে। একজন মানুষের শারীরিক, মানসিক, পারিপার্শ্বিক ও সামাজিক অবস্থার পূর্ণাঙ্গ সুস্থ জীবনই হলো ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা যেমন আমাদের নিরাপদ রাখে তেমনিভাবে আমাদেরকে অসুস্থ হওয়া থেকে নিরাপদ রাখে।

পেশাগত রোগসমূহ (Occupational Diseases): 

কর্মক্ষেত্রের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ এবং কাজের ধরনের উপর একজন কর্মরত কর্মী যে সকল রোগ- ব্যধিতে আক্রান্ত হয় বা হয়ে থাকে তাদেরকে পেশাগত রোগ বলা হয় ৷

পেশাগত রোগের কারণসমূহ (Cause of Occupational Diseases) : 

কর্মক্ষেত্রে একজন কর্মরত কর্মী সাধারনত তিনটি কারণে অসুস্থতায় ভুগতে পারে-

ক) কর্মস্থলের পরিবেশ সংক্রান্ত : 

উচ্চ শব্দ, বিশৃঙ্খলা, উচ্চ তাপমাত্রা, পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের অভাব, পর্যাপ্ত আলোর অভাব এবং ধূলা বালির কারণে একজন কর্মী নানা রকম রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যেমন- দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, শ্রবণশক্তি ৰুমে যাওয়া, ফুসফস সংক্রান্ত রোগ, হাপানি, যক্ষা, শ্বাসনালীর প্রদাহ ইত্যাদি। 

(খ) কর্মী সংক্রান্ত : 

প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা সংক্রান্ত জ্ঞানের অভাব, দক্ষতার অভাব, বয়স ও দৈহিক সামর্থ্যের অভাবেও নানা রকম অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। যেমন- হাত, পা, কোমড় ব্যাথা, মাথা ব্যাথা ইত্যাদি।

(গ) মানসিক অসুস্থতা : 

চাকুরির অনিশ্চয়তা, অতিরিক্ত কাজের চাপ, দীর্ঘ কর্মঘন্টা, কর্মক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা সহকর্মীদের আচার-আচরণ, বৈষম্য, অকারণে হয়রানি, নির্যাতন একজন কর্মীর উপর বিরুপ প্রভাব বিস্তার করে যা তার কর্মক্ষেত্রের উৎসাহ ও উদ্দীপনা কমিয়ে দেয় এবং কাজের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে বাধার সৃষ্টি করে। ফলে ধীরে ধীরে একসময় সে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

 

পেশাগত নিরাপত্তা (Occupational Safety) 

যে কোনো প্রকার প্রতিকুল অবস্থাকে প্রতিরোধের মাধ্যমে নিরাপদে কাজ করাকে অকুপেশনাল সেফটি বা পেশাগত নিরাপত্তা বলে ।

পেশাগত নিরাপত্তা তিন প্রকার- 

(১) ব্যক্তিগত নিরাপত্তা; 

(২) যন্ত্রপাতি ও মেশিনের নিরাপত্তা ; 

(৩) কারখানা নিরাপত্তা।

ব্যক্তিগত নিরাপত্তা 

দুর্ঘটনার হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য যে সকল সবধানতা মেনে চলা হয়, তাই ব্যক্তিগত নিরাপত্তা। শিল্প-কারখানার কর্মীগণ ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার করে থাকে।

ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জাম (Personal Protective Eqiepment PPE ) 

কর্মস্থলে কার্যাবস্থায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি হতে কর্মীদের বাঁচানোর জন্য যে সমস্ত সাজসরঞ্জাম ও পোশাক পরিচ্ছদ ব্যবহার করা হয়, সেগুলিকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জাম (পিপিই) বলা হয়। একজন ব্যক্তির কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সম্ভাব্য ক্ষতি বা দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করা হবে তার ওপর ভিত্তি করে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জাম (পিপিই) নিম্নলিখিত ভাবে ভাগ করা যায় -

চোখের সুরক্ষা সরঞ্জাম

বিপদের উৎস- 

ছিটকে আসা রাসাধনিক পদার্থ বা ধাতব বস্তু, ধুলাবালি, কাটলিষ্ট পাউডার, প্রোজেক্টাইল, গ্যাস, বাষ্প এবং রেডিয়েশন।

চোখের জন্য পিপি‍ই - 

নিরাপদ চশমা, পপলস, ফেস শিশু (মুখের ঢাকনা), ওয়েল্ডিং ঢাকনা ইত্যাদি।

কানের সুরক্ষা উপাদান- 

বিপদের উৎস- শব্দের মাত্রা ৮৫ ডিবি এর অধিক হলে শব্দ দূষন হয় । 

পিপিই- এয়ারপ্লাগ, ইয়ার মাফ, কানটুপি ইত্যাদি।

মাথার সুরক্ষা উপাদান- 

বিপদের উৎস- উপর থেকে কোনো বস্তু পড়লে, শক্ত বস্তুর আঘাত, ঘূর্ণায়মান বস্তুতে চুল পেঁচিয়ে যাওয়া মাথার জন্য পিপিই - হেলমেট, মোটা বা স্ফীত টুপি ।

শাসযন্ত্র-এর সুরক্ষা উপাদান- 

বিপদের উৎস- ধুলাবালি, তাপ, আক্সিজেন এ ঘাটতি ইত্যাদি। লিপিই-ফেস মাস্ক, শাসযন্ত্র ইত্যদি।

শরীর- এর জন্য সুরক্ষা উপাদান- 

বিপদের উৎস- অতিরিক্ত তাপমাত্রা, খারাপ আবহাওয়া, ছিটকে আসা কোনো রাসায়নিক পদার্থ বা ধাতব খণ্ড, ভয়ানক গতির বায়ু প্রবাহ, সুচালো কোনো বস্তু শরীরে ঢুকে পড়া এবং ধুলাবালি দ্বারা দূষণ । শরীর-এর জন্য পিপিই- বয়লার স্যুট, রাসায়নিক স্যুট, ডেন্ট, অ্যাপ্রন, পুরো শরীর ঢাকা স্যুট, জ্যাকেট ইত্যাদি।

হাত এবং বাহু -এর জন্য সুরক্ষা সরঞ্জাম- 

বিপদের উৎস অধিক তাপমাত্রা, সুঁচালো কোনো বস্তু, ভারী কোনো - পদার্থ, বৈদ্যুতিক শক, রাসায়নিক পদার্থ, চর্ম সংক্রামক বস্তু ইত্যাদি। পিপিই- হ্যান্ড প্রোভস, আর্মলেট এবং মিটস্ (বাহর আবরণ বিশেষ) ইত্যাদি ।

পায়ের পাতার সুরক্ষা - 

বিপদের উৎস- পিচ্ছিল মেরে, ভিজা মেঝে, ধারালো বস্তু, পড়ে থাকা বস্তু, রাসায়নিক স্পস এবং অন্যান্য তরল পদার্থ ইত্যাদি।

পিপিই- সেফটি স্যু, সুরক্ষা বুট, লেপিনস্ (মোটা কাপড়ের তৈরি পায়ের আচ্ছাদন), স্প্যাট (পাতলা আচ্ছাদন) ইত্যাদি । সেফইটি সুজ বা নিরাপদ জুতা ওয়েস্তারক/কর্মীকে ভারী ধাতব উত্তপ্ত গলিত ধাতু, ধারালো বস্তু উপর থেকে পড়ে আঘাত থেকে রক্ষা করে। এমনকি বৈদ্যুতিক শক থেকেও ওয়েল্ডারক/কর্মীকে রক্ষা করে।

 

পিপিই ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা

স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা ধারা ১৯৯৫, অনুসারে সন্ধান ক্ষতির বা দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষার জন্য পিপিই ব্যবহার করতে হবে । দূষণ কমানোর জন্য ব্যক্তিগত নিরাপত্তা উপাদান ব্যবহার করা ঠিক নয় । কারণ কোনো সতর্ক বার্তা ছাড়াই এগুলো মাঝে মধ্যে শ্রমিকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়। ঝুঁকির উপযুক্ত নিরাপত্তা প্রদানে গিপিছ এর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে-

১. কখনও কাজের বাধী বা বিপত্তি ঘটায়

২. স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তার অন্যান্য ঝুঁকি সৃষ্টি করে

৩. ব্যবহারে আরামদায়ক নাও হতে পারে

৪. দীর্ঘ সময়ের জন্য ব্যয়বহুল হয়।

 

পিপিই নির্বাচন 

ব্যক্তিগত নিরাপত্তা উপাদানগুলো (পিপিই) এমন ভাবে নির্বাচন করা হয় যা প্রতিটি স্বরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। পিপিই যেমনটি হওয়া উচিত -

১. ব্যবহারকারীকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রদান করবে

২. কাজের ধরন অনুযায়ী উপযুক্ত হতে হবে এবং বিপদে ঝুঁকির উপযুক্ত নিরাপত্তা প্রদান করবে।

৩. স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা বিষয়ে অতিরিক্ত ৰুকি সৃষ্টি করে না

৪. ব্যবহৃত অন্যান্য পিপিই এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও সহজে ব্যবহার যোগ্য

৫. আরামদায়ক

৬. ব্যবহারকারীকে যে কোনো ধরনের মেডিকেল শর্তের বাঁধা বা বিপত্তি ঘটাবে না

৭. বাংলাদেশের আর্দশমান অনুযায়ী প্রাসঙ্গিক হবে ।

পিপিই নির্বাচনের সময় কর্মীদের সাথে আলাপ করে নিতে হবে। ব্যক্তিগত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং স্টাইলকে বিবেচনা করতে হবে ।

 

পিপিই এর সঠিক ব্যবহার 

পিপিই ব্যবহারের পূর্বে নিম্মলিখিত বিষয়গুলি নিশ্চিত করতে হবে-

১. স্যানিটাইজার ব্যবহার করে হাত জীবানুমুক্ত করা।

২. পিপিই সঠিকভাবে ফিট হতে হবে।

৩. কীভাবে এটি ব্যবহৃত হয় তার নিদের্শনার জন্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া।

৪. উৎপাদনকারীর নিদের্শনা অনুযায়ী ব্যক্তিগত নিরাপত্তা উপাদানগুলো (পিপিই)।

৫. যেখানে পিপিই পরিধান করতে হবে সেখানে অবশ্যই একটি চিহ্ন দিয়ে রাখা। যাতে করে কর্মীরা খুব সহজেই মনে করে ব্যবহার করতে পারে ।

 

প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পিপিই এর সঠিক ব্যবহার, সংরক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে জানা উচিত । যাদের বা যখন এটি জানতে হবে

১. যখন নতুন পিপিই পাওয়া যায়

২. যখন নতুন শ্রমিক কাজ শুরু করে

৩. মাঝে মাঝে কর্মীদের স্মরণ করে দিন।

ওয়ার্কশপে কাজ করার সময় যে কোন দূর্ঘটনা এড়ানোর জন্য অবশ্যই নিরাপদ পোশাক ও নিরাপদ সরঞ্জামাদি পরিধান করা দরকার। যেমন-

  • অ্যাপ্রন পরিধান না করলে অসতর্কতাবশত ঢিলেঢালা পোশাক কোথাও জড়িয়ে বা পেঁচিয়ে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।
  • গ্রাইন্ডিং মেশিন এবং চিপিং করতে নিরাপদ চশমা পরিধান করলে ছিটকে যাওয়া চিপস এর আঘাত থেকে চোখকে রক্ষা করা যায়।
  • লম্বা চুল বেধেঁ হেলমেট না পড়লে ঘূর্ণয়মান কোন যন্ত্রাংশে জড়িয়ে মারাত্নক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

 

২। যন্ত্রপাতি ও মেশিনের নিরাপত্তা :

যন্ত্রপাতির কোন প্রকার ক্ষতি সাধনা না করে কার্য সম্পন্ন করে যন্ত্রপাতিগুলিকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করে রাখাকে যন্ত্রপাতির নিরাপত্তা বলে। যেমন- 

(ক) সঠিক নিয়ম-নীতি মেনে মেশিন চালু করা; 

(খ) কাজ শেষে মেশিন সঠিকভাবে বন্ধ করা; 

(গ) কাজের জায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা; 

(ঘ) গোলযোগ দেখা দিলে সাথে সাথে মেশিন বন্ধ করা এবং দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করা। 

(ঙ) বৈদ্যুতিক সংযোগসমূহ মাঝে মাঝে পরীক্ষা করা।

 

৩। কারখানার নিরাপত্তা (Factory Safety) : 

একটি কারখানা বা ওয়ার্কশপ সুন্দর, সুষ্ঠুভাবে নিরাপদে চলার জন্য যে সমস্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তাকে কারখানা নিরাপত্তা বলে। কারখানার নিরাপত্তার জন্য দুটি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। 

ক) সংরক্ষণ ব্যবস্থা 

খ) অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা

ক) সংরক্ষণ ব্যবস্থা : সংরক্ষণ ব্যবস্থা বলতে মিল কারখানায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, কাঁচা মাল হতে আরম্ভ করে উৎপাদিত দ্রব্য বা তৈরী জব ও পরিত্যক্ত অংশ প্রভৃতিকে সযত্নে সুনির্দিষ্ট জায়গায় যথাযথভাবে রাখাকে সংরক্ষণ ব্যবস্থা বুঝায় 

খ) অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা :অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা হিসাবে কারখানায় হাতের নাগালে অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম রাখতে হবে।

দুর্ঘটনার পরিণতি

  • দূর্ঘটনার ফলে যে আহত হয় সে ব্যথা অনুভব করে তার অসুবিধা হয়। 
  • তার আর্থিক আয় কমে যায় । 
  • মারাত্বক দূর্ঘটনার ফলে কোন অঙ্গ চিরতরে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। 
  • দূর্ঘটনায় জড়িত ব্যক্তির পরিবারে অন্য সদস্যদের আর্থিক কষ্ট ভোগ করতে হয়। দূ
  • র্ঘটনার ফলে কারখানায় উৎপাদন ব্যহত হয় 
  • কারখানায় মালিকেরও আর্থিক ক্ষতি হয়।

দুর্ঘটনার প্রতিকারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাদি 

১. বিষাক্ত দ্রব্য ব্যবহার পরিহার 

২. ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি ব্যবহার 

৩. ব্যবহৃত যন্ত্রের ব্যবহার সম্পর্কে জ্ঞান থাকা 

৪. পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ 

৫. ব্যক্তিগত সচেতনতা গড়ে তোলা 

৬. সুশৃঙ্খল কর্মস্থল ও পরিবেশ নিশ্চিত করা

 

সকল প্রকার দুর্ঘটনার হাত হতে ওয়ার্কশপকে রক্ষার জন্য করণীয়- 

(ক) দাহ্য পদার্থের পাশে ওয়েল্ডিং ও গ্রাইন্ডিং না করা; 

(খ) প্রয়োজনীয় প্রটেকটিভ ডিভাইসসমেত সকল বৈদ্যুতিক সংযোগ ইনসুলেটেড রাখা; 

(গ) কর্মস্থলে আগুন নিভানোর উপকরণ, পানি, বালু ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা রাখা; 

(ঘ) দৈবক্রমে আগুন লাগলে দ্রুত ফায়ার স্টেশনে খবর দেওয়া; 

(ঙ) কারখানার অভ্যন্তর ও বাহির সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা; 

(চ) মেশিন টুলস ও ইকুইপমেন্ট নির্দিষ্ট স্থানে সাজিয়ে রাখা।

 

অনুসন্ধানমূলক কাজ 

তোমার প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি যে কোন একটি ড্রাফটিং ওয়ার্কশপ পরিদর্শন কর। এর কর্মপরিবেশ ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিষয়ে নিম্নোক্ত ছকে তোমার মতামত দাও 

 

 

Content added By

কর্মক্ষেত্রে সতর্কতা বিধি পালনের প্রয়োজনীয়তা (Nosessity to Maintain the Rule of Safety Precuation in Workplace)

  • নিজের জীবনের নিরাপত্তার জন্য 
  • মাথাকে রক্ষা করার জন্য 
  • হাত, পা রক্ষা করার জন্য 
  • চোখকে রক্ষা করার জন্য 
  • নাকে ধুলোবালি প্রবেশ এড়িয়ে স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য 
  • টুলস ও ইকুইপমেন্ট এর নিরাপত্তার জন্য 
  • কাঁচামালের অপচয় কমিয়ে আনার জন্য
  • সময়ের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য
  • উত্তম কর্ম পরিবেশ বজায় রেখে সুষ্ঠুভাবে কাজ পরিচালনার জন

 

 

Content added By

কর্মক্ষেত্রের নিরাপদ ও অনিরাপদ কার্যাভ্যাস (Occuoational Safety and Hazzards in Workplace)

কর্মক্ষেত্রের নিরাপদ কার্যাভ্যাস

কারখানায় কাজের সময় উপযুক্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা কম থাকে। সেজন্য কাজ শুরুর পূর্বে নিম্নবর্ণিত বিপদমুক্ত অবস্থা সনাক্তকরণ করা উচিত -

কাজ শুরুর পূর্বে নিম্নবর্ণিত ব্যবস্থাদি গ্রহণ করা উচিত-

  • যন্ত্রপাতি ব্যবহারের পূর্বেই এর ব্যবহার বিধি জানা 
  • ব্যবহার করার পূর্বে যন্ত্রপাতি ঠিক আছে কীনা দেখতে হবে 
  • ভোঁতা, ভাঙ্গা, হাতলবিহীন বা ঢিলা হাতলযুক্ত যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজ না করা
  • জব ভাইস ক্রাম্পে দৃঢ়ভাবে বেঁধে কাজ করা 
  • যন্ত্রের হাতলে যেন তৈলাক্ত দ্ৰব্য না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখা 
  • যন্ত্রপাতি কখনও এলোমেলোভাবে রেখে কাজ না করা 
  • যে যন্ত্রের ব্যবহার প্রণালী জানা নেই সে যন্ত্র ব্যবহার না করা 
  • টিলা পোষাক পরিধান করে এবং খালি পায়ে কাজ না করা
  • কাজের সময় কখনও অমনোযোগী না হওয়া 
  • কম আলো বা অন্ধকারে কাজ করা উচিত নয় 
  • কাজের শেষে প্রতিটি মেশিন ও যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে পরিষ্কার করতে হবে 
  • মাথাকে রক্ষার জন্য শক্ত প্লান্টিক হেলমেট ব্যবহার করতে হবে 
  • চোখকে রক্ষার জন্য গগলস পরিধান করা উচিত 
  • কারখানায় কাজের জন্য যে মেশিন বা যন্ত্র উপযুক্ত সেই নির্দিষ্ট মেশিন বা যন্ত্র ব্যবহার করতে হবে ।
  • ত্রুটিযুক্ত মেশিন বা যন্ত্রকে কার্যোপযোগী করে ব্যবহার করতে হবে। 
  • বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্র বা মেশিন চালানার পূর্বে অবশ্যই বৈদ্যুতিক লাইন সঠিক আছে কীনা যাচাই করতে হবে এবং এর পরিচালনার সঠিক পদ্ধতিগুলো জানা আবশ্যক। 
  • ঘূর্ণায়নশীল যন্ত্রের সাথে টুলস বা সরঞ্জাম সংযুক্ত থাকলে উহা সরায়ে কাজ করতে হবে।

কর্মক্ষেত্রের অনিরাপদ কার্যাভ্যাস

  • সেফটি গার্ডবিহীন মেশিন ব্যবহার 
  • জবের ধারালো প্রাপ্ত ফাইলিং না করে খালি হাতে ধরা
  • সেফটি গার্ডবিহীন মেশিন ব্যবহার করা
  • মেঝেতে পতিত তেল, গ্রীজ, মবিল বা পিচ্ছিল কারক পদার্থ সময়মত পরিষ্কার না করা
  • অ্যাপ্রোন, হ্যান্ড প্রোভস ও গগলস পরিধান না করা
  • মেশিন চালু অবস্থায় পরিমাপ করা।

পরিষ্কার-পরিচ্ছনতা (Cleanliness) : যখন কোনো প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ কর্ম পরিবেশ তৈরীর লক্ষ্যে কর্মস্থল ঝাড় দেয়া, ধোয়া-মোছা করা, যন্ত্রপাতিকে বিধি অনুযায়ী সাজানো বা সংরক্ষণ করা, মেশিনপত্রের বিপদজ্জনক অবস্থাদি মেরামতসহ বৈদ্যুতিক ত্রুটি দূরীকরন এবং পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করার নামই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা (Cleanliness)। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য নিম্নরুপ ব্যবস্থাদি গ্রহণ করা যায়।

  • প্রতিদিন অন্ততঃ একবার সমস্ত অফিস পরিষ্কার করা। 
  • টয়লেট নিয়মিত পরিষ্কার এবং পরিচ্ছন্ন রাখা।
  • খাওয়ার আগে এবং পরে বা যে কোন কাজ শেষে সাবানের পরিবর্তে handwash ব্যবহার করা। এতে করে রোগ জীবাণু ছড়ানোর হার কম থাকে
  • টয়লেট (Washroom) এ টাওয়াল এর পরিবর্তে টিস্যু পেপার ব্যবহার করা। তানা হলে টাওয়াল ব্যবহারের ফলে নানা রোগ জীবাণু আরেক জনের কাছে ছড়াতে পারে। যা দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
  • কর্মীর হাত-মুখ ধৌতকরনের পর্যাপ্ত সুব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
  • টয়লেট ও সাওয়ার এ পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা রাখা।
  • টয়লেট থেকে কমপক্ষে ২০ ফুট দূরে সুপেয় পানি (Drinking Water)- এর ব্যবস্থা রাখা।

শ্রেণির তাত্ত্বিক কাজ 

ড্রাফটিং ওয়ার্কশপে তোমরা নিরাপত্তাজনিত কোন কাজে সচরাচর ব্যবহার্য কী ধরনের সেফটি ইকুইপমেন্ট ব্যবহারে ব্যবস্থা নিবে তা ছকে লিখ (একটি কাজে ব্যবহৃত সেফটি ইকুইপমেন্ট এর নাম উল্লেখ করা হলো)-

 

 

Content added By

পেশাগত বিপত্তি(Occupational Hazzards)

যেকোন বাস্তব অবস্থা বা ঘটনা যার কারনে কোনো ব্যক্তির বা ধনসম্পদের বা পরিবেশের ক্ষতি বা হতাহত অথবা দীর্ঘস্থায়ী রোগ ব্যাধির বিস্তারের মাধ্যমে উৎপাদন ব্যবস্থার বিপত্তি ঘটে তাকে পেশাগত বিপত্তি নামে অভিহিত করা হয়। কিন্তু তা এখনো ঘটেনি। বিপদের সর্বশেষ ফল হলো দুর্ঘটনা। সম্ভাব্য বিপদসমূহ পর্যবেক্ষন, সনাক্তকরণ এবং দূরীকরণ বা কমানোর ফলে দূর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। দূর্ঘটনার কারণে ধারাবাহিক ক্ষতি যেমন- স্বাস্থ্য, জীবন, পরিবেশ এবং ধনসম্পদের ক্ষয়-ক্ষতি হয়।

ঝুঁকি (Risk) 

ঝুঁকি হলো যেকোন বাস্তব অবস্থা বা ঘটনা যার কারনে কোনো ব্যক্তির বা ধনসম্পদের বা পরিবেশের ক্ষতি বা উৎপাদন ব্যবস্থা বিপত্তি বা হতাহত অথবা দীর্ঘস্থায়ী রোগ-ব্যাধিজনিত কারনে অনাকাংখিত ক্ষয়ক্ষতি। বিপদ বা ঝুঁকির সর্বশেষ ফল হলো দুর্ঘটনা। সম্ভাব্য বিপদসমূহ পর্যবেক্ষন, সনাক্তকরণ এবং দুরীকরণ বা কমানোর ফলে দুর্ঘটনা হ্ৰাস তথা ঝুঁকি এড়ানো সম্ভৰ।

ঝুঁকির ধরন এবং শ্রেণি বিন্যাস 

কর্মক্ষেত্রে বিপদ বা ঝুঁকি নিম্নোলিখিত ভাবে ভাগ করা যায়-

  • ভৌতিক (শারীরিক) ঝুঁকি 
  • রাসায়নিক ঝুঁকি 
  • জৈবিক ঝুঁকি 
  • মনোসামাজিক ঝুঁকি 
  • মানসিক ঝুঁকি

 

ভৌতিক (শারীরিক) ঝুঁকি: 

কর্মক্ষেত্রে বিদ্যমান বিভিন্ন ধরনের পদার্থের কারণে যে বিপদের সৃষ্টি হয় ভাই ভৌতিক (শারীরিক) বিপদ বিভিন্ন ধরণের উপাদান যেমন- যন্ত্রপাতি, মেশিন, বিদ্যুৎ, অত্যধিক তাপ বা ঠান্ডা, আর্দ্রতা, অতি শব্দ কম্পন, চলন্ত বস্তু, কাজের অবস্থা এবং স্থান ইত্যাদি শ্রেণির ঝুঁকি এ শ্রেনির অন্তর্ভুক্ত।

রাসায়নিক ঝুঁকি 

কাঁচামালসমূহ, উৎপাদিত পন্য বিক্রিয়াকারী পদার্থ ইত্যাদি কখনো কখনো ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করে। যেমন- বিস্ফোরণ, বিকিরণ, বিষক্রিয়া, ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়া, বিষবা, মরিচা পড়া, জ্বালাপোড়া, ক্যান্সার ইত্যাদি। রাসায়নিক বিপদের জন্য দায়ী বিভিন্ন ধরনের পদার্থগুলো হলো- এসিড, ক্ষার, ডাইস, পেইন্ট, কুয়াশা, দ্রাবক, কটন ডাস্ট, গ্যাস বা ওয়েল্ডিং ধোঁয়া, হাইড্রোজেন, ক্লোরিন, ক্রোমিয়াম, লেড বা সীসা ইত্যাদি।

জৈবিক ঝুঁকি 

ক্ষুদ্র-অনুজীব এবং তাদের বিপাকীয় পদার্থের কারণে জৈবিক ঝুঁকি দেখা দেয়।

ক) নর্দমার পানিতে সাধারণত বিভিন্ন ধরণের অনুজীব থাকে। সালফারযুক্ত দ্রব্য (যেমন-প্রিজ, তেল ইত্যাদি) আহার করলে তাদের শরীরে বিপাকীয় উৎপাদক হিসেবে হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস নিঃসরণ ঘটে।

কিছু মাত্রার হাইড্রোজেন সালফাইড খুবই বিষাক্ত। এসবের কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। ব্যাকটেরিয়া এবং পরজীবী কীট যেগুলো খুলা-বালিতে ভেসে বেড়ায়, তাদের কারণে শ্বাসতন্ত্র সমস্যা হয়। এটি এক ধরণের জৈনিক বিপদ।

(খ) প্রাণী এবং প্রাণীর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ (চামড়া, পশম, চুল ইত্যাদি) থেকে তৈরি পণ্য জৈবিক বিপদের অন্তর্ভুক্ত। নব্যাকটেরিয়া ভাইরাস, ফাংগাস বা পরজীবি কাঁট, আক্রান্ত পশু, কোরো ব্যক্তি বা দূষিত জৈবিক ভরলের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। যেমন- অ্যানথ্রাক্স (ব্যাকটেরিয়া), টিউবারকিউলোসিস (মাইকোব্যাকটেরিয়াম), এইচআইভি, হিপাটাইটিস বি (ভাইরাস), অ্যাসপারজিলাস (ফাংগি), বাইসিনোসিস (এনডোটক্সিন), ৰাজ রুম্মু (ভাইরাস), ম্যাড কাউ, সোয়াইন ফ্লু ইত্যাদি।

মনোসামাজিক ঝুঁকি 

কর্মক্ষেত্রে কাজ সম্পর্কিত অথবা কাজের অবস্থানগত বিষয় য কর্মীদের মানসিক চাপ বৃদ্ধি করে। ফলে মনোসামাজিক বিপদ সৃষ্টি হয়। যেমন- মানসিক বিষাদ, কাজের প্রতি একঘেয়েমী ভাব, অস্বস্তি এবং জ্বালাপোড়া ইত্যাদি।

বিপদ বা ঝুকি নিয়ন্ত্রণ 

কর্মক্ষেত্রে বিপদ নিয়ন্ত্রণ একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। শিল্পকারখানার ডিজাইন করা থেকে শুরু করে উৎপাদনের সময় এবং কারখানা বন্ধ করা এই পর্যন্ত প্রক্রিয়া মেনে চলা হয়। এখন আমরা বিপদ নিয়ন্ত্রণের ফুল ও প্রাথমিক ধারণাগুলো বর্ণনা করছি। বর্তমান সময়ে প্রয়োজনীয় সুবিধা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের বিশেষায়িত ধারণা তৈরি করা হয়েছে। নিয়ে এসকল ধারনাগুলো বিবেচনা করে বিপদ নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতির বর্ণনা দেয়া হলো-

বিপদ বা ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের ধাপসমূহ

  • বিপদ বা ঝুঁকি সনাক্তকরণ
  • বিপদের তালিকা তৈরি 
  • বিপদ র‍্যাংকিং করা বা শ্রেণি নির্ধারন করা 
  • বিপদের সম্ভাবনা পরিমাপ করা 
  • বিপদ দূরীকরণ বা কমানো বা নিয়ন্ত্রণ করা।

কর্মক্ষেত্রে সৃষ্ট বিপদসমূহকে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোক দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে চিহ্নিত করে তালিকা করতে হবে। এর পরবর্তী ধাপ হলো, সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির তীব্রতা অনুসারে বিপদকে র‍্যাংকিং করতে হবে। ধারাবাহিকভাবে বিপদ সমূহকে ঝুঁকির স্তর ক্রমানুসারে র্যাংকিং করতে হবে। পরবর্তীতে বিপদের ঝুঁকি দূর করার জন্য ভিন্ন কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত। যেটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বিপদে রুপান্তর করবে অথবা বিপদকে দূর করবে। এটি সত্য যে, সকল বিপদ পুরোপুরি দূর করা সম্ভব নয়। কিন্তু প্রস্তুতি এমনভাবে থাকা উচিত যেন সহজেই বিপদ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

বিপদ বা ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের (প্রাধিকার ভিত্তিতে) ক্ৰম বা পৰ্যায়

  • কর্মক্ষেত্রে ঝুঁকি সম্পূর্ণরূপে দূর করতে হবে। এটাই সবচেয়ে ভালো উপায়। উদাহরণস্বরূপ একটি শান্ত পরিবেশ থেকে একটি শব্দ সৃষ্টিকারী মেশিন সরিয়ে নিতে হবে।
  • বিপদ সৃষ্টিকারী পদার্থের পরিবর্তে কম ক্ষতিকারক পদার্থ ব্যবহার করতে হবে। যেমন- অ্যাজমা বৃদ্ধিকারক পদার্থ থাকবে না এমন পেইন্ট ব্যবহার করতে হবে।
  • কর্মক্ষেত্রে থেকে বিপদ সরিয়ে ফেলা যেমন- ভৌতিক (শারীরিক) বিপদকে কর্মক্ষেত্র থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে অথবা যে স্থানে মেশিনটি ব্যবহৃত হচ্ছে ঐ স্থানকে ঢেকে রাখতে হবে। 
  • উৎস্য থেকে বিপদ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। বিপদের উৎস বন্ধ করার জন্য যন্ত্রপাতি ও সরগ্রামাদির ডিজাইন পুনরার করতে হবে। পার্ড অথবা বায়ু চলাচলের ব্যবস্থার জন্য পুনরায় ডিজাইন করতে হবে। 
  •  প্ৰশাসনিকভাবে নিয়ন্ত্রন-এটি প্রশাসনিক কৌশল যা কর্মক্ষেত্রে কর্মীদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য নিশ্চিত করে। প্রশাসনিকভাবে বিপদ নিয়ন্ত্রণের জন্য দুষিত জায়গায় শ্রমিকদের অল্প সময়ব্যাপী কাজ করার ব্যবস্থা করতে হবে। এটি শ্রমিকদের সময় ভাগ করে দিয়ে অথবা অন্য কোনো নিয়ম প্রয়োগ করতে হবে।

ঝুঁকি অপসারণ 

যেখানে কোনো বিপদ নেই সেখানে আঘাত পাওয়া বা অসুস্থ হওয়ার কোনো ঝুঁকি নেই। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়-

  • এলোমেলো জঞ্জাল দূর করে হোঁচট খেয়ে পড়ার মতো বিপদ দূর করতে হবে। 
  • অপ্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থ বর্জন করতে হবে। 
  • ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতি পরিহার করতে হবে। 
  • ক্ষতিকর যন্ত্রপাতি অতি দ্রুত মেরামত করতে হবে।
  • অতিরিক্ত ফটোকপি এবং বই বা পান্ডুলিপির পরিবর্তে ই-মেইলের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।
  • ব্যবহারকারীর কর্মযোগ্যতার সাথে নতুন যন্ত্রপাতির সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে।

ঝুঁকি সৃষ্টিকারী মালামাল ও যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপন 

বিপদ দূর করা সম্ভব না হলে কম ঝুঁকি সম্পন্ন বিকল্প কিছু ব্যবস্থা করতে হবে এটি এমনভাবে করতে হবে যেন সন্তোষজনকভাবে একই ধরনের কাজ সম্পাদন করা যায়। যেমন-

  • বিপদ সৃষ্টিকারী পদার্থের পরিবর্তে কম ক্ষতিকারক দ্রব্য ব্যবহার করতে হবে।
  • যেখানে সর্বদা টেলিফোন ব্যবহৃত হয় সেখানে হ্যান্ডসেটের পরিবর্তে হেডসেট ব্যবহার করতে হবে
  • বাষ্পীয় বিপদ নিয়ন্ত্রের জন্য কম ক্ষতিকর দ্রব্য ব্যবহার করতে হবে ।
চিত্র ১.৩০ ঝুঁকি সৃষ্টিকারী মালামাল ও যন্ত্রপাতি প্ৰতিস্থাপন

শ্রেণির তাত্ত্বিক কাজ 

ড্রাফটিং শপে নিরাপদে কাজ করতে তোমরা কোন কাজে কী ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিবে তা ছকে লিখ (একটি কাজের নামসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা উল্লেখ করা হলো) -

 

 

Content added By

প্রাথমিক চিকিৎসা (First Aid) :

হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনায় আহত বা অসুস্থ লোককে ডাক্তার অথবা হাসপাতালে নেওয়ার আগে ঘটনাস্থলে বা নিকটবর্তী স্থানে তাৎক্ষনিকভাবে যে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা বা বলে। অনেক সময় প্রাথমিক চিকিৎসার সাহায্যে একজন রোগীকে সম্পুর্ণ সুস্থ করে তোলাও সম্ভব হয়। তাছাড়া রোগীকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়ার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত জীবিত বা সুস্থ রাখার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা খুবই জরুরি।

প্রাথমিক চিকিৎসার উদ্দেশ্য

  • জীবন রক্ষা করা : এখানে বলা যায় যে, দুর্ঘটনার জন্য হোক অথবা অসুস্থতার জন্যই হোক প্রথমে মৃত্যুর হাত থেকে জীবন রক্ষার জন্য সচেষ্ট হতে হবে।
  • গুরুতর আঘাতের পর অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়া থেকে বিরত রাখা : প্রাথমিক পর্যায়ে রোগীর অবস্থা যেন খারাপের দিকে না যায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে।
  • অবস্থার উন্নতির সাহায্য করা : রোগীর বর্তমান অবস্থা থেকে উন্নত করার জন্য সাহায্য করতে হবে।

প্রাথমিক চিকিৎসকের দায়িত্ব ও কর্তব্য

  • সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা
  • কোথায় আঘাত সেটা খুঁজে বের করা
  • তাৎক্ষনিক কিছু চিকিৎসা প্রদান করা
  • বিলম্ব না করে হাসপাতানে ইমার্জেন্সীতে রোগী প্রেরণ করা
  • কি করা উচিৎ নয় সেটা জানতে হবে
  • কি অবশ্যই করা উচিৎ সেটাও জানতে হবে

আগুনের উৎস এবং বিপদ সংকেত সম্পর্কে জানা : আগুন প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। 

১. "এ" ক্লাশ ফায়ার 

২. "বি" ক্লাশ ফায়ার

৩. "সি" ক্লাশ ফায়ার

"এ" ক্লাশ ফায়ার এর উৎস : কাঠ, কাপড়, কাগজ এবং প্যাকিং মেটিরিয়্যাল ।

"সি" ক্লাশ ফায়ার এর উৎস : বৈদ্যুৎতিক যন্ত্রপাতি যেমন- মটর জেনারেটর, কেবল, ওয়্যারিং সুইচ, সুইচ বোর্ড ইলেকট্রোনিক্স যন্ত্রপাতি ইত্যাদি।

"সি" ক্লাশ আগুন নিভানোর জন্য ব্যবহৃত এক্সটিংগুইসার

  • ড্রাই পাউডার কেমিক্যালস। 
  • কার্বন ডাই অক্সাইড এক্সটিংগুইসার। 
  • কার্বন টেট্রাক্লোরাইড।

আগুন নিভানোর পদ্ধতি তিন ধরনের :

ক) কুলিং পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে পানি দিয়ে ঠান্ডা করে তাপ অপসারনের মাধ্যমে আগুন নেভানো হয় । 

খ) মুদারিং পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে আগুন কে শ্বাসরুদ্ধ করে নেভানো হয়।

গ) স্টারডেশন পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে দাহ্য বস্তু অপসারন করে আগুন কে প্রসারিত হওয়া থেকে বিরত রাখা হয়।

আগুন লাগলে করণীয়

১. বিচলিত হয়ে উপস্থিত বুদ্ধি হারানো যাবে না; আগুন বলে চিৎকার করতে হবে এবং ফারার ফাইটিং চর্চার মাধ্যমে উপরে উল্লেখিত অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করবে। 

২. ফারার সার্ভিস অফিসে ফোন করে জানাতে হবে। 

৩. বৈদ্যুতিক আগুনের ক্ষেত্রে দ্রুত মেইন সুইচ বন্ধ করবে। 

৪. প্রত্যেকে যার যার সুইচ বন্ধ করবে। 

৫. হাতের কাছে যে টুকু পানি পাওয়া যায় সুচনাতেই আগুনের উপর তা নিক্ষেপ করবে। 

৬. তৈল জাতীয় ও বৈদ্যুতিক আগুনে পানি দিবে না এবং বৈদ্যুতিক আগুনে ফোম টাইপ এক্সটিংগুইসার ব্যবহার করবে না। বালি বা ভেজা মোটা কাপড় অথবা ভেজা কম্বল দিয়ে আগুন চাপা দিবে। 

৭. পরনের কাপড়ে আগুন লাগলে সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে গড়াগড়ি দিবে বা ভেজা কম্বল জড়িয়ে ধরবে। ভুলেও দৌড়াবে না, দৌড়ালে আগুন বেড়ে যাবে। 

বিঃ দ্রঃ "সি" ক্লাশ আগুন নিভানোর জন্য পানি বা ফোম ব্যবহার করবে না।

বিপদ সংকেত : আগুন লাগলে যেসব সর্তকতা মূলক বিপদ সংকেত ব্যবহৃত হয় সেগুলিকে ফায়ার হ্যাজার্ড নামে অভিহিত করা হয়। যেমন- এলার্ম বা হর্ন, স্মোক ডিটেকটর, লাল বাতি এবং সাইরেন ইত্যাদি। কোথাও আগুন লাগলে দমকল বাহিনী তাদের গাড়িতে ঘন্টা, লাল এলার্ম লাইট, সাইরেন বাজিয়ে থাকে। কল- কারখানায়, অফিস আদালতে, বাসা বাড়িতে লাল এলার্ম লাইট লাগানো থাকে। আগুন লাগলে ঘণ্টা বাজানো হয়। অথবা সুইচ অন করলে এলার্ম বেজে উঠে।

ওয়ার্কশপে আগুন লাগলে নিম্নলিখিত কাজ গুলো তাড়াতাড়ি করা উচিত : 

১. আগুনের এলার্ম বাজাতে হবে বা চিৎকার করে সকলকে জানাতে হৰে । 

২. ফায়ার ব্রিগেডকে আগুন ধরার সংবাদ দিতে হৰে । 

৩. আগুনের শ্রেনী অনুযায়ী সঠিক ফায়ার এক্সটিংগুইসার দিয়ে আগুন নিভানোর ব্যবস্থা করতে হবে। 

৪. আগুন ব্যাপকভাবে জ্বলতে শুরু করলে অথবা আগুন নিভাতে অসমর্থ হলে নিজের জান্মরক্ষার জন্য ঐ স্থান ত্যাগ করতে হবে।

 

 

Content added By

কর্মক্ষেত্রের কম্পিউটার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি সংরক্ষণ (Protection of Computer & other Equipment in Workplace )

  • কাজ শেষে টুলস নির্ধারিত স্থানে পরিষ্কার করে সাজিয়ে রাখতে হবে যাতে নষ্ট বা ক্ষতিগ্রস্থ না হয় 
  • মেজারিং টুলসগুলো খুঁজে পাওয়ার সুবিধার্থে এক জায়গায় রাখতে হবে ।
  • এক ধরনের টুলস অন্য ধরনের টুলসের সাথে একত্রে রাখা যাবে না
  • দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ধাতব টুলস পরিষ্কার করে তেল বা গ্রিজ মেখে রাখতে হবে যাতে টুলসে মরিচা না পড়ে এবং ধারালো অবস্থা বজায় থাকে

কর্মক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণ 

কোনো ওয়ার্কশপ বা কারখানাকে সচল রাখতে যন্ত্রপাতির পরিকল্পিত রক্ষণাবেক্ষণ একান্ত অপরিহার্য। মেশিন বা যন্ত্রপাতির নষ্ট বা ক্ষয় হয়ে যাওয়ার প্রবণতা কমানোর জন্য এবং সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য যন্ত্রপাতির পরিকল্পিত ও আদর্শ রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার।

 

 

Content added || updated By

পারদর্শিতার মানদন্ড

  • কর্মক্ষেত্রের প্রকৃতি অনুসারে জরুরি পরিস্থিতি চিহ্নিত করা 
  • কর্মক্ষেত্রের জরুরি প্রক্রিয়াগুলির যথাযথ এবং কর্মক্ষেত্রের পদ্ধতি অনুসারে অনুসরণ করা
  • দুর্ঘটনা, আগুন এবং জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় কর্মক্ষেত্রের পদ্ধতি অনুসরণ করা
  • জরুরী প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা এবং পদ্ধতিগুলি কার্যকরভাবে অনুশীলনের মাধ্যমে নিজের এবং অন্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা

(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম

 

(খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (টুলস, ইকুইপমেন্ট ও মেশিন)

(গ) প্রয়োজনীয় মালামাল (Raw Materials)

 

(ঘ) কাজের ধারা 

১. স্টোর হতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও মালামাল সংগ্রহ কর। 

২. যথানিয়মে তালিকা অনুসারে সুরক্ষা সরঞ্জামাদি পরিধান কর। 

৩. শিট মেটালের তৈরি খাতব ট্রে-এর মধ্যে বালি ভর্তি কর। 

৪. জ্বালানি কাঠগুলোকে বালিভর্তি ট্রে-এর মধ্যে সাজিয়ে নাও । 

৫. জ্বালানি কাঠের মধ্যে কেরোসিন মিশিয়ে কিছুক্ষন পর দেয়াশলাই দিয়ে আগুন ধরিয়ে দাও ।

৬. আগুন পূর্ণমাত্রায় জ্বলে উঠার সাথে অগ্নি নির্বাপক এর পিনটি চিত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী খুলে দাও । 

৭. তাৎক্ষণিক ভাবে ডান হাতে লিভার ও বাম হাতে আউটলেট পাইপটি ধরে আগুনের দিকে একাত্মতার সাথে নিশানা ঠিক কর।

৮. ডান হাতে লিভার চেপে ধর এবং বাম হাতে অগ্নিশিখার মধ্যে নির্গত গ্যাস ডানে বামে ঘুরিয়ে ছড়িয়ে দাও যাতে আগুন সম্পূর্ণ নিতে যায় ।

৯. শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে দ্রুত ওয়ার্কশপের পিছনের দরজা পর্যন্ত পৌঁছাবে এবং যত দ্রুত সম্ভব দরজা খুলে দৌড়িয়ে সবাইকে নিয়ে বের হয়ে আসবে।

কাজের সর্তকতা :

  • সঠিক নিয়মে সকল প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জাম পরিধান করা আবশ্যক । 
  • অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি যথাযথ সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে। 
  • যেদিক থেকে বাতাস আসছে সেই পার্শ্বে দাঁড়াতে হবে।

আত্মপ্রতিফলন:  

অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানো ও আগুনসৃষ্ট ধোয়া হতে ওয়ার্কশপের শিক্ষার্থীদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় গ্রহণ করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/জাবার অনুশীলন করতে হবে।

 

 

Content added By

পারদর্শিতার মানদন্ড

  • কর্মক্ষেত্রের প্রকৃতি অনুসারে জরুরি পরিস্থিতি চিহ্নিত করা
  • কর্মক্ষেত্রের জরুরি প্রক্রিয়াপুলির যথাযথ এবং কর্মক্ষেত্রের পদ্ধতি অনুসারে অনুসরণ করা 
  • দুর্ঘটনা এবং জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় কর্মক্ষেত্রের পদ্ধতি অনুসরণ করা 
  • জরুরী প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা এবং পদ্ধতিগুলি কার্যকরভাবে অনুশীলনের মাধ্যমে নিজের এবং অন্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা

(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম

কাজের সর্তকতা :

  • সঠিক নিয়মে সকল প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জাম পরিধান করা আবশ্যক । 
  • গগলস ও গ্লাস যথাযথ সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে।

আত্ম প্রতিফলন: 

গগলস ও গ্লাস দিয়ে হতে ওয়ার্কশপের শিক্ষার্থীদের চোখকে নিরাপদ রাখার কৌশল/দক্ষতা অর্জিত হয়েছে।

 

 

 

Content added By

পারদর্শিতার মানদন্ড

  • কর্মক্ষেত্রের প্রকৃতি অনুসারে জরুরি পরিস্থিতি চিহ্নিত করা
  • কর্মক্ষেত্রের জরুরি প্রক্রিয়াগুলির যথাযথ এবং কর্মক্ষেত্রের পদ্ধতি অনুসারে অনুসরণ করা
  • দুর্ঘটনা এবং জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় কর্মক্ষেত্রের পদ্ধতি অনুসরণ করা
  • জরুরী প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা এবং পদ্ধতিগুলি কার্যকরভাবে অনুশীলনের মাধ্যমে নিজের এবং অন্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা

 

 

কাজের সর্তকতা :

  • সঠিক নিয়মে সকল প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জাম পরিধান করা আবশ্যক । 
  • এন্টিভাইরাস এবং স্পাইওয়্যার সফটওয়্যার যথাযথ সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে।

আত্ম প্রতিফলন: 

এন্টিভাইরাস এবং স্পাইওয়্যার সফটওয়্যার দিয়ে ওয়ার্কশপের শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি নিরাপদ রাখার কৌশল/দক্ষাতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে।

 

 

Content added By
Please, contribute to add content into প্রশ্নমালা-১.
Content

Promotion