এসএসসি(ভোকেশনাল) - আত্মকর্মসংস্থান ও ব্যবসায় উদ্যোগ - প্রেষণা ও পেশা নির্বাচন | NCTB BOOK

সঠিক পেশা নির্বাচনে যেসব তথ্য সামগ্রির ব্যবহার করা হয়, তা নিম্নে আলোচনা করা হলো:

(ক) তথ্য : মানুষের জীবনে বহুমুখী চাহিদা রয়েছে। এর চাহিদা পূরণের জন্য কাজের বিনিময়ে অর্থ ও সুযোগ-সুবিধা পেতে চায় । প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যে সকল প্রণোদনামূলক ব্যবস্থা প্রদত্ত হয় তাকে আর্থিক প্রেষণা বলে ।

১। ন্যায্য বেতন: কাজের বিনিময়ে শ্রমিকরা প্রতিষ্ঠান থেকে নির্দিষ্ট হারে যে আর্থিক সুযোগ-সুবিধা লাভ করে তাকে বেতন বলে । 

২। বোনাস: বছরের শেষে অথবা কোনো উৎসবের সময় নিয়মিত বেতন ছাড়াও অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা দেওয়া হলে তাকে বোনাস বলে। বোনাস হলো একধরনের আর্থিক সুবিধা। এ সুবিধা পেলে কর্মীদের মধ্যে কাজ করার উদ্দীপনা জাগে । 

৩। বাসস্থান সুবিধা: বাসস্থান মানুষের মৌলিক প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত । তাই প্রেষণা দানের অন্যতম উপায় হলো কর্মীদের মৌলিক অভাব পূরণে বাসস্থান সুবিধা প্রদান করা । 

৪। চিকিৎসা সুবিধা: কর্মীদের সুস্বাস্থ্য উচ্চ মনোবলের পক্ষে অপরিহার্য। তাই কর্মীদের এবং সম্ভাব্য ক্ষেত্রে তার পরিবারের চিকিৎসা প্রদান কর্মীদের উদ্দীপ্ত করার একটি উল্লেখযোগ্য উপায় । 

৫। পরিবহন সুবিধা: অনেক শ্রমিকই কর্মক্ষেত্র হতে দূরে অবস্থান করে। তাই কর্মস্থলে আসা-যাওয়ার জন্য পরিবহন সুবিধা প্রদান করা হলে কর্মীরা উৎসাহিত হয় । 

৬। রেশন সুবিধাঃ নির্দিষ্ট সমায়ান্তে কম মূল্যে রেশন প্রদানের মাধ্যমে কর্মীদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহের মাধ্যমেও কর্মীদের উৎসাহিত করা যায় । 

৭। আর্থিক নিরাপত্তা: ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠান প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, পেনশন, যৌথ বিমা, কল্যাণ তহবিল ইত্যাদি ব্যবস্থা করতে পারে। এ ব্যবস্থা করলে কর্মীরা উৎসাহ সহকারে কাজ করে । 

৮। চাকরির নিরাপত্তা: সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও চাকরির নিরাপত্তা সম্পর্কে অনিশ্চয়তা থাকলে কর্মীর মনোযোগ নষ্ট হয়। সুতরাং কোনো কর্মীর কাজের প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে হলে তার চাকরির নিরাপত্তা থাকা প্রয়োজন । 

৯। সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ: কাজের উপযোগী সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ কর্মীকে কাজের প্রতি আগ্রহী করে তোলে ও তার কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি করে ।

১০। আকর্ষণীয় কাজ: কাজে তৃপ্তি না পেলে কর্মী উৎসাহিত হয় না। তাই কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী শ্রেণিবিভাগ করে দক্ষতা অনুযায়ী কার্যভার অর্পণ করতে হবে । এতে উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে কর্মী কাজ করবে ।

১১। প্রশিক্ষণের সুযোগ: প্রশিক্ষণ কর্মীর দক্ষতা বৃদ্ধি করে। এতে যে কোনো সমস্যা সমাধানে কর্মীর মনোবল বৃদ্ধি পায় । ফলে কর্মী আগ্রহ ও উৎসাহ সহকারে কাজ করে ।

১২। শ্রমিক সংঘ গঠন করার সুযোগঃ শ্রমিক সংঘ গঠন করার অধিকার বর্তমানকালে শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহে শ্রমিকদের অন্যতম দাবি হিসেবে বিবেচিত হয় । তাই শ্রমিক সংঘ গঠন করার সুযোগও কর্মীদের উৎসাহের একটি কারণ । 

১৩। প্রতিষ্ঠানের সুনাম: কর্মী যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করে তার সুনাম কর্মীদের মাঝে উৎসাহ জোগায় । ভালো প্রতিষ্ঠান কর্মীরা সহজে ছাড়তে চায় না । বরং তা তাদের গর্বের বিষয় হয়ে দাঁড়ায় । 

১৪। সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের চাহিদা পূরণের পর প্রত্যেক কর্মী সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে চায় । এমতাবস্থায় কর্মীকে সম্মানজনক পদমর্যাদা দান করলে উৎসাহের সাথে কাজ করবে ।

Content added By