কাফেররা দেখল যে, মুসলমানরা মক্কা ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছে। নবি করিম (স) হয়তো এক ফাঁকে দেশ ছেড়ে চলে যাবেন, তাদের শিকার হাত ছাড়া হয়ে যাবে। সকল গোত্র সম্মিলিতভাবে মহানবি (স) কে হত্যার সিদ্ধান্ত নিল। এক রাতে তারা নবি করিম (স) -এর ঘর অবরোধ করল এবং প্রত্যুষে তাঁকে হত্যা করার অপেক্ষায় থাকল । আল্লাহ তায়ালা নবিকে কাফেরদের চক্রান্তের কথা জানিয়ে দিলেন এবং মদিনায় হিজরতের নির্দেশ দিলেন। হিজরত অর্থ ‘দেশ ত্যাগ’। মহানবি (স) হযরত আবু বকর (রা) কে সঙ্গে নিয়ে মদিনায় রওয়ানা হলেন। গচ্ছিত সম্পদ মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য মহানবি (স) হযরত আলী (রা) কে তাঁর ঘরে রেখে যান। কাফেররা ঘরে ঢুকে নবি করিম (স)কে না পেয়ে এবং তাঁর বিছানায় আলীকে দেখতে পেয়ে ক্রোধে অধীর হলো। কিন্তু নবি করিম (স)-এর আমানতদারি দেখে তারা মনে মনে লজ্জিত হলো। মহানবি (স) ও আবু বকর সিদ্দীক (রা) কিছুদূর অগ্রসর হয়ে মক্কার সাওর পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিলেন। কাফেররা তাঁদের খুঁজতে খুঁজতে একেবারে গুহার মুখে হাজির হলো। আবু বকর (রা) গুহার মুখে কাফেরদের গতিবিধি লক্ষ্য করে বিচলিত হলেন। মহানবি (স) বললেন, “আবু বকর! চিন্তা করো না, আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন”।
তিনদিন গুহায় অবস্থানের পর মহানবি (স) ৬২২ খ্রিস্টাব্দের ২৪ সেপ্টেম্বর মদিনায় পৌঁছান। মদিনার আবাল বৃদ্ধ বনিতা পরম আগ্রহ ও ভালোবাসায় মহানবি (স) কে গ্রহণ করলেন, মদিনার ঘরে ঘরে আনন্দের বন্যা বয়ে গেল। নবিজির হিজরত ইসলামের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এর মাধ্যমে ইসলাম নতুন গতি ও নতুন শক্তি লাভ করে।
মহানবি (স) মুহাজির ও আনসারদের ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ করেন। মুহাজির মানে- হিজরতকারী। মক্কা থেকে হিজরত করে যাঁরা মদিনায় যান তাঁদেরকে বলা হয় মুহাজির। আর মুহাজিরদের মদিনায় যারা আশ্রয় ও সাহায্য সহযোগিতা দিলেন, তাঁরা হলেন আনসার। আনসার মানে—সাহায্যকারী।
আরও দেখুন...