নবুয়ত লাভের পর হযরত মুহাম্মদ (স) আল্লাহর নির্দেশে প্রথমে নিকট আত্মীয়- স্বজনের কাছে গোপনে ইমানের দাওয়াত দিতে থাকেন। তাঁর দাওয়াতে সর্ব প্রথমে ইসলাম গ্রহণ করেন তাঁর সুখ-দুঃখের অংশীদার সতী-সাধবী স্ত্রী হযরত খাদিজা (রা)। এরপর তাঁদের পরিবারভুক্ত হযরত আলী (রা) ও হযরত যায়দ ইবন হারিসা (রা) ইসলাম গ্রহণ করেন। পরিবারের বাইরে এবং বয়ঃপ্রাপ্ত পুরুষদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন হযরত আবুবকর (রা)। তিনি ছিলেন রাসুল(স)-এর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এরপর আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ পেয়ে তিনি প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত দিতে শুরু করেন। এতে মূর্তি পূজারিরা তাঁর ঘোর বিরোধিতা শুরু করে। মহানবি(স) ও তাঁর সাহাবিদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালাতে থাকে। তারা মহানবি (স) কে নানা রকম প্রলোভনও দেখাতে থাকে । নেতৃত্ব ও ধন-সম্পদ দেওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়। রাসুল (স) স্পষ্টভাবে তাদেরকে জানিয়ে দেন, “আমার এক হাতে সূর্য, আর এক হাতে চাঁদ এনে দিলেও আমি এ সত্য প্রচার থেকে বিরত হব না।”
তিনি বললেন, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। ইবাদত করতে হবে একমাত্র তাঁরই। তিনি এক, অদ্বিতীয়। তাঁর কোনো শরিক নেই। তিনি আরও বললেন, তোমাদের হাতে বানানো দেবদেবীর ও প্রতিমার কোনো ক্ষমতা নেই। এদের ভালোমন্দ করার কোনো শক্তিই নেই। আসমান-জমিন, চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র সবকিছুর মালিক একমাত্র আল্লাহ। তিনিই সবকিছুর স্রষ্টা, পালনকারী ও রিজিকদাতা। তিনিই আমাদের জীবন- ন-মৃত্যুর মালিক। সুতরাং দাসত্ব, আনুগত্য ও ইবাদত করতে হবে একমাত্র তাঁরই।
তিনি আরও বললেন, তোমরা সত্য, ন্যায় ও সুন্দরের পথে ফিরে এসো। চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি, জুয়া, ব্যভিচার, মিথ্যা, প্রতারণা এসবই পাপের কাজ। সুতরাং এগুলো পরিহার করো। কারো প্রতি অন্যায়-অবিচার করবে না। অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করবে না। অন্যায়ভাবে কারো সম্পদ হরণ করবে না। কারো প্রতি জুলুম করবে না ৷
মহানবি (স) আরও বোঝালেন, তোমাদের দুনিয়ার জীবনই শেষ নয়। মৃত্যুর পরে আরও এক জীবন আছে,তাকে বলে পরকাল । সে জীবন অনন্তকালের। পরকালে আল্লাহর দরবারে দুনিয়ার ভালোমন্দ সব কাজের জন্য হিসাব দিতে হবে।
দুনিয়ার জীবনে যারা আল্লাহ ও রাসুলের কথা মানবে, ভালো কাজ করবে, পরকালে তারা মুক্তি পাবে। চিরসুখের স্থান জান্নাত লাভ করবে। আর যারা আল্লাহ ও রাসুলের কথা মানবে না, মন্দ কাজ করবে, তারা চরম শাস্তির স্থান জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।
আরও দেখুন...