মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ২০ এপ্রিল এবং রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ সোমবার মক্কার বিখ্যাত কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুল্লাহ, মাতার নাম আমিনা। তাঁর দাদার নাম ছিল আব্দুল মুত্তালিব। জন্মের পর তাঁর নাম রাখা হয় মুহাম্মদ এবং আহমাদ। তাঁর জন্মের পূর্বেই পিতা আব্দুল্লাহ মারা যান।
মহানবি (স)-এর জন্মের সময় আরবের লোকেরা নানা পাপের কাজে লিপ্ত ছিল। মারামারি, কাটাকাটি, ঝগড়া-ফেসাদ, যুদ্ধ-বিগ্রহ, চুরি, ডাকাতি, হত্যা, লুণ্ঠন, মদ, জুয়া ইত্যাদি নিয়েই তারা মেতে ছিল। এক আল্লাহকে ভুলে তারা নানা দেব-দেবীর মূর্তি বানিয়ে পূজা করত। পবিত্র কাবা তারা মূর্তিতে ভরে রেখে ছিল। কাবা প্রাঙ্গণে তারা ৩৬০টি মূর্তি স্থাপন করেছিল। তখন বাজারে পণ্যের মতো মানুষ বেচাকেনা হতো। মনিবরা দাস-দাসীদের প্রতি অমানবিক নির্যাতন করত। পরিবারে ও সমাজে নারীদের কোনো মান-সম্মান বা অধিকার ছিল না। সে সময় কন্যা শিশু জন্মগ্রহণ করা পিতা— মাতার জন্য খুবই অপমানের বিষয় ছিল। মেয়ে শিশুদের নিষ্ঠুরভাবে জীবন্ত মাটিতে পুঁতে রাখা হতো। তাদের আচার-আচরণ ছিল বর্বর ও মানবতাবিরোধী। এ সময়ে মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা ছিল না। মদপান, জুয়াখেলা, সুদ, ব্যভিচার ছিল তখনকার লোকদের নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার। কুসংস্কার ও পাপ-পঙ্কিলতার অতলতলে নিমজ্জিত ছিল তারা। সে সময়কে বলা হয় ‘আইয়ামে জাহিলিয়া' বা মূর্খতার যুগ। মানবতার এ চরম দুর্দিনে আল্লাহ তায়ালা তাঁর বন্ধু সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মানব হযরত মুহাম্মদ (স) কে পাঠালেন বিশ্বমানবতার শান্তিদূত হিসেবে। পথহারা মানুষকে সত্য, সুন্দর, ধর্ম ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করার জন্য ।
আরও দেখুন...