প্রতীক প্রাণী : Hydra
Hydra নিডেরিয়া (Cnidaria) পর্বের সরল ধরনের জলজ প্রাণী। এরা প্রথম দ্বিভ্রূণস্তরী প্রাণী (diploblastic লিনিয়াস (Carolus Linnacus, 1707-1778) এর নাম দেন Hydra । গ্রিক রূপকথার নয় মাথাওয়ালা ড্রাগনের নামানুসারে Hydra-র নামকরণ করা হয়। ঐ ড্রাগনটির একটি মাথা কাটলে তার বদলে দুই বা তার বেশি মাথা গজাতো। Hydra ঐ ড্রাগনের মতো হারানো বা ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পুনরায় সৃষ্টি করতে পারে, তাই অনেক সময় বহু মাথাওয়ালা সদস্য আবির্ভুত হয়। মহাবীর হারকিউলিস অবশেষে এ দানবকে বধ করেন ।
বাংলাদেশে Hydra-র বিভিন্ন প্রজাতিঃ
বিশ্বের সর্বত্র বিভিন্ন প্রজাতির Hydra পাওয়া যায়। তবে Hydra vulgaris নামক হালকা হলুদ-বাদামী বর্ণের, Pelmatohydra oligactis নামক বাদামী বর্ণের, Chlorohydra viridissima নামক সবুজ বর্ণের এবং Hydra gangetica নামক সাদা বা হালকা গোলাপি বর্ণের Hydra এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার স্বাদ পানির জলাশয়ে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। বিভিন্ন প্রজাতির Hydra-র মধ্যে বাংলাদেশে Hydra vulgaris সুলভ বলে এখানে এ প্রজাতির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। Hydra একটি একক মুক্তজীবী প্রাণী। মিঠাপানিতে (খাল, বিল, পুকুর, হ্রদ,ঝর্ণা) নিমজ্জিত কঠিন বস্তু এবং জলজ উদ্ভিদের পাতার নিচের তলে সংলগ্ন থেকে নিম্নমুখী। হয়ে ঝুলে থাকে। স্থির, শীতল ও পরিষ্কার পানিতে এদের অধিক পরিমাণে পাওয়া যায়। ঘোলা, উষ্ণ ও চলমান পানিতে এদের খুব কম পাওয়া যায়। ক্ষুধার্ত অবস্থায় এরা দেহ ও কর্ষিকাকে সর্বোচ্চ প্রসারিত করে পানিতে দুলতে থাকে। কোন কিছুর সংস্পর্শে এরা দেহকে সঙ্কুচিত করে ফেলে। এরা মাংসাশী অর্থাৎ অন্য কোনো প্রাণী খেয়ে জীবন ধারণ করে। কর্ষিকার সাহায্যে খাদ্য গ্রহণ করে। চলাফেরা করে দেহের সংকোচন-প্রসারণ ও কর্ষিকার সাহায্যে দেহপ্রাচীরের মাধ্যমে ব্যাপন (diffusion) প্রক্রিয়ায় শ্বসন ও রেচন সম্পন্ন করে। মুকুলোদগম ও দ্বিবিভাজনের মাধ্যমে অযৌন জনন এবং জননকোষ সৃষ্টি করে যৌন জনন সম্পন্ন হয়। Hydra-র গায়ে সংলগ্ন দুটি কোষ থাকে। এদের পুনরুৎপত্তি (regeneration) ক্ষমতা প্রচন্ড। হাইড্রার পুনৎপত্তি সম্পর্কে ব্যাখা দেন ট্রেম্বলে।