আরশোলার পুঞ্জাক্ষির দুই পাশের সাদা দাগের নাম কি ?

Created: 2 years ago | Updated: 1 year ago
Updated: 1 year ago

ঘাসফড়িংয়ের পুঞ্জাক্ষি (Compound eye):
ঘাসফড়িংয়ের মস্তকের উভয় পাশে কালাে, বৃন্তহীন, বৃক্কাকার, উত্তল গঠনকে পুঞ্জাক্ষি বলে।
প্রতিটি পুঞ্জাক্ষি প্রায় ১২০০ থেকে ১৮০০ টি দর্শন একক বা ওমাটিডিয়াম (Ommatidium) নিয়ে গঠিত। পুঞ্জাক্ষিতে অবস্থিত প্রতিটি ওমাটিডিয়ামের গঠন কার্যপদ্ধতি একই রকম।

ওমাটিডিয়ামের গঠনঃ
স্বাধীন ও স্বতন্ত্রভাবে প্রতিবিম্ব গঠনে সক্ষম পুঞ্জাক্ষির প্রতিটি সরলাক্ষি বা দর্শন একক বা একক আলােক সংবেদী অঙ্গকে ওমাটিডিয়াম বলে।
একটি ওমাটিডিয়াম ১০টি অংশ নিয়ে গঠিত। নিচে ঘাসফড়িংয়ের ওমাটিডিয়ামের গঠন বর্ণনা করা হলাে-

১। কর্নিয়া (Cornea)
এটি ওমাটিডিয়ামের বাহিরের দিকে অবস্থিত। এটি কিউটিকল নির্মিত ছয়কোণ বিশিষ্ট স্বচ্ছ আবরণ ।

কাজঃ কর্নিয়া লেন্সের মতাে কাজ করে ।

২। কর্নিয়াজেন কোষ (Corneagen cell)
কর্নিয়ার ঠিক নিচে একজোড়া কর্নিয়াজেন কোষ পাশাপাশি অবস্থান করে।

কাজঃ পুরাতন কর্নিয়া পরিত্যক্ত হলে এদের নিঃসৃত রসে নতুন কর্নিয়া সৃষ্টি হয় ।

৩। ক্রিষ্টালাইন কোণকোষ (Crystaline cone cell)
এগুলাে কর্নিয়াজেন কোষের নিচে অবস্থিত, লম্বা চারটি কোষ। এরা ক্রিষ্টালাইন কোণকে ঘিরে রাখে।

কাজঃ এসব কোষের নিঃসৃত রস দিয়ে ক্রিষ্টালাইন কোণ গঠিত হয় ।

৪। ক্রিস্টালাইন কোণ (Crystaline cone)
ক্রিস্টালাইন কোণকোষগুলাে দিয়ে পরিবেষ্টিত স্বচ্ছ, মােচাকৃতির অংশকে ক্রিস্টালাইন কোণ বলে।

কাজঃ এর মাধ্যমে আলােক রশ্মি প্রতিসরিত হয় ।

৫। আইরিশ রঞ্জক আবরণ (Iris pigment sheath)
কর্নিয়াজেন কোষ ও ক্রিস্টালাইন কোণ কোষগুলাে একটি । কালাে রঙের আবরণী দিয়ে আবৃত থাকে। একে আইরিশ রঞ্জক আবরণ বলে। তীব্র আলােকে এই আবরণী । প্রসারিত হয়ে কোণ কোষগুলােকে সম্পূর্ণরূপে আবৃত করে। আবার মৃদু আলোকে সংকুচিত হয়ে কোণ কোষগুলােকে আংশিক মুক্ত রেখে প্রতিবিম্ব গঠনকে প্রভাবিত করে।

৬। রেটিনুলার কোষ (Retinular cell)
এরা আকারে লম্বা এবং সংখ্যায় সাতটি। এদের নিউক্লিয়াস অগ্রপ্রান্তে অবস্থিত। এরা ক্রিস্টালাইন কোণ কোষের নিচে বৃত্তাকারে সাজানাে থাকে।

কাজঃ এদের নিঃসৃত রসে র্যাবড়ােম গঠিত হয়।

৭। র‍্যাবডোম (Rhabdom)
এটি রেটিনুলার কোষগুলাের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত লম্বা দণ্ডের মতাে অংশ । রেটিনুলার কোষ নিঃসৃত রসেই এটি গঠিত ।

কাজঃ  র‍্যাবডম প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হয় ।

৮। রেটিনাল সিথ (Retinal sheath)
এরা রঞ্জক কোষযুক্ত কালাে পর্দার আবরণী । এরা আইরিশ কোষের গােড়াকে এবং রেটিনুলার কোষকে বেষ্টন করে রাখে।

কাজঃ একটি ওমাটিডিয়ামকে তার পার্শ্ববর্তী ওমাটিডিয়াম থেকে পৃথক রাখে ।

৯। ভিত্তি পর্দা (Basal membrane)
ওমাটিডিয়াম যে পাতলা পর্দার ওপর অবস্থান করে তাকে ভিত্তি পর্দা বলে।

কাজঃ এটি ওমাটিডিয়াকে ধারণ করে।

১০। স্নায়ুতন্তু (Nerve fibre)
প্রতিটি রেটিনুলার কোষ থেকে স্নায়ুতন্তু বের হয়ে অপটিক স্নায়ুর সাথে যুক্ত থাকে।

কাজঃ এরা ওমাটিডিয়ামে সৃষ্ট প্রতিবিম্বকে মস্তিষ্ককে প্রেরণ করে ।

Content added By
Promotion