দুই বা ততোধিক তরঙ্গ যদি একই মাধ্যমের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়, তবে তরঙ্গগুলো পরস্পর নিরপেক্ষভাবে সঞ্চালিত হয়। মাধ্যমের যে অংশে তরঙ্গগুলো পরস্পরের উপর আপতিত হয়, সে অঞ্চলে কোন কণার লব্ধি সরণ কি হবে তা নির্ণয়ের নিমিত্তে একটি নীতি প্রবর্তিত হয়। এর নাম তরঙ্গের উপরিপাতন নীতি বা সূত্র। সূত্রটি হচ্ছে :
মনে করি একটি তরঙ্গ মাধ্যমের কোন কণার y1 সরণ এবং আর একটি তরঙ্গ মাধ্যমের উক্ত কণার y2 সরণ ঘটছে।
উপরিপাতন সূত্র অনুসারে কণাটির লম্বি সরণ
y = y1 + y2
এখানে, y1 ও y2 উভয়ই ধনাত্মক বা উভয়ই ঋণাত্মক কিংবা একটি ধনাত্মক এবং অপরটি ঋণাত্মক হতে পারে।
উপরিপাতন সূত্রের সাহায্যে আমরা স্থির তরঙ্গ সৃষ্টি, শব্দের ব্যতিচার ও বীট ব্যাখ্যা করতে পারি।
পুকুরে কাছাকাছি অবস্থানে দুটি ঢিল ছুড়লে যে দুটি বৃত্তাকার তরঙ্গের উৎপত্তি হয়, তাদের মধ্যে উপরিপাতন লক্ষ করা যায়। পানিতে যে বিন্দুতে দুটি তরঙ্গের চূড়া একই দিক থেকে মিলিত হয় সেখানে তরঙ্গচূড়ার উচ্চতা সর্বোচ্চ হয়। পক্ষান্তরে, যে বিন্দুতে দুটি তরঙ্গপাদ একই দিক থেকে মিলিত হয় সেখানে তরঙ্গপাদে গভীরতা সর্বাধিক হয়। আবার সে বিন্দুতে একটি তরঙ্গশীর্ষ ও একটি তরঙ্গপাদ মিলিত হয় সেখানে পানিতে আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যায়।