ট্রানজিস্টরের আবিষ্কার ইলেকট্রনিক্সের জগতে বিপ্লব এনেছে। ১৯৪৮ সালে জে. বার্ডিন ও ডব্লিউ. এইচ. ব্রাটেইন ট্রানজিস্টর আবিষ্কার করেন। এই ক্ষুদ্র সেমিকন্ডাক্টরটি তড়িত সংকেতকে বিবর্ধন করতে পারে এবং উচ্চগতি সুইচ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। ট্রানজিস্টর তাই ইলেকট্রনিক সার্কিট বা বর্তনীতে বিবর্ধক ও সুইচ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
চিত্র ১০.১৯ : n-pn এবং p-n-p ট্রানজিস্টরের সাধারণ চিত্র ও বর্তনী প্রতীক।
দুই শ্রেণির সেমিকন্ডাক্টরের (n-টাইপ ও p-টাইপ) তিনটি দিয়ে ট্রানজিস্টর তৈরি করা হয়। এতে একটি p-টাইপের কেলাসের উভয় পার্শ্বে একটি করে n-টাইপ কেলাস বা -টাইপের কেলাসের উভয় দিকে একটি করে p-টাইপ কেলাস স্যান্ডউইচ করে যথাক্রমে n-p-n বা p-n-p জংশন তৈরি করা হয়। এদেরকে যথাক্রমে n-p-n ট্রানজিস্টর ও p-n-p ট্রানজিস্টর বলা হয়।
এরকমভাবে সজ্জিত কেলাসের প্রথমটিকে নিঃসারক (emitter), মাঝেরটিকে পীঠ বা ভূমি (base) এবং অন্য পাশেরটিকে সংগ্রাহক (collector) বলা হয় (চিত্র : ১০.১৯)।
ট্রানজিস্টরের এক পাশের অংশ যা আধান সরবরাহ করে তাকে নিঃসারক বলে। নিঃসারককে পীঠের সাপেক্ষে সর্বদা সম্মুখী বায়াসে সংযোগ দেওয়া হয় (চিত্র : ১০.20 ) ।
ট্রানজিস্টরের অন্যপাশের অংশ যা আধান সংগ্রহ করে তাকে সংগ্রাহক বলে। সংগ্রাহককে সর্বদা বিমুখী বায়াসে সংযোগ দেওয়া হয় (চিত্র : ১০. ২০ ) ।
নিঃসারক ও সংগ্রাহকের মাঝের অংশকে পীঠ বা ভূমি বলা হয়। ট্রানজিস্টরের পীঠ-নিঃসারক জংশন সম্মুখী বায়াস প্রদান করা হয় যাতে করে নিঃসারক বর্তনীর রোধ কম হয়। সংগ্রাহক বর্তনীর রোধ বৃদ্ধিকল্পে পীঠ-সংগ্রাহক জংশনে বিমুখী বায়াস প্রদান করা হয়।
ট্রানজিস্টরের পীঠ নিঃসারকের তুলনায় খুবই পাতলা হয়। পক্ষান্তরে, সংগ্রাহক নিঃসারকের তুলনায় প্রশস্ত হয় চিত্র (১০:২১)। তবে আঁকার সুবিধার্থে নিঃসারক ও সংগ্রাহককে সমান আকৃতির দেখানো হয়ে থাকে (চিত্র ১০-১৯)। (১০-১৯) চিত্রে বর্তনীতে ব্যবহৃত ট্রানজিস্টরের প্রতীক দেখানো হয়েছে।