ক্লোন (clone) শব্দের অর্থ- হুবহু প্রতিরূপ। একটি কাঙ্খিত জিনের (DNA) অসংখ্য হুবহু কপি বা সংখ্যাবৃদ্ধি করার প্রক্রিয়াকে “জিন ক্লোনিং” বলে।
ব্যাকটেরিয়ার ভিতর ইউক্যারিওটিক জীবের DNA খন্ড প্রবেশ করিয়ে সেই DNA খন্ডকে এমনভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত করা হয় যাতে ব্যাকটেরিয়া সেই DNA-র প্রতিলিপি গঠন করতে পারে। বর্তমানে জীবপ্রযুক্তিতে জিন ক্লোনিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জিন ক্লোনিং কতগুলো ধাপে সম্পন্ন করা হয়, ধাপগুলো নিম্নরূপঃ
১. যে জিন বা DNA খন্ডকে ক্লোন করা হবে তাকে কয়েকটি পদ্ধতি অবলম্বন করে সংগ্রহ করা হয়। এর জন্য রেস্ট্রিকশন এনজাইম (restriction enzyme) দিয়ে DNA কে খন্ড খন্ড করে বিশেষ DNA বা RNA প্রোব (probe) দ্বারা চিহ্ণিত করা হয়।
২. উপযুক্ত ভেক্টর বা বাহকের মধ্যে নির্বাচিত DNAটি প্রবেশ করিয়ে রিকম্বিনেন্ট DNA গঠন করা হয়। এ কাজ সম্পন্ন করার জন্য রেস্টিকসন এন্ডোনিউক্লিয়েজ এবং লাইগেজ এনজাইম ব্যবহৃত হয়। অনেক রকম ভেক্টর ব্যবহার করা হয়, তবে সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার প্লাজমিড ভেক্টর হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
৩. এরপর নির্বাচিত DNA খন্ডটিসহ প্লাজমিড DNA-কে রিকম্বিনেন্ট DNA হিসেবে ব্যাকটেরিয়া বা অন্য পোষক কোষে প্রবেশ করানো হয়। প্লাজমিডকে ব্যাকটেরিয়া অথবা অন্য পোষক কোষে কয়েকটি পদ্ধতির মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয়। পদ্ধতিগুলো হচ্ছে- (ক) ট্রান্সফেকশান (transfection), (খ) ইলেকট্রোপোরেশন (electroporation) এবং(গ) লাইপোজোমের মাধ্যমে । লাইপোজোম হচ্ছে চক্রাকার লিপিড অণু। নির্বাচিত DNA সহ প্লাজমিড পোষক কোষে প্রবেশ করেছে কিনা তা বিশেষ কতগুলো রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চিহ্ণিত করা হয় ।
৪. বহিরাগত নির্বাচিত DNA-র প্রতিরূপ সৃষ্টি করা হয়। এ ধাপে বহিরাগত DNA যুক্ত প্লাজমিডসহ ব্যাকটেরিয়া উপযুক্ত পুষ্টি মাধ্যমে বংশবৃদ্ধির জন্য রাখা হয়। কয়েক দিনের মধ্যে লক্ষ লক্ষ ব্যাকটেরিয়া উৎপন্ন হওয়ার সাথে সাথে সেই সংখ্যক রিকম্বিনেন্ট প্লাজমিডের প্রতিলিপি উৎপন্ন হয়। ফলে লক্ষ লক্ষ নির্বাচিত বহির্গত DNA-র বা জিনের ক্লোন গঠিত হয় বা ক্লোনিং সম্পন্ন হয়।