'সম্বাদ কৌমুদী' পত্রিকার প্রকাশক কে ছিলেন?

Created: 1 year ago | Updated: 1 month ago
Updated: 1 month ago

বাংলার কৃষক একসময়ে সূর্য ওঠা ভোরে লাঙ্গল কাঁধে ছুটত তার ফসলের জমিতে । ফিরত অস্তগামী সূর্যকে সামনে রেখে । তার ঘরে অন্ন-বস্ত্রের প্রাচুর্য ছিল না, তবে অভাবও ছিল না । অভাব ছিল না আনন্দ-উৎসবের । বারো মাসে তেরো পার্বণ লেগেই থাকত। জারি, সারি, কীর্তন, যাত্রাপালা গানে জমে উঠত গ্রামবাংলার সন্ধ্যার আসর। কিন্তু, পনেরো শতকের শেষ দিকে ইউরোপীয় বণিক সম্প্রদায়ের আগ্রাসী আগমন ধীরে ধীরে কেড়ে নিতে থাকে বাংলার কৃষকের মুখের হাসি, তাদের আনন্দ-উৎসব । এরই চূড়ান্ত পরিণতি ঘটে ইংরেজ বণিকদের রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উত্থান ও প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ।

প্রথমে তারা ধ্বংস করেছিল গ্রামবাংলার কুটির শিল্প, তারপর তাদের নজর পড়ে এদেশের উর্বর জমির ওপর। অতিরিক্ত অর্থের লোভে ভূমি রাজস্ব আদায়ে একের পর এক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলতে থাকে । যে পরীক্ষার নিষ্ঠুর বলি হয় বাংলার কৃষক-সাধারণ মানুষ । এ কারণে বিদ্রোহ করা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না তাদের। এ বিদ্রোহের সময়কাল ছিল আঠারো শতকের শেষার্ধ থেকে উনিশ শতকের শেষার্ধ পর্যন্ত। পরবর্তী পর্যায়ে কৃষক আন্দোলন ব্যাপক রূপ নেয়।

একই সঙ্গে পাশ্চাত্যের আধুনিক চিন্তার প্রভাব পড়ে এ সমাজের শিক্ষিত মহলে । ফলে, হিন্দু সমাজে যেমন শিল্প, সাহিত্যে নবজাগরণের সূত্রপাত ঘটে, তেমনি উদ্ভব ঘটে মুক্তচিন্তা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার। শুরু হয় কুসংস্কার, গোঁড়ামি দূর করে হিন্দুধর্মের সংস্কার। মুসলমান শিক্ষিত সমাজেও সংস্কারের মাধ্যমে তাদের পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার চেষ্টা চলে।
মূলত আঠারো ও উনিশ শতক জুড়ে এই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক ও রাজনীতিতে এক নতুন ভাবধারার উন্মেষ ঘটে। এই পরিবর্তনের প্রথম সূচনা করে বাংলার কৃষক ও সাধারণ মানুষ ।

এই অধ্যায় শেষে আমরা-

  • ইংরেজ শাসনামলে বাংলায় প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রেক্ষাপট এবং এর তাৎপর্য বিশ্লেষণ করতে পারব;
  • নবজাগরণ ও সংস্কার আন্দোলনে বিশেষ ব্যক্তিবর্গের অবদান মূল্যায়ন করতে পারব;
  • ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও প্রতিরোধ আন্দোলনের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হব;
  • বিভিন্ন সংস্কারক ও সংস্কার কর্মকাণ্ড জানার মাধ্যমে মুক্তচিন্তায় অনুপ্রাণিত হব ।
Content added || updated By
Promotion