রুই মাছের হৃৎপিণ্ডে কোন অংশটি নেই? (Which part is not found in the heart of Rui fish ?)
প্রতীক প্রাণী : রুই মাছ (Labeo rohita)
বাংলাদেশের তিনটি (রুই, কাতলা ও মৃগেল) বড় কার্প জাতীয় প্রজাতির মধ্যে রুই মাছ (Labeo rohita) । স্বাদুপানির চাষযোগ্য, সুলভ, জনপ্রিয় ও প্রোটিন সমৃদ্ধ সুস্বাদু মাছ। এটি একটি দ্রুত বর্ধনশীল মাছ এবং স্বাভাবিক অবস্থায় খামারে বছরে ৩৫-৪৫ সেন্টিমিটার (১-১.৫ ফুট) লম্বা, ৭০০- ৮০০ গ্রাম ওজনবিশিষ্ট হয় । কিন্তু হালদা নদীর রুইয়ের পোনার বৃদ্ধি ২-২ কেজি পর্যন্ত বাড়ে।
বসতি (Habitat) : রুই মাছ ইন্ডিয়া (মূল ভূখন্ড), পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও মায়ানমারের নদীতন্ত্রের প্রাকৃতিক প্রজাতি। স্বাদুপানির পুকুর, নদী, হ্রদ ও মোহনায় পাওয়া যায়। বাংলাদেশে বিভিন্ন বড় নদীতে বিচরণ করে, ডিম ছাড়ার সময় প্লাবনভূমিতে প্রবেশ করে। স্বাদ, সহজ চাষপদ্ধতি ও অর্থনৈতিক গুরুত্বের কারণে ও পুষ্টি ঘাটতি মেটাতে শ্রীলংকা, নেপাল, চায়না, রাশিয়ান ফেডারেশন, জাপান, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া এবং আফ্রিকান দেশগুলোতে রুই মাছের চাষ হচ্ছে। ইন্ডিয়ান আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের মিঠাপানির নদীতেও অনুপ্রবেশিত রুইয়ের সফল চাষ হচ্ছে।
স্বভাব (Habit) : জীবনের প্রাথমিক পর্যায়ে রুইয়ের পছন্দের আহার হচ্ছে প্ল্যাংকটন জাতীয় (প্রাণিপ্ল্যাংকটন ও উদ্ভিদপ্ল্যাংকটন) জীব। আঙ্গুলী দশায় প্রাণিপ্ল্যাংকটন গ্রহণ করলেও ডেসমিড, ফাইটোফ্ল্যাজেলেট (phytoflagellate), শৈবাল রেণু (algal spore) প্রভৃতিও গ্রহণ করে । তরুণ ও পূর্ণবয়স্ক মাছ পানির মাঝ স্তরের শৈবাল ও নিমজ্জিত উদ্ভিদ বেশি গ্রহণ করে (অর্থাৎ প্রধানত শাকাশী)। পৌষ্টিকনালিতে পচনশীল জৈব পদার্থ ও বালু, কাদা প্রভৃতি দেখে তলদেশি খাদকও মনে হয় খুঁটে খাওয়ার উপযোগী নরম ঝালরযুক্ত ঠোঁট এবং মুখ-গলবিলীয় অঞ্চলে দাঁতের বদলে সব রোগ ধারাল কর্তন আল (edge) দেখে বোঝা যায় রুই মাছ নরম জলজ উদ্ভিদ আহার করে। ফুলকায় সরু চুলের মতো ফুলকা-রেকার (gill-raker) দেখে প্রমাণ পাওয়া যায় এ মাছ অতিক্ষুদ্র প্ল্যাংকটনও ছেঁকে খায় । মাছের পোনাগুলো ঝাঁক বেঁধে চলে, বয়স্ক মাছ পৃথক জীবন অতিবাহিত করে। রুই মাছ ১৪° সেলসিয়াসের নিচের তাপমাত্রায় বাঁচতে পারে না।