নিষেক প্রক্রিয়ার সময় যদি একের অধিক পুংগ্যামেট ডিম্বাণুতে প্রবেশ করে, সে ক্ষেত্রে কোন ধরনের ভ্রুণ সৃষ্টি হয়?

Created: 2 years ago | Updated: 1 year ago
Updated: 1 year ago

নিষেক (Fertilization):

শুক্রাণু নিউক্লিয়াস ও ডিম্বাণু নিউক্লিয়াসের একীভবনের মাধ্যমে ডিপ্লয়েড (2n) জাইগোট সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে নিষেক বলে নিষেক একটি জটিল প্রক্রিয়া। বিভিন্ন প্রাণিগোষ্ঠী এমনকি একই প্রজাতির বিভিন্ন সদস্যেও এ প্রক্রিয়ার বৈচিত্র্য উল্লেখযোগ্য মানবদেহে যে নিষেক ঘটে তা প্রকৃতপক্ষে সেকেন্ডারি উওসাইট ও পরিণত শুক্রাণুর নিউক্লিয়াসের একীভবন। এ প্রক্রিয়ার ধাপগুলো নিম্নরূপঃ

• স্খলিত শুক্রাণুগুলোর অ্যাক্রোসোম থেকে হায়ালুরোনিডেজ নামক এনজাইম ক্ষরিত হয়। ডিম্বাণুর চারদিকে অবস্থিত ফলিকল কোষগুলো যে সব পদার্থের সাহায্যে পরস্পর যুক্ত থাকে সে সব পদার্থকে এ এনজাইম পরিপাকের মাধ্যমে শুক্রাণুর গমন পথের সৃষ্টি করে।

• গমন পথ ধরে শুক্রাণু লেজের সাহায্যে চালিত হয়ে ডিম্বাণুর জোনা পেলুসিডার বহির্দেশে এসে পৌঁছে (সেকেন্ডারি উওসাইটের চতুর্দিক ঘিরে অবস্থিত পুরু স্তরকে জোনা পেলুসিডা বলে)। এ স্তরে অবস্থিত বিশেষ সংগ্রাহক প্রোটিনে শুক্রাণুর মস্তকঝিল্লির সংগ্রাহকগুলো বন্ধনের সৃষ্টি করে।

• বন্ধনের ফলে উদ্দীপ্ত হয়ে শুক্রাণুমস্তক আরেক ধরনের এনজাইম ক্ষরণ করে। এ এনজাইম জোনা পেলুসিডার অংশকে হজম করে একটি পথের সৃষ্টি করে। এ পথ ধরে শুক্রাণু ডিম্বাণু-ঝিল্লির বহির্তলে এসে পৌঁছায়। এর মস্তকটি ডিম্বাণুর ভিলাই-সমৃদ্ধ প্লাজমামেমব্রেনের সাথে একীভূত হয় এবং ডিম্বাণুর সাইটোপ্লাজমে প্রবেশ করে

• শুক্রাণু-মস্তক ডিম্বাণুর অভ্যন্তরে প্রবেশের সাথে সাথে ডিম্বাণুর বহির্দেশে অবস্থিত কর্টিকাল দানা (cortical বিভিন্ন granules) নামে পরিচিত লাইসোজোমগুলো এনজাইম ক্ষরণ করে । এনজাইমের প্রভাবে জোনা পেলুসিডা পুরু ও শক্ত হয়ে নিষেক ঝিল্লি (fertilization membrane) সৃষ্টি করে। ফলে আর কোনো শুক্রাণু নিষেকে অংশ নিতে পারে না । তা ছাড়া, এনজাইমের প্রভাবে জোনা পেলুসিডা শুক্রাণু-গ্রাহক প্রোটিনগুলোও নষ্ট হয়ে যায়, ফলে কোনো শুক্রাণুই আর জোনা পেলুসিডায় যুক্ত হতে পারে না।

• শুক্রাণু প্রবেশের ফলে সেকেন্ডারি উওসাইটটি উদ্দীপ্ত হয়ে দ্বিতীয় মিয়োটিক বিভাজন (মিয়োসিস-২) ঘটিয়ে পরিণত ডিম্বাণু ও দ্বিতীয় পোলার বডি সৃষ্টি করে। দ্বিতীয় পোলার বডি দ্রুত ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং শুক্রাণুর লেজ ডিম্বাণুর সাইটোপ্লাজমে মিশে যায় । এ সময় শুক্রাণু-নিউক্লিয়াসে ক্রোমাটিনগুলো ঢিলে-ঢালা হয়ে পড়ে, ফলে নিউক্লিয়াসটি স্ফীত হয় । এ পর্যায়ে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু নিউক্লিয়াসকে যথাক্রমে পুরুষ ও স্ত্রী প্রোনিউক্লিয়াই (male and female pronuclei) বলে )

• পুরুষ প্রোনিউক্লিয়াসটি ডিম্বাণুর কেন্দ্রের দিকে অগ্রসর হয়ে স্ত্রী প্রোনিউক্লিয়াসের সাথে একীভূত হলে ডিম্বাণুটি ডিপ্লয়েড জাইগোটে (n + n = 2n) পরিণত হয়।

Content added By
Promotion