পদার্থ মাত্রই অণু দিয়ে গঠিত। তাপ শক্তির একটি রূপ এবং তা পদার্থের অণুগুলোর গতির সাথে সম্পর্কিত। পদার্থের অণুগুলো সব সময়ই গতিশীল। বায়বীয় পদার্থের অণুগুলো মোটামুটি স্বাধীনভাবে কোনো বদ্ধ স্থানের মধ্যে নড়াচড়া করতে পারে। বায়বীয় পদার্থের আচরণের নিয়মগুলো পেতে যে তত্ত্ব সৃষ্টি হয়েছে সেই তত্ত্বই গ্যাসের গতিতত্ত্ব নামে পরিচিত। গতিতত্ত্বের মূল কথা হল তাপীয় উত্তেজনার ফলে গ্যাসের অণুগুলো অক্রম বা এলোমেলো (random) গতিতে গতিশীল। গ্যাসের অণুগুলোর গড় গতিশক্তি গ্যাসের পরম তাপমাত্রার সমানুপাতিক । যখন গ্যাসের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় তখন অণুগুলোর গড় গতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। যখন গ্যাস থেকে তাপ অপসারণ করা হয় তখন অণুগুলোর গড় গতিশক্তি হ্রাস পায়। সুতরাং পরমশূন্য তাপমাত্রায় গতিশক্তি শূন্য হবে। এর অর্থ পরমশূন্য তাপমাত্রায় অণুগুলো স্থির অবস্থায় থাকবে এবং কোনো গতি শক্তি থাকবে না। কিন্তু পরমশূন্য তাপমাত্রায় পৌঁছার পূর্বেই সকল গ্যাস তরল বা কঠিন অবস্থায় রূপান্তরিত হয়ে যায়। গ্যাসের নানাবিধ আচরণের সাথে যেমন গ্যাসের ব্যাপন (diffusion), অভিস্রবণ ( osmosis). স্বতঃবাষ্পীভবন (evaporation), বাষ্পচাপ, গ্যাসের প্রসারণ, ব্রাউনীয় গতি ইত্যাদির মোটামুটি ব্যাখ্যা গ্যাসের গতিতত্ত্ব থেকে পাওয়া যায়। ব্রাউনীয় গতি থেকে গতিতত্ত্বের প্রত্যক্ষ প্রমাণও পাওয়া যায় ।
যে গ্যাসের অণুগুলো যেকোনো তাপমাত্রা এবং চাপে গতিতত্ত্বের মৌলিক স্বীকার্যগুলো মেনে চলে এবং স্বীকার্য থেকে লব্ধ সূত্রানুযায়ী আচরণ করে সে গ্যাসকে আদর্শ গ্যাস বলে। প্রকৃতপক্ষে কোনো গ্যাসই আদর্শ গ্যাসের মতো আচরণ করে না এটি কেবল কল্পনা মাত্র। তবুও আমরা এ আদর্শ গ্যাসের যাবতীয় সূত্র থেকে প্রকৃত গ্যাসের আচরণ সম্পর্কে ধারণা পেতে পারি।