১। ভাষার মূল উপকরণ – বাক্য
২। ভাষার মূল উপাদান – ধ্বনি
৩। ভাষার বৃহত্তম একক – বাক্য
৪। ভাষার ক্ষুদ্রতম একক – ধ্বনি
৫। বাক্যের মৌলিক উপাদান – শব্দ
৬। বাক্যের মূল উপাদান – শব্দ
৭। বাক্যের মূল উপকরণ – শব্দ
৮। বাক্যের ক্ষুদ্রতম একক – শব্দ
মূলভাব: বিনয় এবং নম্রতা দিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা যায়। যারা অহঙ্কারকে বর্জন করতে পারে এবং বিনয়ী হতে পারে তারাই অপরের নিকট থেকে যথার্থ মর্যাদা লাভ করে এবং সুনাম ও সুযশ অর্জন করে।
সম্প্রসারিত ভাব: মানব চরিত্রের বিভিন্ন গুণাবলীর মধ্যে বিনয় একটি বিশেষ গুণ। বিনয় দ্বারাই মানুষ মানুষের মন জয় করে থাকে। বিনয় স্বর্গীয় সুষমা ছড়ায়। আর এর সাহায্যেই মানুষ সম্মানের আসনে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। অহঙ্কার মানুষের চরিত্রকে ধ্বংস করে। অহঙ্কারী মানুষ করো কাছে সমাদৃত হয় না। সমাজে অনেক ব্যক্তিকেই ধন, মান কিংবা বংশ গৌরব জাহির করতে দেখা যায়। এটা উচিত না। কারণ এ ধরনের ব্যক্তিরা কারো নিকট হতে সম্মান পায় না, বরং ঘৃণার পাত্র হয়। চরিত্রগুণে যেসব মহান ব্যক্তি পৃথিবীতে অমরতা লাভ করেছেন, তাঁদের জীবনী পর্যালোচনা করলে জানা যায়, তাঁরা সকলেই বিনয়ী ছিলেন। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুহাম্মদ (স.) বিনয় দ্বারাই মানুষের মন জয় করেছিলেন। বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, হাজী মহম্মদ মুহসীন প্রমুখ মনীষী বিনয়ের এক একটি শ্রেষ্ঠ মূর্ত প্রতীক। বিনয় দ্বারাই তাঁরা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অকৃত্রিম ভালোবাসা লাভ করেছিলেন। জগতের মানুষ তাইতো এখনো তাঁদেরকে পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে থাকে। একথা সত্য যে সাধারণ মানুষের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে কেউ বড় হতে পারেনি। পরম প্রতাপশালী অহঙ্কারী রাজা-বাদশারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। পৃথিবীর মানুষ ঘৃণাভরে তাঁদের নাম উচ্চারণ করে থাকে।
সম্মান পেতে হলে অপরকে সম্মান করতে হবে। অপরকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের সাথে বিবেচনা করা অর্থ নিজের বড় পথকে রুদ্ধ করা।
সংসদ কর্তৃক গৃহীত কোনো বিলে তিনি সম্মতি দান করলে বিলটি আইনে পরিণত হয়। রাষ্ট্রপতির সম্মতি ছাড়া কোনো অর্থ বিল সংসদে উত্থাপন করা যায় না।
বচন অর্থ সংখ্যার ধারণা । যা দ্বারা সংখ্যা বুঝায় , তাকে বচন বলে । বচন দু " প্রকার । যথা- একবচন (Singular Number) ও বহুবচন (Plural Number)।
একবচন:- যে বচন দ্বারা একটি মাত্র ব্যক্তি , প্রাণী বা বস্তুকে বুঝায় , তাকে একবচন বলে । যেমন — একটি গরু । একজন ছাত্র । একটি টাকা ।
( ক ) সাধারণত ' এক ’ শব্দ যােগে একবচন নির্দেশ করা হয় । তবে এর সাথে টি , টা , খানা , খানি , থান , গাছি ইত্যাদি প্রত্যয় যােগ করেও একবচন নির্দেশ করা হয় । যেমন একটি কলম । কলমটি । বইখানা । গামছাখানা । চুড়িগাছি ইত্যাদি । আবার শব্দের মূল রূপটি দ্বারাও একবচন বুঝায় । যেমন — গরু , মানুষ , ফল , ফুল ইত্যাদি ।
( খ ) এক বচনে বিভক্তি যােগেও এক বচন বুঝানাে হয় । যেমন – ভাইকে , পিতাকে , মাতাকে ইত্যাদি।
বহুবচন:- যে বচন দ্বারা একের অধিক ব্যক্তি বা বস্তুকে বুঝায় , তাকে বহুবচন বলে । যেমন — দু'জন বালক , দশটি গরু , শিশুরা , ছাত্রগণ , বইগুলাে , বৃক্ষরাজি , শিক্ষকবৃন্দ , সম্পাদকমণ্ডলী ইত্যাদি ।
( ১ ) একবচন শব্দের সঙ্গে রা , এরা , গুলাে , গুলি , গণ , বৃন্দ , দিগকে , দেরকে ইত্যাদি বিভক্তি যুক্ত করলে বহুবচন বুঝায় । যেমন-
রা- ছাত্ররা , ধনীরা , গরীবেরা , পাখীরা ইত্যাদি ।
এরা- মানুষেরা , মায়েরা , ঝিয়েরা , বড়লােকেরা ইত্যাদি ।
গুলি- প্রাণীবাচক ও অপ্রাণীবাচক শব্দের বহুবচনে ব্যবহৃত হয় । যেমন- লােকগুলি , আমগুলি , টাকাগুলি ।
বিশেষ দ্রষ্টব্য- ‘গুলাে' চলতি ভাষায় ব্যবহৃত হয় । যেমন- টাকাগুলাে দিয়ে দাও । মাছগুলাে নিয়ে এস । বইগুলাে আন।
গণ- শিশুগণ , জনগণ , দেবগণ , নর - নারীগণ ইত্যাদি ।
বৃন্দ- শিক্ষকবৃন্দ , ভক্তবৃন্দ , সুধীবৃন্দ , অতিথিবৃন্দ ইত্যাদি ।
মণ্ডলী- শিক্ষকমণ্ডলী, সম্পাদকমণ্ডলী , অভিভাবকমণ্ডলী ইত্যাদি ।
বর্গ- ছাত্রবর্গ , পণ্ডিতবর্গ , প্রজাাবর্গ , রাজন্যবর্গ ইত্যাদি ।
কুল- পক্ষিকুল , মাতৃকুল , কবিকুল , কৃষককুল ইত্যাদি ।
সকল- মনুষ্য সকল , পর্বত সকল , লােক সকল ইত্যাদি ।
নিচয়- পৰ্বত নিচা কুসুম নিচয় , বৃক্ষ নিচয়া ইত্যাদি ।
সব- ভাইসব , পাখীসব , নথিস ইত্যাদি ।
সমূহ- বৃক্ষসমূহ , পর্বতসমূহ , নদীসমূহ , গ্রামসমূহ ইত্যাদি ।
মহল- ছাত্রমহল , রাজনৈতিকমহল , বুদ্ধিজীবীমহল , সাহিত্যিকমহল ইত্যাদি ।
মালা - পর্বতমালা , তরঙ্গমালা ইত্যাদি ।
রাজি - বৃক্ষরাজি , তারকারাজি ইত্যাদি ।
পুঞ্জ – মেঘপুঞ্জ , নক্ষত্রপুঞ্জ , দ্বীপপুঞ্জ ইত্যাদি ।
গুচ্ছ - কবিতাগুচ্ছ , ফুলগুচ্ছ , গল্পগুচ্ছ ইত্যাদি ।
দাম - কেশদাম , শৈবালদাম ইত্যাদি ।
রাশি - বালুকারাশি , আবর্জনারাশি ইত্যাদি ।
বলী - পুস্তকাবলী , গুণাবলী , রত্নাবলী ইত্যাদি ।
বিঃ দ্রঃ – পাল ও যুথ কেবল জন্তুর বহুবচনে ব্যবহৃত হয় । যেমন- গরুরপাল , হস্তিযুথ ইত্যাদি ।
যেমন — রাখাল গরুরপাল নিয়ে যাচ্ছে । হস্তিযুথ ফসল নষ্ট করেছে ।
( ২ ) একবচন শব্দের পূর্বে বহুত্ববােধক শব্দ বসিয়ে বহুবচন করা যায় । যেমন — বহু লােক , অনেক ছাত্র , বিস্তর টাকা , নানা কথা , অসংখ্য বাড়ী , অজস্র মানুষ , ঢের খরচ ।
( ৩ ) শব্দের পূর্বে একই বিশেষণ দু'বার ব্যবহার করে বহুবচন করা হয় । যেমন - বড় বড় গাছ , কচি কচি পাতা , লাল লাল ফুল , সাদা সাদা মেঘ , উঁচু উঁচু পাহাড় , কাড়ি কাড়ি লাউ ।
( ৪ ) সংখ্যাবাচক বিশেষণ যােগ করেও বহুবচন গঠন করা যায় । যেমন — দশটি আম , পাঁচশত টাকা , এক হাজার লােক , পনর কেজি চাউল ।
( ৫ ) সর্বনাম পদ দু'বার ব্যবহার করে বহুবচন করা যায় । যেমন – কি কি বই , যে যে বালক , যেখানে যেখানে দরকার , সেই সেই দোকান ইত্যাদি ।
( ৬ ) বিশেষ্য পদ দু’বার ব্যবহার করেও বহুবচন গঠন করা হয় । যেমন- মাঠে মাঠে ধান , ঝাঁকে ঝাঁকে পাখী , ঘরে ঘরে উৎসৰ , চুলে চুলে মারামারি ইত্যাদি ।
( ৭ ) ক্রিয়াপদের দু’বার প্রয়ােগেও বহুবচন হয় । যেমন— খেটে খেটে মরছি । বলে বলে হানা হলাম ।
( ৮ ) বিশেষ্য পদে একবচনে ব্যবহারেও অনেক সময় বহুবচন বুঝায় । যেমন — বাঘ বনে থাকে । ( একবচন ও বহুবচন দুই - ই বুঝাচ্ছে ) । মাছের বাজারে লােক জমেছে ( বহু লোক ) । বাগানে ফুল ফুটেছে ( বহু ফুল ) ।
বিশেষ দ্রষ্টব্য– একই সাথে দু'বার বহুবচনবাচক প্রত্যায় বা শব্দের ব্যবহার অশুদ্ধ।যেমন
অশুদ্ধ — সব শিক্ষকেরাই উপস্থিত ছিলেন ।
শুদ্ধ — সব শিক্ষকই উপস্থিত ছিলেন ।
অশুদ্ধ - সব মানুষেরাই মরণশীল ।
শুদ্ধ — সব মানুষ মরণশীল , অথবা মানুষ মরণশীল , অথবা মানুষেরা মরণশীল ।
এইরূপে , এখানে যাবতীয় দ্রব্যসমূহ পাওয়া যায় । এই বাক্য অশুদ্ধ , কিন্তু এখানে যাবতীয় দ্রব্য পাওয়া যায় । এটা শুদ্ধ বাক্য । কেননা যাবতীয় ও সমূহ উভয়ই বহুবচনবাচক শব্দ । তদ্রুপ , অন্যান্য পণ্ডিত ব্যক্তিগণ এ মত পােষণ করেন - এটা ভুল , কিন্তু অন্যান্য পণ্ডিত ব্যক্তি এ মত পােষণ করেন- এটা শুদ্ধ ।
Optical storage devices use low beam laser to write retrieve data, so there is fragmentation in an optical disk it will be hard for laser to read and write data.
বর্তমানে এমন একটি সময়ে আমরা আছি, যখন শিক্ষা ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব কিছু ধারণা উদঘাটিত হচ্ছে, নতুন-নতুন কৌশল তৈরী হচ্ছে। এসবই হচ্ছে তথ্য-প্রযুক্তির প্রসারের ফলে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রান্তিক অঞ্চল পর্যন্ত ডিজিটাল শিক্ষা পৌঁছে দেওয়া এখন সহজ সাধ্য। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার নতুন ধরনের অভিজ্ঞতা প্রদান করাও এখন সম্ভব। গতানুগতিক শিক্ষা ব্যবস্থায় যে আমূল পরিবর্তন আসছে, তা এখন আর অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। এটি সম্ভব হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তির সহজলভ্যতার কারণে। ইন্টারনেট এখন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর জন্য বিশ্বকে অবারিত করে দিয়েছে। যে যেখানে আছে, সেখান থেকেই পৃথিবীর যেকোনো উৎস থেকে শিক্ষামূলক তথ্য আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে।
ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থাঃ ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থা বলতে পাঠদান ও পাঠগ্রহণ প্রক্রিয়ায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারকে বোঝায়। শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করণে শিক্ষায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিহার্য। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণের পাশাপাশি শ্রেণীকক্ষে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, ল্যাপটপ, ইন্টারনেট মডেম ও স্পীকারের সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বর্তমানে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ইন্টারনেটের মাধ্যমে বর্তমানে অনলাইনে ভর্তি আবেদন, শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র, প্রশংসাপত্র, ডিজিটাল আইডিকার্ড, ছাড়পত্র প্রিন্ট, পরীক্ষার ফলাফল তৈরী ও অনলাইনে ডাউনলোড, গ্রেডিং সিস্টেমের ফলাফল প্রকাশ, শিক্ষক- শিক্ষার্থীর অনলাইন হাজিরা ব্যবস্থাপনা, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টিউশন ফি প্রদান, সিসি ক্যামেরার সাহায্যে নজরদারীসহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম সম্পাদিত হচ্ছে।
ডিজিটাল শিক্ষা ও বাংলাদেশঃ এক দশকে শিক্ষাব্যবস্থার প্রযুক্তির সমন্বয় ও ব্যবহার ছিল যুগান্তকারী একটি পদক্ষেপ । শ্রেণিকক্ষের অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ ও আরো ফলপ্রসু করার জন্য বিশেষায়িত সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার ব্যবহার শুরু হয়। মাল্টিমিডিয়ায় কিভাবে শিক্ষাদান করা যায়, সেই ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়া হয় সবচেয়ে বেশী। শিক্ষকেরা মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর এবং ভিডিওর সমন্বয়ে শেখানো শুরু করেন। এখন এটাই ছিলো আধুনিক শিক্ষাপদ্ধতি। এই পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে শিক্ষকেরা আরো বেশী কার্যকর শিক্ষাদান করতে সমর্থ হন এবং স্কুল-কলেজগুলোর শিক্ষাকার্যক্রমও ফলপ্রদ হতে থাকে। কর্মক্ষমতা ব্যবস্থাপনা ও ট্র্যাকিং সিস্টেম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি পরিচালনা সহজ হয়ে পড়ে। এ ধরনের সিস্টেম ব্যবহারকারী ক্লাসরুমকে স্মার্ট ক্লাসেস বলা হয়। প্রযুক্তির আধুনিকায়নের ফলে এই স্মার্ট ক্লাসরুম অনেক দূর এগিয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। রেকর্ডকৃত ক্লাসের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা নিজের সময়-সুযোগমতো নিজের অবস্থানে থেকেই এই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। রেকর্ডকৃত ক্লাসের সাথে সাথে অনলাইন লাইভ ক্লাসেরও প্রসার শুরু হয়েছে।
ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণঃ ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী উভয়েরই কিছু ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণের প্রয়োজন হয় । প্রয়োজনীয় কিছু ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণ হলোঃ মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, ডিজিটাল কন্টেন্ট, ই-বুক, ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা, প্রয়োজনীয় ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম, ইন্টারনেট পরিচালনায় দক্ষতা, মোবাইল/ল্যাপটপ, দ্রুতগতির ইন্টারনেট, বায়োমেট্রিক স্ক্যানার, সিসি ক্যামেরা, মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট মডেম, স্পীকার ইত্যাদি ।
মাল্টিমিডিয়া ক্লাসঃ কোন বিষয়কে উপস্থাপনের জন্য টেক্সট, অ্যানিমেশন, অডিও এবং ভিডিও এর সমন্বিত রূপকে মাল্টিমিডিয়া বলে। আর এসবকিছু ব্যবহার করে যখন শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়, তখন তাকে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস বলে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নিতে হলে শ্রেণিকক্ষে বিদ্যুৎ, ল্যাপটপ, প্রজেক্টর, একটি সাদা স্ক্রীন ও স্পীকার থাকা আবশ্যক। একটি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসে ৩০ থেকে ২০টি স্লাইডই যথেষ্ট। শিক্ষার ডিজিটালাইজেশনে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসের বিকল্প নেই। মাল্টিমিডিয়া ক্লাস পরিচালনার জন্য আইসিটি বিষয়ে শিক্ষকের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। ২০১৩ সালের ২১ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম উদ্বোধন করেছিলেন। ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি তিনি বলেছিলেন যে, তিনি এদেশের ছাত্রছাত্রীদের ল্যাপটপ নিয়ে স্কুলে যেতে দেখতে চান।
দূরশিক্ষণ কার্যক্রমঃ বর্তমানে বিভিন্ন ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এবং এই বিষয়টি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত পাঠদান কার্যক্রমে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্থান থেকে একযোগে ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারেন। এই ধরনের অনলাইন ক্লাসে একই সাথে অনেক শিক্ষার্থী ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারেন। এই ধরনের অনলাইন ক্লাসের পাশাপাশি রেকর্ডকৃত ক্লাসের জনপ্রিয়তাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা নিজের সময়-সুযোগমতো নিজের অবস্থানে থেকেই এই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। বর্তমানে অনলাইন লাইভ ক্লাসেরও প্রসার শুরু হয়েছে। গুগল ক্লাসরুম, জুম মিটিং বা অন্যান্য অনেক কোলাবোরেশন সফটওয়্যারের মাধ্যমে শিক্ষক একাধিক শিক্ষার্থীদের সাথে ইন্টারেকটিভ ক্লাস নিতে পারেন। এডুটেনমেন্ট বা গেমিফিকেশনের মাধ্যমে অনলাইন ক্লাসও এখন দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা খেলার ছলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শিখতে পারে।
আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও মেশিন লার্নিংঃ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও মেশিন লার্নিং ব্যবহার করে এখন অনলাইন শিক্ষাকে আরও ব্যক্তিবিশেষে স্বতন্ত্র করা যাচ্ছে। অর্থাৎ যে শিক্ষার্থীর যেমন প্রয়োজন বা যতটা প্রয়োজন ঠিক ততটা তাকে শিক্ষাদান করা হচ্ছে। এরফলে একজন শিক্ষার্থী নিজ গতিতে শিখতে পারবে। আমাদের দেশের সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থার ব্যর্থতার প্রধান কারণ হচ্ছে এই স্বতন্ত্র শিক্ষাদানের অভাব। যখন একটা সাধারণ ক্লাসরুমে একজন শিক্ষকের কাছে পঞ্চাশ জন ছাত্র থাকে, তখন প্রত্যেক ছাত্রকে আলাদাভাবে দেখার সুযোগ থাকেনা। এই ঢালাও শিক্ষার কারণই বেশিরভাগ শিক্ষার্থী উপযুক্ত শিক্ষাটি গ্রহণ করতে পারে না। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স আর মেশিন লার্নিং শিক্ষার্থীদের যথোপযুক্ত শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারে।
শহর ও গ্রামের শিক্ষাব্যবস্থার পার্থক্য দূরীকরণঃ শিক্ষাব্যবস্থায় ডিজিটালাইজেশনের ফলে শহরের স্কুলের ডিজিটাল কন্টেন্ট গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী আবার গ্রামের কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কনটেন্ট শহরের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করতে পারেন। এভাবে দ্রুতগতিতে শহর ও গ্রামের শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে বিদ্যমান পার্থক্য দূরীভূত হচ্ছে। ইন্টারনেট সার্চ করে বিভিন্ন দেশের শিক্ষণ-শেখানো উপকরণ ডাউনলোড করে নিজ সংস্কৃতি, বিষয় ও শ্রেণী উপযোগী কনটেন্ট তৈরী করার মাধ্যমে শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা ও জ্ঞান বৃদ্ধি পেয়েছে।
ডিজিটাল শিক্ষার ইতিবাচক দিকঃ
ক. শিক্ষার্থী পর্যায়ে:
১. অডিও/ভিডিও সমৃদ্ধ কনটেন্টের সহায়তায় পাঠ উপস্থাপনের ফলে প্রত্যেকটি ক্লাস শিক্ষার্থীদের কাছে আকর্ষণীয় হয় যাতে করে শিক্ষার্থীরা পাঠে অধিকতর মনোযোগী হচ্ছে।
২. শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিভীতি কমে যাচ্ছে।
৩. সহজবোধ্য কনটেন্টের সহায়তায় শিক্ষার্থীরা অল্প সময়েই পাঠ আয়ত্ত করতে পারছে।
8. স্বল্প সময়েই শিক্ষার্থীদের বর্ণ ও শব্দের সঠিক উচ্চারণ এবং শুদ্ধ ভাষায় কথা বলানো, শেখানো যায়।
৫. শিক্ষার্থীদের মাঝে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বৃদ্ধি পায় ।
৬. সমভাবে ও অল্পসময়ে পাঠ সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে যায়।
৭. শিক্ষার্থীরা নিজেদের মূল্যায়ন নিজেরাই করতে পারে।
৮. শিক্ষার্থীরা ভিশনারী হচ্ছে।
৯. সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা অধিকতর মানসম্মত শিক্ষালাভের সুযোগ পাচ্ছে।
১০. সাধারণ শিক্ষার্থীরাও অল্পসময়ে জড়তাহীনভাবে পাঠ গ্রহণে মনোযোগী হচ্ছে।
১১. সকল কারিকুলাম সহজে বহনযোগ্য।
১২. শ্রেণী উপযোগী প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত কনটেন্ট সংগ্রহে রাখা যাচ্ছে।
খ. শিক্ষক পর্যায়েঃ
১. শিক্ষক সহজেই বিষয়বস্তু সকল শিক্ষার্থীর নিকট সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারেন।
২. শিক্ষার্থীর মাঝে প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি করতে পারেন।
৩. সমানভাবে ও অল্পসময়ে পাঠ শিক্ষার্থীর মাঝে পৌঁছানো যায়।
৪. মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট শিক্ষকের সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
৫. অল্প সময়ে সকল শিক্ষার্থীকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা যায়।
৬. শিক্ষক শ্রেণী উপযোগী কনটেন্ট তৈরী করতে পারেন।
৭. সহজেই ক্লাসের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারেন।
৮. নিত্যনতুন আপডেট বিষয়সমূহ সহজেই সংগ্রহ করতে পারেন।
৯. শিক্ষক প্রতিনিয়ত নিজেকে প্রশিক্ষিত করার সুযোগ পান।
১০. ই-বুক ও ই-কন্টেন্ট ব্যবহারে শিক্ষকদের পারদর্শিতা বৃদ্ধি পায়।
ডিজিটাল শিক্ষায় চ্যালেঞ্জঃ ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থাপনার ইতিবাচক দিকের পাশাপাশি এই শিক্ষা ব্যবস্থায়নে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। যেমনঃ সার্বিক কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন ব্যয়বহুল: ডিজিটাল ক্লাস উপযোগী দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শিক্ষকের সট: ডিজিটাল শিক্ষা বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন না থাকা সমস্যার তৈরী করে: প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা কার্যক্রমে অভিভাবক পর্যায়ে সঠিক ধারণার অস্পষ্ঠতা রয়েছে: শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সকল মহলে স্বচ্ছ ধারণা ও দক্ষতার অভাব রয়েছে: উপকরণ ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণে নষ্ট হবার ঝুঁকি থাকে; নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার অভাব, শিক্ষার্থীদের পারিবারিক পর্যায় থেকে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে যথাযথ সহযোগিতা করা হয় না; ডিজিটাল ক্লাস বাস্তবায়নে অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার অপর্যাপ্ততা রয়েছে; সার্বিক বিবেচনায় ডিজিটাল ক্লাস বান্ধব প্রশাসনিক পরিবেশ গড়ে ওঠেনি।
চ্যালেঞ্জ দূরীকরণে করণীয়ঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়টি শিশুশ্রেণী থেকে বাধ্যতামূলক করতে হবে; প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একটি করে কম্পিউটার হিসেবে কম্পিউটার ল্যাব গড়ে তুলতে হবে; প্রতিটি ক্লাসরুমকে ডিজিটাল ক্লাসরুম বানাতে হবে; সকল শিক্ষককে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদানে প্রশিক্ষণ দিতে হবে; সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের তাদের হাতের ডিজিটাল ডিভাইস দিয়ে ইন্টারনেটে যুক্ত থাকতে হবে। উপসংহারঃ ডিজিটাল দুনিয়ার শেষ সীমা বলে কিছুই নেই। এখানে সর্বদা নতুন চিন্তা, উদ্ভাবন ও সম্পাদন চক্র চলমান থাকে । অনলাইনভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা দ্বারাই আমাদের মতো চিরাচরিত সমাজকে প্রবুদ্ধ করা সম্ভব। তাই বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থার প্রয়োগ ও প্রয়োজনীয়তা আমরা বিশেষভাবে উপলব্ধি করতে পারছি।
ব্যাখাঃ এখানে বানানের নিয়ম অনুযায়ী শুদ্ধ বানান "আদ্যক্ষর"
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সংবাদ পাঠিকাকে দিয়ে সংবাদ উপস্থাপন করতে যাচ্ছে দেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানলে ‘চ্যানেল 24’। যার নাম রাখা হয়েছে অপরাজিতা। অপরাজিতাই হবেন দেশের প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সংবাদ উপস্থাপক। যেখানে তিনি সংবাদ ও অনুষ্ঠান নিয়ে যুক্ত হবেন। বুধবার (১৯ জুলাই) চ্যানেল 24 এর সন্ধ্যার ৭টার বুলেটিনে যুক্ত হয়েছেন অপরাজিতা।
ধ্বনি ভাষার মূল উপাদান।
ধ্বনির সাহায্যে ভাষার সৃষ্টি হয় কিন্তু ভাষার মূল উপকরণ বাক্য এবং বাক্যের মৌলিক উপাদান শব্দ।
বাক্যের ক্ষুদ্রতম অংশকে শব্দ বলে।