আমরা জানি, পরিবাহীর যে ধর্মের জন্য এর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ বিঘ্নিত হয় তাকে রোধ বলে। কোনো পরিবাহীর রোধ তার দৈর্ঘ্য, প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল, উপাদান ও তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে। পরিবাহীর রোধ তার দৈর্ঘ্যের সমানুপাতিক, প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলের ব্যস্তানুপাতিক, উপাদানের আপেক্ষিক রোধের সমানুপাতিক। তাপমাত্রা বাড়লে পরিবাহীর রোধ বাড়ে, কিন্তু রোধ তাপমাত্রার সমানুপাতিক নয়। পরিবাহীর মধ্যে মুক্ত ইলেকট্রনের প্রবাহের ফলে তড়িৎ প্রবাহ সৃষ্টি হয়। মুক্ত ইলেকট্রন প্রবাহের সময় পরিবাহীর অণু পরমাণুর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, যার কারণে পরিবাহীতে রোধের উদ্ভব হয়। তাপমাত্রা বাড়লে অতিরিক্ত শক্তি পাওয়ায় পরিবাহীর অণু পরমাণুগুলোর কম্পন বেড়ে যায়, ফলে মুক্ত ইলেকট্রনগুলোর সাথে এদের সংঘর্ষ বৃদ্ধি পায় এবং প্রবাহ চলার পথে বেশি বাধার সৃষ্টি হয়—এতে করে পরিবাহীর রোধ বৃদ্ধি পায়। রোধের উষ্ণতা সহগ তাপমাত্রার সাথে রোধের সম্পর্ক স্থাপন করে।
0°C তাপমাত্রায় কোনো পরিবাহীর রোধ Ro, এবং তাপমাত্রায় রোধ হলে রোধের উষ্ণতা সহগ,
… (3.1)
বিভিন্ন পদার্থের রোধের উষ্ণতা সহগ বিভিন্ন হয়।
রোধের উষ্ণতা সহগের একক হলো প্রতি কেলভিন (K-1) বা প্রতি ডিগ্রি সেলসিয়াস (°C-1)। ম্যাঙ্গানিনের রোধের উষ্ণতা সহগ 3 x 10-5 K- বলতে বোঝায় যে 0°C তাপমাত্রার রোধবিশিষ্ট ম্যাঙ্গানিনের তারের তাপমাত্রা 1K বাড়ালে এর রোধ 3 x 10-5 বৃদ্ধি পায়।
যে সকল পরিবাহীর উষ্ণতা সহগ ধনাত্মক তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে তাদের রোধ বৃদ্ধি পায়। অর্ধপরিবাহীর ক্ষেত্রে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে রোধ হ্রাস পায়। অর্ধপরিবাহীর ক্ষেত্রে দেখা যায়, এদের উষ্ণতা সহগের মান ঋণাত্মক। অতি নিম্ন তাপমাত্রায় কিছু কিছু পদার্থের রোধ শূন্যে নেমে আসে। এ সকল পদার্থকে অতি পরিবাহী বা Super Conductor বলে। পদার্থের এ ধর্মকে অতিপরিবাহিতা বলে।