যে কোনো একটি বিষয়ে প্রবন্ধ রচনা করুনঃ

বই পড়ার আনন্দ (প্রবন্ধ রচনা করুন)

Created: 1 year ago | Updated: 1 year ago
Updated: 1 year ago

বই পড়ার আনন্দ

ভূমিকাঃ “বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি ।

বিশাল বিশ্বের আয়োজন 

মোর মন জুড়ে থাকে অতি ক্ষুদ্রতারই এক কোণে 

সেই ক্ষোভে পড়ি গ্রন্থ ভ্রমণ বৃত্তান্ত আছে যাহে 

অক্ষয় উৎসাহে”

বই মানুষের বিশ্বস্ত বন্ধু। সামাজিক জীব হিসেবে মানুষ অন্যের সাহচর্য পাওয়ার পাশাপাশি বইকেও বন্ধু হিসেবে বেছে কে নিয়েছে। বইয়ের সাথে গড়ে তুলেছে আত্মিক সম্পর্ক। মানুষের হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনার অনুভূতি ধারণ করে বই অতীত বর্তমান ও অনাগত ভবিষ্যতের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করে। আর এজন্যই বই পড়ে আমাদের মন লাভ করে পরম প্রশান্তি ।

বই পাঠের প্রয়োজনীয়তাঃ মানব জীবনে বই এর প্রয়োজনীয়তার কথা বলতে গিয়ে বিশ্ববিখ্যাত ঔপন্যাসিক লিয় টলস্টয় বলেন: “Three things are essential for life and those are books, books and books”. বই মানুষকে একই সাথে আনন্দ ও জ্ঞান দান করে। যুগে যুগে পৃথিবীতে মহা মানুষের আবির্ভাব ঘটেছে। তাঁরা মানুষকে শুনিয়েছেন আত্মার মুক্তির কথা। হোমার, ভার্জিল, শেক্সপিয়ার, দান্তে, কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, এরিস্টটল, প্লেটো, জীবনানন্দ দাস, প্রমথ চৌধুরী সহ বিশ্ব বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। কিন্তু তারা রেখে গেছেন তাঁদের মহামূল্যবান বই। এসব বই পড়ে আমরা তাঁদের সান্নিধ্য লাভ করতে পারি। তাঁদের উপস্থিতি উপলব্ধি করতে পারি। তাদের দর্শন, জ্ঞান লাভ করতে পারি, তাঁদের জীবন দর্শন সম্পর্কে জানতে পারি। তাঁরা আমাদের ছেড়ে চলে গেলেও বই তাঁদের সাথে আমাদের সম্পর্ক তৈরী করছে। মানুষের জ্ঞানভান্ডারকে সমৃদ্ধ করার জন্য এবং আনন্দের অফুরন্ত উৎসের জন্য বই পাঠের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। স্পিনোজার মতে 'ভাল খাদ্য বস্তু পেটভরে কিন্তু ভাল বই মানুষের আত্মাকে পরিতৃপ্ত করে'।

আনন্দের উৎস বইঃ বই পাঠে মানুষের কোমল মনে জন্ম দেয় আনন্দ, বেদনা, বিস্ময়, ভীতি, সহানুভূতি, প্রেম-ভালবাসা মায়া-মমতা, ভক্তি ইত্যাদি সুকুমার বৃত্তি। বই পাঠ করার মাধ্যমে মানুষের মনে জাগে এক অপূর্ব শিহরণ। বই পাঠ করে মানুষ এ পৃথিবীর বিশালত্ব অনুভব করতে পারে, অজানাকে জানতে পারে। বই পাঠের মাধ্যমে মানুষ সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের সন্ধান পায়। বই মানুষের মনে নতুন প্রেরণা ও উৎসাহের জন্ম দেয়। সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা সর্বাবস্থায় বই আমাদের পাশে থাকে। বই কখনো পুরানো হয় না ।

বই মানুষের হৃদয়ে আনন্দের এক অফুরন্ত উৎস। বই বিচিত্র বিষয় নিয়ে রচিত, যা মানুষের মনকে আনন্দে ভরিয়ে তুলে। বই পাঠের মাধ্যমে মানুষ তার হৃদয় ও মনকে আনন্দে ভরিয়ে তোলে। বই আনন্দ দানের পাশাপাশি সভ্যতার বাহক হিসেবে কাজ করে। বই পাঠ করার মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন সভ্যতা সম্পর্কে জানতে পারি। বই বিভিন্ন অজানাকে আমাদের জানতে সাহায্য করে । বই আমাদের নিয়ে যায় কল্পনার রাজ্যে । বই পাঠের মাধ্যমে আমরা কল্পনার জানা-অজানা রাজ্যে ভ্রমণ করতে পারি।

বই নির্বাচনঃ বই জ্ঞানের বাহন হলেও বই নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদেরকে খুবই সতর্ক হতে হবে। বাজারে আজ অশ্লীল ও নিম্নমানের বইয়ে সব জায়গায় সয়লাব হয়ে গেছে। এসকল বই আমাদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। আর বই পড়ার প্রকৃত আনন্দ কেবল মাত্র ভালো বই থেকেই পাওয়া যায়। তাই চরিত্র গঠন ও জ্ঞান অন্বেষনের জন্য আমাদের ভালো বই পাঠ করতে হবে।

সমাপনীঃ বই পাঠে মানুষ আনন্দ লাভ করে থাকে। বইয়ের জন্মলগ্ন থেকে আনন্দ লাভের জন্য মানুষকে অধ্যাবসায়ী হতে হবে। উৎকৃষ্ট বই মানুষকে প্রকৃত আনন্দ দান করে। তাই ভালো বই বেশি বেশি পাঠ করতে হবে।

1 year ago

বাংলা

Please, contribute to add content.
Content
Promotion