খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জুয়েল চৌধুরী। তিনি কখনও বাংলাদেশি কারও সাথে কথা বলতে অথবা ইন্টারনেট যোগাযোগ করতে ইংরেজি কিংবা অন্য ভাষা ব্যবহার করেন না। তার কথা হলো, যে ভাষার জন্য আমার ভাই রক্ত দিয়েছে, সে ভাষার মর্যাদা আমরা নষ্ট করব না।
রিতা ও মিতা দুই বোন। রিতা থাকে বাংলাদেশে আর মিতা কানাডায়। মিতা রিতাকে ইংরেজিতে চিঠি লিখলে রিতার খুব রাগ হয় বোনের ওপর। তার যুক্তি হলো মিতা জানে বাবা প্রাণ দিয়েছিল মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার রক্ষার আন্দোলনে। তাহলে মিতা কী করে ইংরেজি কিংবা অন্যকোনো বিদেশি ভাষায় কথা বা চিঠি লেখার আগ্রহ প্রকাশ করে।
১৯৪৭ সালে একটি দেশ স্বাধীনতা লাভ করে। এরপর গণতান্ত্রিক ধারায় কিছু দিন দেশটি শাসিত হলেও প্রধান দলটি দেশের শাসকশ্রেণির ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত হয়। পরবর্তীতে শাসকদের বিরুদ্ধে একটি দলের নেতৃত্বে একটি নির্বাচনে কয়েকটি দল জোট গঠন করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং জয়লাভ করে।
যাট-এর দশকে পাকিস্তানে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ঐ নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন সরকার বিরোধী প্রধান দল এবং জোটের নেতৃত্বদানকারী দলের নেতা আমজাদ মল্লিক। আমজাদ মল্লিকের দল ঐ নির্বাচনে মুসলিম আসন ২৩৭টির মধ্যে ১৪৩টি জয়লাভ করে।
যুগোস্লাভিয়ার বসনিয়া বহুকাল থেকেই মুসলিম প্রধান অঞ্চল। কিন্তু একই অঞ্চলের খ্রিস্টান আধিপত্যের কারণে মুসলমানরা খ্রিস্টান প্রশাসন দ্বারা নির্যাতিত ও শোষিত হতে থাকে। ফলে মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা অর্জনে সচেষ্ট হয়। খ্রিষ্টানরা তাদের দমন করতে গণহত্যা চালায়।
একটি দেশের দুটি প্রদেশ 'হামান' ও 'সামান'। সামান প্রদেশের জনসংখ্যা বেশি হলেও হামান প্রদেশ বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করত। হামান প্রদেশের মানুষ শাসন ক্ষমতায় থাকায় তারা সামান প্রদেশকে বিভিন্নভাবে শোষণ করত।
তানহা ও মারুফ দুই বন্ধু। বসবাস করে একই দেশের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে। তানহা পূর্বাঞ্চলের শোষিত-নির্যাতিত নাগরিক। মারুফের অঞ্চলের হাতে তানহার অঞ্চলের ব্যবসায় বাণিজ্য নিয়ন্ত্রিত হয়। তানহারা পণ্য উৎপাদন করে কিন্তু ভোগ করতে পারে না।
পাকিস্তান যখন আলাদা দুটি দেশ হলো তখন বড়ই স্বপ্ন ছিল একদিন নিজ দেশে ভালো চাকরি করব। ভালো স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্তানদের লেখাপড়া করাব কিন্তু তা আর হলো না। দেখা গেল পশ্চিম পাকিস্তানেই ব্যাংক, বিমা, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, সামরিক, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদরদপ্তর সবকিছুর প্রধান কেন্দ্র পশ্চিম পাকিস্তানে। পূর্ব পাকিস্তানে শুধু কাদার রাস্তা আর কৃষি জমি। কথাগুলো বললেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াছ আলী।
পাট উৎপাদন করত পূর্ব বাংলার কৃষকরা আর এ পাট বিক্রির অর্থ খরচ করা হতো পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়নে। কৃষক মাহতাব এখনও এসব স্মৃতি মনে করে কেঁদে থাকেন। ফলে মানুষ গণঅভ্যুত্থানে ফেটে পড়েন।
১৯৬৬ সালে বাংলাদেশের এক মহানায়ক বাঙালিদের প্রাণের দাবি সংবলিত ৬টি দাবি শাসকবৃন্দের সম্মুখে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেন।
জুলুম নির্যাতনের কথা ভুলতেই পারছে না যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা অলক' রহমান। তিনি একটি মামলার কথা এখনো ভাবেন যে মামলাটি করা হয়েছিল মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে। পাকিস্তানের অভিযোগ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কোনো একস্থানে পূর্ব বাংলার নেতা ও কিছু অফিসার মিলে সরকার উৎখাতের চেষ্টা করেছে।
'ক' দেশটির স্বাধীনতা আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে। আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা তখন কারাগারে। বিকল্প নেতার নেতৃত্বে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের তীব্রতায় রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হয়। নিহতদের আত্মত্যাগে শেষপর্যন্ত এ আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়।
ছাত্রনেতা যায়েদ সরকার বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। পরে প্রতিবাদস্বরূপ লাশ নিয়ে মিছিল করতে চাইলে পুলিশি বাধার কারণে তা সম্ভব হয়নি। জানাজার পর শোক ও হরতালের কর্মসূচি দেওয়া হয়।
একসময় ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রুমান চৌধুরী। তিনি যখন একটি দলের বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি তখন একটি গণঅভ্যুত্থান দেশে সংঘটিত হয়। দেশ ও দেশের মানুষ মুক্তির জন্য অর্থনৈতিক মুক্তি ও রাজনৈতিক শৃঙ্খলা স্থাপনের তাগিদে এদেশের জনগণ আন্দোলনে শরীক হন।
Read more