কাজ, শক্তি ও ক্ষমতা এ তিনটি শব্দ আমাদের অতি পরিচিত। আমরা দৈনন্দিন জীবনে কাজ শব্দটিকে শারীরিক কিংবা মানসিক যে কোন কাজের জন্য ব্যবহার করে থাকি। তাই সাধারণ অর্থে কোন কিছু করার নামই কাজ। যেমন রিকশাওয়ালা যখন রিক্সা টানে তখন সে কাজ করে। কুলি যখন মাল বহন করে তখন সে কাজ করে, ঘোড়া যখন গাড়ি টানে তখন এটি কাজ করে ইত্যাদি। এ থেকে স্পষ্ট যে কাজ শব্দটি দৈনন্দিন জীবনে কোন নির্দিষ্ট অর্থে ব্যবহৃত না হয়ে ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়। পদার্থবিজ্ঞানে কাজ বলতে নির্দিষ্ট একটি অর্থ বুঝায়। আবার ক্ষমতা ও শক্তি উভয়ই সাধারণভাবে একই অর্থে ব্যবহার করি। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এরা এক নয়। এ অধ্যায়ে কাজ, ক্ষমতা ও শক্তির প্রকৃত ব্যাখ্যা এবং এদের সম্পর্কিত বিভিন্ন সম্পর্ক আলোচনা করা হবে।
পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় কোন বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করলে বলের অভিমুখে যদি বস্তুটির সরণ ঘটে তবে ক্রিয়াশীল বল কাজ করেছে বুঝায়। কাজের নিম্নোক্ত সংজ্ঞা দেয়া যায়।
উপরের সংজ্ঞা থেকে স্পষ্ট যে কোন বস্তুর উপরে শুধু বল প্রয়োগ করলেই কাজ হয় না। যেমন একটি কাঠের গুড়ির উপর বল প্রয়োগ করা হল ; কিন্তু গুড়িটির কোন স্থানান্তর হল না। সুতরাং প্রযুক্ত বল কোন কাজ করল না। অতএব, সিদ্ধান্ত এই যে, বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করলে যদি বলের ক্রিয়া রেখায় ঐ বস্তুর স্থানান্তর না ঘটে, তবে কাজ সম্পাদিত হয় না।
কাজের জন্য বলের প্রয়োজন। বল দুভাগে কাজ করতে পারে। যথা- (১) বলের দ্বারা বা বলের দিকে কাজ এবং (২) বলের বিরুদ্ধে বা বলের বিপরীত দিকে কাজ।
যদি বল প্রয়োগে বলের প্রয়োগ বিন্দু বলের ক্রিয়ার অভিমুখে সরে যায় বা বলের দিকে সরণের ধনাত্মক উপাংশ থাকে তবে বলের দ্বারা কাজ হয়েছে বুঝায়। বলের দ্বারাকৃত কাজকে ধনাত্মক কাজ বলে।
(ক) একটি বস্তুকে ছাদের উপর হতে নিচে ফেলা হল। এক্ষেত্রে বলের দ্বারা কাজ হল বুঝায়।
(খ) একটি ফুটবল চলন্ত অবস্থায় আছে। বল প্রয়োগ করার ফলে ফুটবলটি বলের দিকে সরে গেল। এ ক্ষেত্রেও বলের দ্বারা কাজ হয়েছে বুঝায়।
সংজ্ঞা : বল প্রয়োগের ফলে যদি বলের প্রয়োগ বিন্দু বলের ক্রিয়ার বিপরীত দিকে সরে যায় বা বলের দিকে সরণের ঋণাত্মক উপাংশ থাকে তবে যে কাজ সম্পাদিত হবে তাকে বলের বিরুদ্ধে কাজ বা ঋণাত্মক কাজ বলে।
(ক) একটি বস্তুকে মাটি হতে টেবিলের উপর উঠানো হল। এক্ষেত্রে অভিকর্ষ বলের বিরুদ্ধে সরানো হল। অতএব বলের বিরুদ্ধে কাজ হয়েছে বুঝাবে।
(খ) সমবেগে গতিশীল একটি গাড়ি ব্রেক করলে কিছুদূর গিয়ে থেমে যাবে। এক্ষেত্রে ব্রেকজনিত বল গাড়ির গতির বিপরীত দিকে ক্রিয়া করায় বলের বিরুদ্ধে কাজ হয়েছে বুঝাবে।
মনে করি A বিন্দুতে অবস্থিত কোন একটি বস্তুর উপর AB বরাবর F বল প্রযুক্ত হওয়ায় বস্তুটি A বিন্দু হতে B বিন্দুতে যেতে s দূরত্ব অতিক্রম করল । চিত্র ৬১ (ক)]। তা হলে,
কৃত কাজ = বলের মান × বলের ক্রিয়া রেখা বরাবর সরণের মান
বা, W=F × s
যদি বল প্রয়োগের ফলে বস্তুর তথা বলের প্রয়োগ বিন্দুর সরণ, বলের বিপরীত দিকে AB = s হয় [চিত্র ৬১ (খ)] তবে,
কৃত কাজ = বলের মান x বলের ক্রিয়া রেখা বরাবর সরণের মান
W= F × ( — s ) = - F × s
ঋণ চিহ্ন বল ও সরণ বিপরীতমুখী বুঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে।
এবার মনে করি একটি বস্তুর উপর F পরিমাণ বল AB অভিমুখে প্রযুক্ত হওয়ায় বস্তুটি বলের অভিমুখের সাথে কোণ উৎপন্ন করে s পরিমাণ দূরত্ব সরে C বিন্দুতে পৌঁছল[ চিত্র ৬.১ (গ) ]। তা হলে বলের ক্রিয়ারেখা বরাবর বস্তুর সরণ = AB = s cos।
এখানে BC AB,
কৃত কাজ, W= বলের মান × বলের ক্রিয়া রেখা বরাবর সরণের মান
বা, W = Fs
= বলের মান x বলের দিকে সরণের উপাংশের মান।
= সরণের মান × সরণের দিকে বলের উপাংশের মান।
মনে করি, বল একটি ভেক্টর বা দিক রাশি এবং সরণ একটি ভেক্টর বা দিক রাশি।
অতএব, কাজ= বল × সরণ
বা, [s হল বল F-এর দিকে সরণের উপাংশ বা অংশক]
(ক) = 0° হলে, অর্থাৎ বলের দিকে যখন বস্তুর সরণ হয়, তখন
এখানে কাজ ধনাত্মক (positive)। এক কথায় ও সূক্ষ্মকোণ হলে কাজ ধনাত্মক। কাজ ধনাত্মক হলে বলের দ্বারা কাজ বুঝায় ।
(খ) =90° হলে
(গ) = 180° হলে কাজ ঋণাত্মক (negative) হবে।
কাজ ঋণাত্মক হলে বলের বিরুদ্ধে কাজ বুঝায় ।
উপরের সমীকরণগুলো হতে সিদ্ধাস্ত করা যায় যে, বল প্রয়োগের ফলে যদি বনের প্রয়োগ বিন্দুর সরণ ঘটে তবেই কাজ সাধিত হবে। এটিই কাজের শর্ত।
কাজ দুটি দিক রাশি ও এর ডট বা স্কেলার গুণফল। এটি একটি স্কেলার রাশি। কাজের শুধুমাত্র মান রয়েছে।
কতকগুলো বল যদি একসাথে বস্তুর উপর কাজ করে, তবে প্রতিটি বল দ্বারা কাজের পরিমাণ পৃথক পৃথকভাবে নির্ণয় করে সবগুলোকে একত্রে যোগ করে মোট কাজের পরিমাণ পাওয়া যায়। অর্থাৎ মোট কাজের পরিমাণ।
W = w1 + w2 + w3 +…….. + wn
কাজ পরিমাপের সংজ্ঞা এবং সমীকরণ অনুসারে বল প্রয়োগের ফলে যদি বলের প্রয়োগ বিন্দুর সরণ না ঘটে,
তবে কাজ W= 0।
সুতরাং শূন্য কাজের নিম্নোক্ত সংজ্ঞা দেয়া য়ায়।
সংজ্ঞা ঃ বল প্রয়োগের ফলে যদি বস্তুর সরণ না হয় ( = 0), অর্থাৎ বলের প্রয়োগ বিন্দু স্থির থাকে অথবা প্রয়োগ বিন্দু বলের উল্লম্ব অভিমুখে ( = 90°) সরে যায়। তবে বলের দ্বারা শূন্য কাজ হয়েছে বুঝাবে ।
(ক) একজন লোক একটি ভারী বাক্স মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলে লোকটি কোন কাজ করছে না, কারণ বাক্সটির কোন সরণ নেই ।
(খ) স্রোতের বিরুদ্ধে সাঁতার কেটে স্থির থাকলে কোন কাজ করা হয় না।
(গ) একটি বস্তু দড়িতে বেঁধে বৃত্তাকার পথে ঘুরালে কোন কাজ হবে না। কেননা প্রতি মূহূর্তে বস্তুটির বেগ বা সরণ বস্তুর অবস্থান বিন্দু হতে বৃত্তের স্পর্শক বরাবর এবং বলের দিক কেন্দ্রমুখী। অর্থাৎ কেন্দ্রমুখী বল ও সরণের অন্তর্ভুক্ত কোণ 90°। সুতরাং, কেন্দ্রমুখী বল দ্বারা কৃত কাজ শূন্য।
আমরা জানি,
কাজ W = = Fs cos
উপরের সমীকরণের ডানপাশে Fs ও cos তিনটি রাশি রয়েছে। এদের যে কোন একটি শূন্য হলে ডানপক্ষ অর্থাৎ কাজ শূন্য হবে।
(ক) যদি বস্তুতে বল প্রয়োগ না করা হয় তবে কাজ W = 0 হবে।
(খ) বল প্রয়োগ করার ফলে যদি বস্তুর সরণ না ঘটে, তবে W= 0 হবে।
(গ) যদি cos = 0 হয়, অর্থাৎ = 90° হয়, তবে w = 0 হবে। এ অবস্থা ঘটবে যখন বল F ও সরণ s-এর মধ্যবর্তী কোণ 90° হবে।
বলের দ্বারা কাজ | বলের বিরুদ্ধে কাজ |
---|---|
১। যদি বল প্রয়োগের ফলে বলের দিকে বলের প্রয়োগ বিন্দুর সরণ ঘটে বা বলের দিকে সরণের ধনাত্মক উপাংশ থাকে তবে ঐ সরণের জন্য কৃতকাজকে বলের দ্বারা কাজ বলে। | ১। যদি বল প্রয়োগের ফলে বলের বিপরীত দিকে বলের প্রয়োগ বিন্দুর সরণ ঘটে বা বলের দিকে সরণের ঋণাত্মক উপাংশ থাকে তবে ঐ সরণের জন্য কৃতকাজকে বলের বিরুদ্ধে কাজ বলে। |
২। বলের দ্বারা কাজ ধনাত্মক রাশি। | ২। বলের বিরুদ্ধে কাজ ঋণাত্মক রাশি। |
৩। বলের দ্বারা কাজ হলে বস্তুতে ত্বরণের সৃষ্টি হয়। | ৩। বলের বিরুদ্ধে কাজ হলে বস্তুর উপর মন্দন সৃষ্টি হয়। |
৪। বলের দ্বারা কাজ হলে স্থিতিশক্তি হ্রাস পায়। | ৪। বলের বিরুদ্ধে কাজ হলে স্থিতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। |
৫। বলের দ্বারা কাজ হলে গতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। | ৬। বলের বিরুদ্ধে কাজ হলে গতিশক্তি হ্রাস পায়। |
৬। বলের দ্বারা কাজের ক্ষেত্রে 90° < <0° | ৬। বলের বিরুদ্ধে কাজের ক্ষেত্রে 180°> < 90° । |
কাজের একক আলোচনা করার আগে একক কাজ কি তা জানা দরকার। কোন বস্তুর উপর একক বল প্রয়োগে বলের ক্রিয়ারেখা বরাবর যদি বস্তুর একক সরণ হয়, তবে যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন হয়, একক কাজ বলে ।
এ পদ্ধতিতে কাজের পরম একক হল জুল (Joule)। এক নিউটন বল প্রয়োগের ফলে বলের ক্রিয়া রেখা বরাবর বস্তুর সরণ যদি এক মিটার হয়, তবে যে কাজ সম্পন্ন হয় তাকে এক জুল বলে।
:- 1 জুল = 1 নিউটন × 1 মিটার।
তাৎপর্য : ধরা যাক 50J পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
এখন, 50J = 50 N x 1m = 1N × 50m = 5N × 10m ইত্যাদি।
সুতরাং, 50J কাজ সম্পাদন বলতে বুঝায় 50 N বল প্রয়োগ করে বলের দিকে 1 m সরণ ঘটান বা 1 N বল প্রয়োগ করে 50 m সরণ ঘটান; কিংবা 5N বল প্রয়োগ করে 10m সরণ ঘটান ইত্যাদি।
পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানে কাজ পরিমাপের জন্য ইলেকট্রন ভোল্ট (eV) নামে পরিচিত একটি সুবিধাজনক একক ব্যবহার করা হয়। এক ভোল্ট বিভব পার্থক্যে একটি ইলেকট্রনের অর্জিত শক্তিই এক ইলেকট্রন ভোল্ট ।
1eV = 1.6 x 10-19 জুল।
বিদ্যুৎবিজ্ঞানে কাজের আর একটি ব্যবহারিক একক আছে। এর নাম কিলোওয়াট-ঘণ্টা (K. W. H.)।
এক কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কোন উৎস এক ঘণ্টায় যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করে তাকে এক কিলোওয়াট-ঘণ্টা বলে।
কাজের মাত্রা সমীকরণ :
কাজের মাত্রা সমীকরণ : [W] = [বল ] x [সরণ] = [MLT-2] [L] = [ML2T-2]।
(১) মনে করি 'm' ভরবিশিষ্ট একটি বস্তুকে অভিকর্ষ বলের প্রভাবে ‘h’ উচ্চতা হতে ফেলা হল।
কৃত কাজ = বল x সরণ
বা, W= F × h=mgh [:- F = mg]
বা, W = ভর x অভিকর্ষীয় ত্বরণ × উচ্চতা
অভিকর্ষ বলের দিক নিচের দিকে এবং এক্ষেত্রে সরণ ও নিচের দিকে। অর্থাৎ, বল ও সরণ একই দিকে হওয়ায় কাজ ধনাত্মক।
(২) ‘m’ ভরবিশিষ্ট একটি বস্তুকে অভিকর্ষ বলের বিরুদ্ধে ‘h’ উচ্চতা উপরে উঠালে
কৃত কাজ = ভর x অভিকর্ষীয় ত্বরণ x উচ্চতা [বা, W= mgh]
এক্ষেত্রে বল ও সরণ বিপরীত দিকে হওয়ায় এই কাজ ঋণাত্মক।
(৩) মনে করি 'm' ভরবিশিষ্ট একটি বস্তু কোন একটি মসৃণ নততল বেয়ে A হতে B-তে সরে এল। যদি g অভিকর্ষীয় ত্বরণ হয়, তবে অভিকর্ষ বল mg বস্তুটিকে খাড়াভাবে নিচের দিকে টানবে।
ধরি সরণের অভিমুখ এবং অভিকর্ষ বলের অভিমুখের মধ্যে ও কোণ আছে এবং AB = s
অভিকর্ষ বল mg-এর দিকে সরণের অংশ = s cos
যদি তল না থাকত তবে বস্তুটি যে সময়ে A হতে B-তে যায়, সে সময়ে তা AC = h দূরত্ব নিচে নামত ।
h = s cos
কৃত কাজ, W=mgs cos বা, W=mgh
তলটি অনুভূমিকের সাথে x কোণে অবস্থান করলে, = ( 90° – )
একটি বস্তু 20.m উচ্চতা থেকে ভূমিতে পড়ল। (g = 10 ms-2)
15 m উঁচু একটি গাছের ডাল হতে 200 g ভরের একটি আম নিচের কাদা মাটিতে পড়ে 10 cm গর্তের সৃষ্টি করে। [g = 9.8 ms-2]
40 m উঁচু হতে একটি বস্তু ভূমিতে পড়ল। [g = 9.8 ms-2]
সংজ্ঞা : কোনো কণা একটি পূর্ণচক্র সম্পন্ন করে তার আদি অবস্থানে ফিরে আসলে কণাটির উপর যে বল দ্বারা সম্পাদিত কাজের পরিমাণ শূন্য হয়, সেই বলকে সংরক্ষণশীল বল বলে।
ব্যাখ্যা : কোনো কণার একটি বিন্দু থেকে অপর বিন্দুতে যাওয়ার সময় কোনো বল দ্বারা কৃতকাজ যদি ধনাত্মক হয় এবং দ্বিতীয় বিন্দু থেকে প্রথম বিন্দুতে আসার সময় যদি ঐ বল দ্বারা কৃতকাজ পূর্বের কাজের সমান ও ঋণাত্মক হয়, তাহলে এ পূর্ণ চক্রে মোট কাজ শূন্য হয়। এই বলকে সংরক্ষণশীল বল বলা হয়।
কোনো একটি কণার এক বিন্দু থেকে অপর বিন্দুতে যাওয়ার সময় যদি কোনো বল দ্বারা কণাটির উপর সম্পাদিত কাজের পরিমাণ কণাটির গতিপথের উপর নির্ভর না করে কেবল বিন্দু দুটির অবস্থানের উপর নির্ভর করে তাহলে সেই বলটি সংরক্ষণশীল হয়।
উদাহরণ : অভিকর্ষ বল
সংজ্ঞা :অসংরক্ষণশীল বল হল এমন একটি বল যা কাজের পরিমাণ নির্ভর করে পথের উপর। অর্থাৎ, যদি আপনি একটি বস্তুকে একটি নির্দিষ্ট পথে সরান, তবে সেই পথে কাজ করা বলের পরিমাণ পরিবর্তিত হবে। উদাহরণস্বরূপ, ঘর্ষণ বল একটি অসংরক্ষণশীল বল, কারণ এটি বস্তুটির গতির উপর নির্ভর করে এবং এটি কাজের পরিমাণকে পরিবর্তন করে।
ব্যাখ্যা :অসংরক্ষণশীল বলের উদাহরণ হিসেবে ঘর্ষণ বল ছাড়াও বায়ুর প্রতিরোধক বল এবং টানেল বলও উল্লেখ করা যায়। এই ধরনের বলগুলি সাধারণত শক্তির রূপান্তর ঘটায় এবং সিস্টেমের মোট শক্তি কমিয়ে দেয়।
যখন একটি বস্তুকে ঘর্ষণের মাধ্যমে সরানো হয়, তখন ঘর্ষণ বল কাজের পরিমাণকে কমিয়ে দেয় এবং এর ফলে বস্তুটির গতির পরিবর্তন ঘটে। উদাহরণস্বরূপ, একটি গাড়ি যখন ব্রেক করে, তখন ঘর্ষণ বল গাড়ির গতিকে ধীর করে দেয় এবং শক্তি তাপের রূপে ক্ষয় হয়।
অন্যদিকে, সংরক্ষণশীল বল যেমন গুরুত্ব বল বা ইলেকট্রিক বল, কাজের পরিমাণ নির্ভর করে শুধুমাত্র শুরু এবং শেষ অবস্থানের উপর, পথের উপর নয়।
অসংরক্ষণশীল বলের কারণে শক্তির ক্ষতি হতে পারে, যেমন তাপের রূপে।
উদাহরণ : ঘর্ষণ বল
পদার্থবিজ্ঞানে, ক্ষমতা হলো প্রতি একক সময়ে স্থানান্তরিত বা রূপান্তরিত শক্তির পরিমাণ। আন্তর্জাতিক একক পদ্ধতিতে, ক্ষমতার একক হলো ওয়াট, যা প্রতি সেকেন্ডে এক জুলের সমান। আগেকার দিনের আলোচনায়, ক্ষমতাকে কখনও কখনও কার্যকলাপও বলা হতো। ক্ষমতা একটি স্কেলার পরিমাপ।
৬.৫ অনুচ্ছেদে অভিকর্ষীয় কাজ আলোচনা করার সময় বল1 অপরিবর্তনশীল ধরা হয়েছে। স্বল্প উচ্চতায় বলের পরিবর্তন খুবই নগণ্য। কিন্তু পৃথিবী পৃষ্ঠের বেশ উপরের দিকে কিংবা নিচের দিকে অভিকর্ষীয় বলের মান কমতে থাকে। সেক্ষেত্রে বা ধ্রুব ধরা যায় না। বল একটি ভেক্টর রাশি; সুতরাং এর দিক ও মান উভয়ই আছে। প্রথমে বলে মান পরিবর্তনশীল বিবেচনা করে আমরা নিম্নে কৃত কাজের সমীকরণ বের করব।
(ক) বলের মান যখন পরিবর্তনশীল : ধরি কোন একটি পরিবর্তনশীল বল ঐ বস্তুর উপর X-অক্ষ বরাবর ক্রিয়া করায় বস্তুটি X-অক্ষ বরাবর X1 অবস্থান থেকে X2 অবস্থানে সরে গেল এবং বলটি মানের সাপেক্ষে পরিবর্তী। এই পরিবর্তী বল দ্বারা বস্তুটির সরণ (x2 – x1) ঘটাতে সম্পাদিত কাজ নিম্নোক্ত উপায়ে বের করতে পারি ।
এখন মোট সরণ (X2 - X1 ) কে বহুসংখ্যক অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সমমানের সরণ x-এ বিভক্ত করা হল [চিত্র ৬.৩ (ক)]।
ফলে প্রতিটি ক্ষুদ্র সরণের শুরুতে বস্তুর উপর যে বল ক্রিয়া করে ঐ বলের ক্রিয়াতেই ঐ Trip সংঘটিত হয়েছে বিবেচনা করা যায়। প্রতিটি ক্ষুদ্র অংশে ক্রিয়ারত বল ভিন্ন ভিন্ন মানের। সুতরাং x1, অবস্থান থেকে x2 + x পর্যন্ত ক্ষুদ্র সরণের ক্ষেত্রে F1 বল ক্রিয়াশীল হলে কৃত কাজ,
W1 = F1 x
অনুরূপভাবে x1 + x থেকে x1 +2 x পর্যন্ত সরণ x-এর ক্ষেত্রে F2 বল ক্রিয়াশীল হলে কৃত কাজ,
W2 = F2 x
মোট সরণ (x2 – x1 ) কে যদি এরূপ N সমসংখ্যক ক্ষুদ্র সরণ x-এ বিভক্ত করা হয় তবে মোট কাজ হবে এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশের সরণের জন্য কাজের সমষ্টির সমান।
কৃত কাজ, W = W1+ W2 + W3 +……+ Wn
লক্ষণীয় যে প্রতিটি ক্ষুদ্র অংশ x-এ বলের মান ধ্রুব ধরা হয়েছে। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। ঐ প্রতিটি ক্ষুদ্র অংশকে যদি আরও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে ভাগ করি।[ চিত্র ৬.৩ (খ)] এবং নব ক্ষুদ্র অংশের জন্য বল ধ্রুব ধরি, তবে কৃত কাজের মান আরও সঠিক হবে। এভাবে ক্ষুদ্র অংশ আরও ক্ষুদ্র অর্থাৎ x যদি প্রায় শূন্যের কাছাকাছি হয় এবং বিভক্ত অংশের সংখ্যা N-কে অসীম করা হয়। তবে সঠিক মান পাওয়া যাবে। অতএব, কাজের সঠিক মান লেখা যায় ।
ক্যালকুলাসের ভাষায়,
(খ) বলের মান ও দিক উভয়ই যখন পরিবর্তনশীল : বল মানে ও অভিমূখে পরিবর্তনশীল হলে ঐ বলের ক্রিয়ায় বস্তু একটি রেখায় গতিশীল হতে পারে। বস্তুটির গতি দ্বিমাত্রিক বা ত্রিমাত্রিক। এ ক্ষেত্রে রেখাটির কোন বিন্দুতে অংকিত স্পর্শক দ্বারা ঐ বিন্দুতে বস্তুর গতি অভিমুখ নির্দিষ্ট হবে। এক্ষেত্রে সরণ = r ।
কাজেই এই প্রকার বলের কৃত কাজ নির্ণয়ে সমগ্র গতিপথকে অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সরণ -এর সমষ্টি হিসেবে গণ্য করা যায়।
প্রত্যেক ক্ষুদ্র সরণের শুরুতে বস্তুর উপর যে বল F ক্লিয়ারত থাকে ঐ বল উক্ত সরণের জন্য অপরিবর্তী -> বিবেচনা করা যায়। ধরি কোন একটি ক্ষুদ্র সরণ এবং ঐ সরণের জন্য ক্রিয়ারত বল -এর মধ্যবর্তী কোণ ও বলটিকে বরাবর একটি অংশে এবং তার লম্ব দিকে অপর একটি অংশে বিভক্ত করি। ধরি অংশক দুটি যথাক্রমে-
Fr = Fs cos এবং Fn = F sin
এই ক্ষুদ্র সরণের জন্য বলের Fn অংশক কর্তৃক কৃত কাজ শূন্য, কেননা এই ক্ষুদ্র সরণ ও Fn-এর মধ্যবর্তী কোণ 90° । তা হলো ঐ ক্ষুদ্র সরণের জন্য কৃত কাজ।
মনে করি একটি অনুভূমিক আদর্শ স্প্রিং-এর এক প্রান্ত দেয়ালের সাথে আটকিয়ে অপর প্রান্তে m ভরের একটি বস্তু যুক্ত রয়েছে। বস্তুটি অনুভূমিক এবং ঘর্ষণবিহীন তলের উপর দিয়ে চলাচল করতে পারে।
বস্তুটিকে টেনে স্প্রিং S-কে দৈর্ঘ্য বরাবর বিকৃত করলে স্থিতিস্থাপক ধর্মের দরুন প্রযুক্ত বলের বিপরীত স্প্রিং-এ প্রত্যায়নকারী বলের উদ্ভব হবে। স্থিতিস্থাপক সীমা অতিক্রম না করলে, প্রত্যায়নী বলের মান হুকের সূত্রানুযায়ী দৈর্ঘ্য পরিবর্তনের সমানুপাতিক হবে।
মনে করি Fs, অনুভূমিক বল প্রয়োগে বস্তুটিকে বাম হতে ডান দিকে সরানোর ফলে এর দৈর্ঘ্য অনুভূমিক বরাবর x পরিমাণ বৃদ্ধি পেল। এই ক্রিয়ার দরুন স্প্রিং-এ – kx পরিমাণ প্রত্যায়নী বল উৎপন্ন হবে। কেননা
বা,
[এই প্রত্যায়নী বলের দিক বস্তুটির সরণের বিপরীত দিকে হওয়ায় ঋণাত্মক চিহ্ন ব্যবহৃত হয়েছে। ]
এখানে k একটি ধ্রুব সংখ্যা। একে স্প্রিং ধ্রুবক (spring constant) বলা হয়।
স্প্রিংটকে প্রসারিত করতে হলে সমমানের বাহ্যিক বল প্রয়োগ করতে হবে। মনে করি প্রযুক্ত বল F।
স্প্রিংটিকে x1 অবস্থান হতে x2 অবস্থানে প্রসারিত করতে প্রযুক্ত বল কর্তৃক সম্পাদিত কাজের পরিমাণ
এই কাজ ধনাত্মক। সাধিত কাজ স্প্রিং-এর মধ্যে স্থিতিশক্তি হিসেবে সঞ্চিত থাকে। স্প্রিং-এর আদি অবস্থান x1 = 0 এবং শেষ অবস্থান x2 = x ধরলে,
W = x2
অর্থাৎ, সরণের পরিমাণ x হলে সঞ্চিত স্থিতিশক্তির পরিমাণ হবে ।
মনে করি একটি গুরুভার বস্তুর ভর M এবং এর ভারকেন্দ্র O। O হতে r দূরত্বে Q বিন্দুতে m ভরের একটি বস্তু স্থাপন করি। অতএব OQ = r । মহাকর্ষীয় সূত্র হতে বস্তু দুটির মধ্যে মহাকর্ষীয় বল
এই বল QO রেখা বরাবর ক্রিয়া করে। Q হতে dr দূরত্বে R একটি বিন্দু বিবেচনা করি। অতএব OR = r + dr_যেহেতু Q ও R বিন্দু দুটি খুবই কাছাকাছি, সেহেতু এই দূরত্বের মধ্যে F1 ধ্রুব ধরা যায় । ছোট
বস্তুটিকে Q হতে R বিন্দুতে নিতে বাইরের কোন উৎসকে মহাকর্ষীয় বলের বিপরীত দিকে সমপরিমাণের একটি বল প্রয়োগ করতে হবে। ধরি এই বল F2
:-
এই বল Q হতে R বিন্দুর দিকে ক্রিয়া করবে।
এখন, ছোট বস্তুটিকে Q হতে R বিন্দুতে নিতে বাইরের উৎস কর্তৃক কৃত কাজ
বা,
ছোট বস্তুটিকে P হতে S বিন্দুতে নিতে কৃত কাজ
অর্থাৎ W
উক্ত সমীকরণ হতে দেখা যাচ্ছে যে বাইরের উৎস কর্তৃক মহাকর্ষীয় বলের বিপরীতে কাজ ধনাত্মক।
কোন ব্যক্তি, বস্তু বা পদার্থের কাজ করার সামর্থ্য বা ক্ষমতাকে এর শক্তি বলে। একটি বস্তু এই শক্তি তার আপেক্ষিক অথবা পারিপার্শ্বিক অবস্থা বা অবস্থানের সাপেক্ষে অথবা গতির দরুন অর্জন করতে পারে। বিশেষ অবস্থায় বস্তু মোট যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করতে পারে, তা দ্বারাই শক্তি পরিমাপ করা হয়। যার কাজ করার সামর্থ্য যত বেশি তার শক্তিও তত বেশি। আর যার কাজ করার সামর্থ্য যত কম তার শক্তিও তত কম। অতএব বলা যায় কাজ শক্তির মাপকাঠি। যদি বলা হয় কোন বস্তু W পরিমাণ কাজ করল, তবে বুঝতে হবে যে, তার ব্যয়িত শক্তির মান W।
মোটর ইঞ্জিনে পেট্রোলের বাষ্প, বাষ্পীয় ইঞ্জিনে জলীয় বাষ্পের চাপ পিস্টনকে চালায়। সুতরাং বাষ্পের শক্তি আছে। বিদ্যুতেরও শক্তি আছে। এই শক্তিতেই ট্রেন, ট্রাম, কল-কারখানা চলে। শক্তি আছে বলেই এই মহাবিশ্ব চলছে। শক্তির অভাবে জগৎ অচল।
যখন কোন বস্তু বলের বিরুদ্ধে কাজ করে, তখন তা শক্তি হারায়। আবার কোন বস্তুর উপর বল ক্রিয়া করলে তা শক্তি লাভ করে।
কাজ দ্বারাই শক্তির পরিমাপ করা হয় অর্থাৎ কাজই শক্তির মাপকাঠি। অতএব কাজ এবং শক্তির একক ও মাত্রা সমীকরণ সম্পূর্ণ অভিন্ন।
শক্তিকে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে, যথা-
(১) যান্ত্রিক শক্তি (Mechanical energy)
(২) তাপ শক্তি (Heat energy)
(৩) শব্দ শক্তি (Sound energy)
(৪) আলোক শক্তি (Light energy)
(৫) চুম্বক শক্তি (Magnetic energy)
(৬) বিদ্যুৎ শক্তি (Electric energy)
(৭) রাসায়নিক শক্তি (Chemical energy)
(৮), পারমাণবিক শক্তি (Atomic energy)
(৯) সৌরশক্তি (Solar energy)।
কোন বস্তুর মধ্যে তার পারিপার্শ্বিক অবস্থা বা অবস্থানের সাপেক্ষে অথবা গতির জন্য কাজ করার সামর্থ্য তথা শক্তি থাকে, তবে ঐ শক্তিকে যান্ত্রিক শক্তি বলে।
এই অধ্যায়ে আমরা যান্ত্রিক শক্তি আলোচনা করব। এটি প্রধানত দুই প্রকার; যথা-
( ১ ) গতিশক্তি (Kinetic energy)। একে সংক্ষেপে K. E. লেখা হয় এবং
(২) বিভব বা স্থিতিশক্তি (Potential energy)।
রাইফেলের একটি গুলি লক্ষ্যবস্তুতে সজোরে আঘাত করার পর তা বস্তুর বাধা অতিক্রম করে খানিকটা ঢুকে যায়। অর্থাৎ গুলি কিছু কাজ করে। গুলি যতক্ষণ বন্দুকের ভিতর থাকে ততক্ষণ তার এই কাজ করার সামর্থ্য থাকে না।
কাজেই বুঝা যায় গুলি এই কাজ করার সামর্থ্য অর্থাৎ শক্তি অর্জন করে গতি হতে। বায়ুর গতির দিকে নৌকা চালালে তার গতি বৃদ্ধি পায় এবং বিপরীত দিকে চালালে তার গতি হ্রাস পায়। নৌকা পানির বাধা অতিক্রম করার শক্তি সংগ্রহ করে গতি হতে।
আরও সংক্ষেপে বলা যায়, গতির জন্য বস্তুতে যে শক্তির উদ্ভব হয় তাকে তার গতিশক্তি বলে।
দোলায়মান দোলক, ঘূর্ণায়মান ফ্লাই হুইল, নিক্ষিপ্ত তীর, চলন্ত ফুটবল, প্রচণ্ড ঝড়, চলন্ত সাইকেল ইত্যাদি সকলের শক্তিই পতিশক্তি। কোন গতিশীল বস্তু গতিতে থাকাকালীন অর্থাৎ স্থিতিতে আসার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করে তা দ্বারা তার গতিশক্তি পরিমাপ করা হয়।
রৈখিক গতির ক্ষেত্রে : গতিশীল বস্তু স্থিতিতে আসার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করে তাই গতিশক্তির পরিমাপ ।
মনে করি, 'm' ভরবিশিষ্ট একটি বস্তু AB বরাবর বেগে চলছে। গতির বিপরীত দিকে BA বরাবর তার উপর F পরিমাণ ধ্রুব বল প্রয়োগ করা হল। এতে সম-মন্দনের সৃষ্টি হবে। মনে করি, সম-মন্দন = a এবং বস্তুটি A হতে s দূরত্ব অতিক্রম করার পর B বিন্দুতে এসে থেমে গেল। এ ক্ষেত্রে শেষ বেগ = 0.
= স্থিতিতে আসার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত কৃত কাজ
= বল × স্থিতিতে আাসার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত অতিক্রান্ত দূরত্ব
= F × s
নিউটনের ২য় গতি সূত্র হতে আমরা জানি,
বল = ভর x ত্বরণ বা মন্দন
F = ma
বর্ণনা অনুসারে, 0 = v2 -2as
বা, 2as = v2
উপরের সমীকরণে F এবং s-এর মান বসিয়ে আমরা পাই,
গতিশক্তি
বা, K. E.
উপরের সমীকরণ হতে আমরা সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে,
ধরা যাক, m ভরের একটি বস্তুর উপর নির্দিষ্ট দিকে F বল প্রয়োগ করে গতিশীল করা হয়। বলের দিক অপরিবর্তী, কিন্তু মান পরিবর্তনশীল। বস্তুটির সরণ X-অক্ষ বরাবর।
বস্তুর সরণ ঘটার ফলে বল দ্বারা মোট কৃত কাজ
ত্বরণ a-কে লেখা যায়,
ধরা যাক, বস্তুতে ক্রিয়াশীল বল বস্তুটির বেগ 0 হতে ৮-তে উন্নীত করে।
অতএব,
এই কৃত কাজই হচ্ছে বস্তুটির গতিশক্তি।
m ভরের একটি বস্তু বেগে গতিশীল হলে এর ভরবেগ, P = mv
এবং গতিশক্তি
এটিই গতিশক্তি ও ভরবেগের সম্পর্ক।
কোন বস্তুর উপর ক্লিয়ারত লখি বল কর্তৃক কৃত কাজ তার গতিশক্তির পরিবর্তনের সমান। নিম্নোক্ত দুটি সমীকরণের সাহায্যে কাজ শক্তি উপপাদ্য প্রমাণ করা হবে। একটি হল শক্তি লাভ (Gain of energy) আর অপরটি হল শক্তি ক্ষয় ( Loss of energy)। সমীকরণ দুটি সাধারণভাবে কাজ শক্তি উপপাদ্য নামে পরিচিত।
মনে করি 'm' ভরবিশিষ্ট একটি বস্তু 'v0' আদি বেগে চলছে। গতির দিকে নির্দিষ্ট মানের একটি বল F বস্তুর উপর প্রয়োগ করলে বস্তুর বেগ বৃদ্ধি পাবে। ফলে বস্তু শক্তি লাভ করবে। মনে করি দূরত্ব অতিক্রম করার পর শেষ বেগ 'v' হল। তা হলে কৃত কাজ, W= F × s।