পুরাণ নানা বৈশিষ্ট্যে বিশিষ্ট। শাস্ত্রে পুরাণের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলা হয়েছে-
সর্গশ্চ প্রতিসর্গশ্চ বংশো মন্বন্তরাণি চ।
বংশানুচরিতঞ্চৈব পুরাণং পঞ্চলক্ষণম্।। (বায়ুপুরাণ)
অর্থাৎ পুরাণের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য সর্গ, প্রতিসর্গ, বংশ, মন্বন্তর ও বংশানুচরিত। সর্গ মানে সৃষ্টি। কীভাবে জীব -জগতের সৃষ্টি হলো, গল্পের আকারে তা পুরাণে আলোচনা করা হয়েছে। প্রতিসর্গ মানে পুনরায় সৃষ্টি। জীব জগতের সবকিছুর বিনাশ হওয়ার পর আবার নতুন করে সবকিছু সৃষ্টি হয়। একেই বলে প্রতিসর্গ। দেবতা ও ঋষিদের বর্ণনাই হলো বংশ। একেকবার সৃষ্টির পর তা ধ্বংস হয় এবং তার স্থলে নতুন 'সৃষ্টি' জেগে ওঠে। প্রতিটি সৃষ্টির আদি পুরুষ হলেন মনু।
এভাবে চৌদ্দজন মনুর কাল অতিক্রান্ত হয়েছে। এক মনু থেকে আরেক মনুর কালের পূর্ব পর্যন্ত সময়কে বলা হয় মন্বন্তর। আর বংশানুচরিত হচ্ছে দেবতা, ঋষি বা বিখ্যাত রাজাদের জীবনচরিত। এ ছাড়া পুরাণে রয়েছে বর্ণাশ্রম ধর্ম, আচার অনুষ্ঠান, শ্রাদ্ধ, দান, পূজা, ব্রত ও তীর্থস্থানের বর্ণনাসহ অনেক বিষয়। মোটকথা, পুরাণের মধ্যে সেকালের ধর্ম এবং জীবনের প্রতিফলন ঘটেছে। আমাদের ধর্ম এবং জীবনে পুরাণের গুরুত্ব অপরিসীম। কত গল্প, কত উপাখ্যান, কত উপদেশ, জীবনের উত্থান ও পতনের কত কথা যে পুরাণে রয়েছে তা বলে শেষ করা যায় না।
একক কাজ: পুরাণের বিষয়বস্তুসমূহ চিহ্নিত কর। |
নতুন শব্দ: সর্গ, প্রতিসর্গ, মন্বন্তর, বর্ণাশ্রম।