শ্রীশ্রীচণ্ডী বা মহামায়া দেবতাসহ মানবকুলকে তিনি দেবতাদের নানা বিপদ থেকে রক্ষা করেন।
এ প্রসঙ্গে একটি কাহিনী বর্ণনা করা হলো। বহুকাল পূর্বে দেবতা ও অসুরদের মধ্যে একবার ভীষণ যুদ্ধ বাধে। তখন দেবরাজ ইন্দ্র, আর দৈত্যরাজ মহিষাসুর। দানবেরা দেবতাদের পরাজিত করল। মহিষাসুরের খুব আনন্দ। বসল স্বর্গের সিংহাসনে।
স্বর্গহারা দেবতারা দেবরাজ ইন্দ্রের নেতৃত্বে প্রথমে গেলেন ব্রহ্মার কাছে। ব্রহ্মা দেবতাদের দুঃখের কথা শুনলেন। বিষ্ণু ও শিব যেখানে বসে কথাবার্তা বলছেন, সেখানে গিয়ে উভয়কে বন্দনা করে দেবতাদের দুঃখের কথা জানালেন। ব্রহ্মার মুখে এমন মর্মান্তিক কথা শুনে বিষ্ণু আর মহেশ্বর প্রথমে ব্যথিত হলেন, তারপর ক্রুদ্ধমূর্তি ধারণ করলেন। ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিবসহ অন্যান্য দেবতাদের শরীর থেকে ভয়ঙ্কর তেজ বের হলো। সেই তেজ একত্রিত হয়ে এক দিব্য নারীমূর্তির সৃষ্টি হলো। ইনিই দেবী দুর্গা। তারপর দেবগণ তাঁকে নানান অসত্র ও অলঙ্কার দান করলেন। এভাবে দুর্গা দেবী অপূর্ব সাজে সেজে উঠলেন। তখন গিরিরাজ হিমালয় দেবীর বাহনের জন্য দিলেন সিংহ। দেবতাগণ আনন্দে জয়ধ্বনি দিলেন, মুনিরা দেবীস্তব করলেন। অসুররা দেবীর সেই ভীষণ গর্জন শুনে তাঁর অভিমুখে তাড়াতাড়ি দ্রুতবেগে চলল। তারপর শুরু হলো দেবতা ও অসুরদের মধ্যে ভীষণ যুদ্ধ। মহিষাসুরের সেনাপতি চিক্ষুর ও চামরসহ চতুরঙ্গ সেনা নিয়ে যুদ্ধ করতে লাগল। দেবী দুর্গা কিন্তু একা। তাতে কী? রণে মত্ত মহাশক্তিমান দেবীর নিঃশ্বাসে লক্ষ লক্ষ সৈন্য সৃষ্টি হলো। তখন একে একে চিক্ষুর, চামরসহ প্রায় সকলেই দেবীর অস্ত্রাঘাতে নিহত হলো। তারপর যুদ্ধে নামেন মহিষাসুর নিজে। দেবী দুর্গা আর মহিষাসুরের মধ্যে ভীষণ যুদ্ধ হয়। অবশেষে দেবী শূলাঘাতে মহিষাসুরকে বধ করেন। দেবতারা তাঁদের স্বর্গরাজ্য আবার ফিরে পান।
ইন্দ্র ও অন্যান্য দেবতা দেবী দুর্গার স্তব করতে লাগলেন।
একক কাজ: মহিষাসুর বধ কাহিনীর শিক্ষা চিহ্নিত করে তোমার প্রাত্যহিক জীবনে তার প্রভাব বর্ণনা কর। |
নতুন শব্দ: ব্রহ্মলোক, ক্রুদ্ধমূর্তি, চতুরঙ্গ, গিরিরাজ।
Read more