১
সেই আদি-যুগে যবে অসহায় নর
নেত্ৰ মেলি ভবে,
চাহিয়া আকাশ পানে – কারে ডেকেছিল,
দেবে না মানবে?
কাতর আহ্বান সেই মেঘে মেঘে উঠি,
লুটি গ্রহে গ্রহে,
ফিরিয়া কি আসে নাই, না পেয়ে উত্তর,
ধরায় আগ্রহে?
সেই ক্ষুব্ধ অন্ধকারে, মরুৎ গর্জনে,
কার অন্বেষণ? সে নহে বন্দনা-গীতি, ভয়ার্ত-ক্ষুধার্ত
খুঁজিছে স্বজন!
২
আরক্ত প্রভাত সূর্য উদিল যখন
ভেদিয়া তিমিরে,
ধরিত্রী অরণ্যে ভরা, কদমে পিচ্ছিল
সলিলে শিশিরে!
শাখায় ঝাপটি পাখা গরুড় চিৎকারে
কাণ্ডে সর্পকুল,
সম্মুখে শ্বাপদ-সংঘ বদন ব্যাদানি
আছাড়ে লাঙ্গুল
; দংশিছে দংশক গাত্রে, পদে সরীসৃপ,
শূন্যে শ্যেন উড়ে;-
কে তাহারে উদ্ধারিল? দেব না মানব-
প্রস্তরে লগুড়ে?
৩
শীর্ণ অবসন্ন দেহ, গতিশক্তিহীন,
ক্ষুধায় অস্থির;
কে দিল তুলিয়া মুখে স্বাদু পক্বফল,
পত্রপুটে নীর?
কে দিল মুছায়ে অশ্রু? কে বুলাল কর
সর্বাঙ্গে আদরে?
কে নব পল্লবে দিল রচিয়া শয়ন
আপন গহ্বরে?
দিল করে পুষ্পগুচ্ছ, শিরে পুষ্পলতা,
অতিথি সৎকার!
নিশীথে বিচিত্র সুরে বিচিত্র ভাষায়
স্বপনসম্ভার!!
8
শৈশবে কাহার সাথে জলে স্থলে ভ্রমি
শিকার-সন্ধান?
কে শিখাল ধনুর্বেদ, বহিত্র চালনা,
চর্ম পরিধান ?
অর্ধদগ্ধ মৃগমাংস কার সাথে বসি,
করিনু ভক্ষণ?
কাষ্ঠে কাষ্ঠে অগ্নি জ্বালি কার হস্ত ধরি
কুর্দন নর্তন?
কে শিখাল শিলাস্তূপে, অশ্বত্থের মূলে
করিতে প্রণাম?
কে শিখাল ঋতুভেদ, চন্দ্ৰ-সূর্য মেঘে
দেব-দেবী নাম?
৫
কৈশোরে কাহার সনে মৃত্তিকা কর্ষণে
হইনু বাহির?
মধ্যাহ্নে কে দিল পাত্রে শালি অন্ন ঢালি,
দধি-দুগ্ধ-ক্ষীর?
সায়াহ্নে কুটির দ্বারে কার কণ্ঠ সাথে
নিবিদ উচ্চারি?
কার আশীর্বাদ লয়ে অগ্নি সাক্ষী করি
হইনু সংসারী?
কে দিল ঔষধি রোগে ক্ষতে প্রলেপন -
স্নেহে অনুরাগে?
কার ছন্দে – সোম গন্ধে – ইন্দ্র অগ্নি বায়ু -
দিল যজ্ঞ ভাগে?
৬
যৌবনে সাহায্যে কার নগর পত্তন,
প্রাসাদ নির্মাণ ?
কার ঋক্ সাম যজুঃ চরক সুশ্রুত,
সংহিতা পুরাণ?
কে গঠিল দুর্গ, সেতু, পরিখা, প্রণালী,
পথ, ঘাট, মাঠ?
কে আজ পৃথিবীরাজ – জলে স্থলে ব্যোমে
কার রাজ্যপাট?
পঞ্চভূত বশীভূত প্রকৃতি উন্নীত
কার জ্ঞানে বলে?
ভুঞ্জিতে কাহার রাজ্য – জন্মিলেন হরি
মথুরা কোশলে?
৭
প্রবীণ সমাজ পদে, আজি প্রৌঢ় আমি
জুড়ি দুই কর,
নমি, হে বিবর্ত-বুদ্ধি! বিদ্যুৎ-মোহন,
বজ্রমুষ্টিধর!
চরণে ঝটিকাগতি— ছুটিছ উধাও
দলি নীহারিকা ।
উদ্দীপ্ত তেজসনেত্র – হেরিছ নির্ভয়ে
সপ্তসূর্য শিখা ।
গ্রহে গ্রহে আবর্তন –গভীর নিনাদ
শুনিছ শ্রবণে?
দোলে মহাকাল - কোলে অণু পরমাণু
বুঝিছ স্পৰ্শনে ?
৮
নমি, হে সার্থক কাম! স্বরূপ তোমার
নিত্য অভিনব !
মর দেহে নহ মর, অমর অধিক
স্থৈর্য ধৈর্য তব ?
লয়ে সলাঙ্গুল দেহ, স্থূলবুদ্ধি তুমি
জন্মিলে জগতে!
শুষিলে সাগর শেষে, রসাইলে মরু
উড়ালে পর্বতে!
গড়িলে আপন মূর্তি – দেবতালাঞ্ছন
কালের পৃষ্ঠায় !
গড়িছ ভাঙিছ তর্কে, দর্শনে, বিজ্ঞান
আপন স্রষ্টায় ।
৯
নমি তোমা নরদেব! কী গর্বে গৌরবে
দাঁড়িয়েছ তুমি!
সর্বাঙ্গে প্রভাতরশ্মি, শিরে চূর্ণ মেঘ,
পদে শল্পভূমি ।
পশ্চাতে মন্দির-শ্রেণি, সুবর্ণ কলস,
ঝলসে কিরণে;
কলকণ্ঠ-সমুখিত নবীন উদ্গীথ
গগনে পবনে।
হৃদয়-স্পন্দন সনে ঘুরিছে জগৎ
চলিছে সময়;
ভ্রূভঙ্গে – ফিরিছ সঙ্গে – ক্রমব্যতিক্রম -
উদয়-বিলয় ।
১০
নমি আমি প্রতিজনে, আদ্বিজ-চণ্ডাল,
প্রভু, ক্রীতদাস!
সিন্ধুমূলে জলবিন্দু, বিশ্বমূলে অণু;
সমগ্রে প্রকাশ!
নমি কৃষি-তন্তুজীবী, স্থপতি, তক্ষক,
কর্ম, চর্মকার!
অদ্রিতলে শিলাখণ্ড – দৃষ্টি অগোচরে,
বহ অদ্রি-ভার!
কত রাজ্য, কত রাজা গড়িছ নীরবে
হে পূজ্য, হে প্রিয়!
একত্বে বরেণ্য তুমি, শরণ্য এককে, -
আত্মার আত্মীয়।
অক্ষয়কুমার বড়াল ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার চোরাবাগান এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর পিতার নাম কালীচরণ বড়াল । কলকাতার হেয়ার স্কুলে তিনি পড়াশোনা শুরু করেন। কিন্তু সেখানে অধ্যয়ন শেষ না-করেই কর্মজীবনে চলে যান। কর্মজীবনে তিনি ব্যাংক ও ইন্সিওরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ করতে না পারলেও নিজের চেষ্টায় তিনি প্রভূত জ্ঞান অর্জন করেন। ১২৮৯ বঙ্গাব্দে ‘বঙ্গদর্শন' পত্রিকার অগ্রহায়ণ সংখ্যায় তাঁর প্রথম কবিতা “রজনীর মৃত্যু” প্রকাশিত হয়। অক্ষয়কুমারের কাব্যে আবেগের আতিশয্যের চেয়ে ভাবগত সংহতি ও বুদ্ধিদীপ্ত কল্পনাই প্রধান। তাঁর কাব্যে ইংরেজ কবি ব্রাউনিং-এর বিশেষ প্রভাব আছে। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘প্রদীপ’ । অন্যান্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে : ‘কনকাঞ্জলি’, ‘ভুল’, ‘শঙ্খ’, ‘এষা’। এছাড়াও তাঁর কিছু অনুবাদ কবিতা ও গান রয়েছে। অক্ষয়কুমার বড়াল ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৯এ জুন মৃত্যুবরণ করেন।
মরুৎ - বাতাস ।
গরুড় - পুরাণে বর্ণিত পাখির রাজা ও বিষ্ণুর বাহন।
শ্বাপদ - (কুকুরের মতো পা আছে এমন) হিংস মাংসাশী পশু ।
ব্যাদানি - হা করে। প্রসারিত করে।
লাঙ্গুল - পশুর লেজ। পুচ্ছ।
শ্যেন - একজাতীয় শিকারি পাখি। বাজপাখি।
লগুড় - ছোট লাঠি । গদা।
কে তাহরে উদ্ধারিল? - প্রকৃতি প্রদত্ত বুদ্ধি ও শক্তির সাহায্যে মানুষ নিজেই নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করেছে – এই হচ্ছে কথাটির তাৎপর্য।
পত্রপুট - পাতা দিয়ে তৈরি পাত্র। পাতার ঠোঙা।
শৈশবে - কবি মানবসভ্যতার তিনটি স্তর নির্দেশ করেছেন। এর প্রথম স্তর হচ্ছেশৈশব। এ সময় মানুষের সামাজিক জীবনের সূচনা হয়। মানুষ পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল ও পরস্পরকে সহযোগিতা করতে শেখে ।
ভ্ৰমি - ভ্রমণ করে। বিচরণ করে, বেড়িয়ে।
ধনুর্বেদ - তির নিক্ষেপ কৌশল সংক্রান্ত জ্ঞান বা বিদ্যা। প্রাচীন অস্ত্রবিদ্যা ।
কাষ্ঠে কাষ্ঠে অগ্নি জ্বালি - মানুষ যখন থেকে আগুন জ্বালাতে শিখেছে তখন থেকেই সভ্যতার প্রথম ধাপে পা দিয়েছে।
কে শিখাল...করিতে প্রণাম - প্রকৃতির রহস্য ও বিস্ময়কে কেন্দ্র করে প্রথম ধর্মচেতনার উন্মেষ। এই
আদি ধর্মবিশ্বাস ছিল মূলত প্রাকৃতিক শক্তির আরাধনা (Natural religion)।
বহিত্র - নৌকা। পোত । বৈঠা । দাঁড়।
কুর্দন - আনন্দে লাফালাফি করা ।
কৈশোরে - মানবসভ্যতার দ্বিতীয় স্তরকে কবি কৈশোর বলে অভিহিত করেছেন। ভারতীয় বৈদিক যুগেরও আদিকালের লক্ষণ এখানে স্পষ্ট । এই স্তবকের নিবিদ, ইন্দ্ৰ, অগ্নি, যজ্ঞভাগ ইত্যাদি শব্দ লক্ষণীয়। এসব শব্দ বৈদিক সাহিত্যেই প্রথম ব্যবহৃত হয়েছে।
নিবিদ - বৈদিক মন্ত্রবিশেষ ।
ইন্দ্ৰ - হিন্দু পুরাণে বর্ণিত দেবতাদের রাজা ।
অগ্নি - আগুন। বৈদিক দেবতা বিশেষ ।
বায়ু - বাতাস। অন্তরিক্ষের দেবতা ।
যজ্ঞভাগ - যজ্ঞে যা আহুতি দেওয়া হতো তার এক-এক অংশ এক-এক দেবতার প্রাপ্য বলে বিবেচিত হয়। এটাই যজ্ঞভাগ ।
যৌবনে - মানবসভ্যতার এ পর্যায়ে মানুষের বিদ্যা, বুদ্ধি, সৃষ্টিক্ষমতা ও অবদানের অসাধারণত্ব লক্ষণীয়। কবি চিকিৎসাবিজ্ঞান, সমাজ শাসনব্যবস্থা, সাহিত্য, ইতিহাস, প্রকৌশলবিজ্ঞানের কথা এখানে উল্লেখ করেছেন। তবে বিজ্ঞানের কল্যাণেই মানুষ প্রকৃতির ওপর সার্বিক আধিপত্য বিস্তারে সক্ষম হয়েছে।
ঋক্ - অন্যতম বেদ গ্রন্থ। হিন্দু পুরাণ অনুসারে ব্রহ্মার চার মুখ থেকে চারটি বেদের সৃষ্টি। এগুলো হলো : ঋক্, সাম, যজুঃ, অথর্ব।
যজুঃ - যজুর্বেদ। চতুর্বেদের অন্যতম বেদ।
চরক - প্রাচীন ভারতবর্ষের চিকিৎসক ঋষি এবং চিকিৎসাশাস্ত্র আয়ুর্বেদপ্রণেতা।
সুশ্রুত - চিকিৎসাশাস্ত্র আয়ুর্বেদের রচয়িতা জনৈক প্রাচীন ঋষি। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থের নাম ‘সুশ্রুত- সংহিতা'।
সংহিতা - যেখানে কোনো বিষয় সংকলিত বা সংহত করা হয়। যেমন : ঋগ্বেদ-সংহিতা, মনু-সংহিতা। প্রত্যেক বেদের মন্ত্রভাগ কিংবা প্রথম ও প্রধান অংশ ।
পুরাণ - প্রাচীন ইতিবৃত্ত ও কিংবদন্তিমূলক ধর্মশাস্ত্র। যেমন : বিষ্ণুপুরাণ, পদ্মপুরাণ ইত্যাদি ।
পরিখা - দুর্গ ইত্যাদির চার পাশের গভীর খাত। গড়খাই ।
প্ৰণালী - দুই বৃহৎ জলভাগকে সংযুক্ত করে এমন সংকীর্ণ জলভাগ ।
ব্যোম - আকাশ ।
পঞ্চভূত - প্রাচীন ধারণা অনুসারে জগৎ সৃষ্টির পাঁচটি মূল উপাদান : ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ, ব্যোম ।
ভুঞ্জিতে - ভোগ করতে।
হরি - নারায়ণ। বিষ্ণু । কৃষ্ণ ।
মথুরা - উত্তর প্রদেশের প্রাচীন এ নগরী শ্রীকৃষ্ণের লীলাভূমি এবং হিন্দুদের তীর্থস্থান।
কোশলে - প্রাচীন অযোধ্যা রাজ্যে।
জন্মিলেন হরি মথুরা কোশলে - হিন্দু পুরাণ মতে, মানবসভ্যতার মহিমায় আকৃষ্ট হয়ে স্রষ্টা মানব অবতারের রূপ নিয়ে মথুরায় কৃষ্ণ হয়ে এবং কোশলে রামচন্দ্র হয়ে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রবীণ সমাজ পদে - মানবসভ্যতার প্রৌঢ়ত্ব পর্বে মানুষ এক বিশাল মহিমায় উত্তীর্ণ হয়েছে। বিশাল সমাজের শক্তিতে মানুষ অপরিসীম শক্তির অধিকারী হয়েছে। এই স্তবকে কবি তারই গৌরবকীর্তন করেছেন। এই স্তবকে প্রধানত পদার্থবিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে মানুষ যেসব শক্তি অর্জন করেছে সেগুলোর উল্লেখ আছে ।
বিবর্ত-বুদ্ধি - মানুষের জ্ঞানশক্তি ক্রমপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ ও বিকশিত হয়েছে।
বিদ্যুৎ-মোহন - বিদ্যুৎকে বা তড়িৎশক্তিকে যে মুগ্ধ ও বশীভূত করেছে।
বজ্রমুষ্টিধর - বজ্রকে যে হাতের মুঠোয় ধরতে সক্ষম হয়েছে।
নীহারিকা - দূরতম নক্ষত্রপুঞ্জ যা তুষারের মতো দেখায় ।
চরণে ঝটিকাগতি... দলি নীহারিকা - মানুষের চলার গতি সীমিত। কিন্তু বিজ্ঞানের শক্তিতে মানুষ মহাবিশ্বের নক্ষত্রলোকে যাওয়ার গতি অর্জন করেছে।
তেজসনেত্র - দীপ্তিময় চোখ ।
উদ্দীপ্ত তেজসনে ...সপ্তসূর্য শিখা জ্বলন্ত - মানুষের স্বাভাবিক দৃষ্টির সীমা খুব বেশি নয়। কিন্তু টেলিস্কোপ ব্যবহার করে মানুষ সূর্যের মতো বিভিন্ন নক্ষত্রও পর্যবেক্ষণ করার ক্ষমতা অর্জন করেছে ।
গ্রহে গ্রহে... শুনিছ শ্রবণে - মানুষ বিজ্ঞানের সাহায্যে মহাজাগতিক ধ্বনি সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করতে
সক্ষম হয়েছে।
দোলে মহাকাল-কোলে ..বুঝিছ স্পৰ্শনে - মানুষ জগতের সৃষ্টি রহস্য উন্মোচনে অণু-পরমাণুর নিত্যগতিশীল বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা অর্জন করতে পেরেছে।
নমি, হে সাৰ্থক কাম - মানুষের ইচ্ছা কর্ম ও সৃজনের সাফল্যের জন্য কবি মানুষের বন্দনা করছেন ।
মরদেহে নহ মর - মানুষ মরণশীল । কিন্তু কর্ম অবদানে মানুষ অমরত্বের মহিমা অর্জন করেছে।
সলাঙ্গুল - লেজসহ ।
লয়ে সলাঙ্গুল দেহ - লেজবিশিষ্ট বানরজাতীয় প্রাণীর বিবর্তিত ও বিকশিত রূপই বর্তমান মানুষ ।
রসাইলে মরু - জলসেচে মরুভূমির মরুময়তা ঘুচিয়ে তাকে উর্বর ও রসযুক্ত করেছে মানুষ।
গড়িলে আপন মূর্তি দেবতা-লাঞ্ছন - মানবসভ্যতার বিকাশের ফলে জ্ঞান, বুদ্ধি, শক্তি ও অবদানের দিক থেকে
মানুষের যে বিশাল মহিমাময় মূর্তি গড়ে উঠেছে তার কাছে দেবতার মহিমা ম্লান ও খাটো হয়ে গেছে।
নরদেব - মানবদেবতা। সর্বমানবের শক্তি ও মহিমার এক প্রতীকীরূপ।
শল্পভূমি - তৃণক্ষেত্র। কচি ঘাসে আচ্ছাদিত মাঠ ।
উদগীথ - বেদমন্ত্র । বৈদিক স্তোত্রগান ।
কলকণ্ঠ সমুত্থিত...গগনে পবনে - আকাশে বাতাসে দেবতার মহিমাজ্ঞাপক মন্ত্রের জায়গায় মানুষের মহিমাকীর্তনসূচক নতুন মন্ত্রগীতি অজস্র কণ্ঠে গীত হচ্ছে।
ক্রম-ব্যতিক্রম - নিয়ম ও অনিয়ম।
উদয়-বিলয় - সৃষ্টি ও ধ্বংস।
হৃদয়-স্পন্দন সনে... উদয়-বিলয় - পৃথিবীতে মানুষের ভূমিকা এত ব্যাপক ও অনিবার্য হয়ে উঠেছে যে, নিয়ম ও অনিয়ম, সৃষ্টি ও ধ্বংস সবই মানুষের নিয়ন্ত্রণে চলছে বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
আদ্বিজ-চণ্ডাল - ব্রাহ্মণ থেকে চণ্ডাল পর্যন্ত। সর্বস্তরের মানুষ।
নমি আমি...প্রভু, ক্রীতদাস - সর্বস্তরের সকল মানুষকে কবি বন্দনা করেছেন। এ স্তবকে কবি মানবতার মহিমাকে স্পষ্টভাবে সমুন্নত করেছেন।
কৃষি-তন্ত্রজীবী - কৃষক ও তাঁতি ।
তক্ষক - ছুতোরের কাজ ।
অদ্রি - পর্বত।
“মানব-বন্দনা” কবিতাটি সংকলিত হয়েছে অক্ষয়কুমার বড়ালের ‘প্রদীপ' কাব্যগ্রন্থ থেকে। “মানব-বন্দনা” কবিতায় কবি মানবসভ্যতার ক্রমবিকাশের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে মানুষের অবদান ও মহিমাকে তুলে ধরেছেন। কবি মানুষকেই মানুষের দেবতা বলে গণ্য করেছেন। আধুনিক বিজ্ঞানের সাক্ষ্যপ্রমাণ ও বৈজ্ঞানিক বিবর্তনবাদীর মতবাদের আলোকে এটি রচিত। পৃথিবীতে মানব সৃষ্টির রহস্যগাথা বিবৃত হয়েছে এ কবিতায় । বিবৃত হয়েছে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষ যে সভ্যতা নির্মাণ করে চলেছে তারও ইতিহাস। মানুষ তার নিজ সৃষ্টিশীল প্রতিভাবলে এই পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করেছে যে আপন কর্তৃত্ব ও মহিমা তারই বন্দনা করেছেন কবি এ কবিতায়। কবিতাটির ছন্দ অক্ষরবৃত্ত (পয়ার) । পর্ববিন্যাস : যুগল চরণের প্রথমটির পর্ব ৮/৬ এবং দ্বিতীয়টি ৬ মাত্রার। তবে অন্ত্যমিলের ভিত্তিতে এই যুগল চরণকে ২০ মাত্রার চরণ (৮।৬।৬) হিসেবে ধরাই সংগত।
আরও দেখুন...
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago