স্নেহ বা চর্বি জাতীয় খাদ্য ও ক্যালরি (পাঠ ৪-৫)

ষষ্ঠ শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বিজ্ঞান - খাদ্য ও পুষ্টি | NCTB BOOK
1.4k
Summary

স্নেহজাতীয় খাদ্য ও তার গুণাবলী

স্নেহজাতীয় খাদ্য, যা তেল বা চর্বি সমৃদ্ধ, দুই প্রকার:

  • প্রাণিজ স্নেহ: মাছের তেল, মাংসের চর্বি, ঘি, মাখন।
  • উদ্ভিজ্জ স্নেহ: সয়াবিন, বাদাম, সরিষা, তিল, জলপাই।

স্নেহের কাজ:

  1. দেহের তাপ ও কর্মশক্তি বাড়ায়।
  2. দেহের প্রোটিনকে ক্ষয় থেকে রক্ষা করে।
  3. দেহে ভিটামিন A, D, E, ও K-এর জোগান দেয়।

ক্যালরি:

১ গ্রাম পানির তাপমাত্রা ১০ সেলসিয়াস বাড়াতে ১ ক্যালরি প্রয়োজন। ১০০০ ক্যালরি = ১ কিলোক্যালরি। খাদ্য থেকে ক্যালরি উৎপন্ন হয় শর্করা, প্রোটিন ও স্নেহ পদার্থ থেকে। খাদ্যের তাপশক্তি মাপার একক হলো কিলোক্যালরি।

উচ্চ ও নিম্ন ক্যালরিযুক্ত খাদ্য:

  • উচ্চ ক্যালরিযুক্ত: ভোজ্যতেল, ঘি, মাখন, মাছের তেল।
  • নিম্ন ক্যালরিযুক্ত: চাল, কুমড়া, আলু, পালং শাক।

ক্যালরির প্রয়োজন:

প্রতিদিন প্রয়োজনীয় ক্যালরি বয়স, ওজন, দৈহিক উচ্চতা ও পরিশ্রমের ধরনের উপর নির্ভর করে।

নতুন শব্দ: ক্যালরি, প্রাণিজ স্নেহ, উদ্ভিজ্জ স্নেহ।

যেসব খাদ্যে তেল বা চর্বি জাতীয় উপাদান বেশি থাকে, এদেরকে স্নেহ জাতীয় খাদ্য বলে। প্রোটিনের মতো স্নেহ জাতীয় খাদ্য দুই প্রকার। মাছের তেল, মাংসের চর্বি, ঘি, মাখন ইত্যাদি প্রাণী থেকে পাই, এসব প্রাণিজ স্নেহ। সয়াবিন, বাদাম, সরিষা, তিল, জলপাই ইত্যাদির তেল উদ্ভিজ স্নেহ। মাংসের চর্বি, ঘি ও মাখন ইত্যাদি জমাট স্নেহ। সয়াবিন, সরিষা, তিল, জলপাই, বাদাম ইত্যাদির তেল তরল স্নেহ।

স্নেহ বা চর্বির কাজ
১. দেহের তাপ ও কর্মশক্তি বাড়ায়, ত্বকের নিচের চর্বিস্তরে দেহের তাপ ধরে রাখতে সাহায্য করে।
২. দেহের প্রোটিনকে ক্ষয় থেকে রক্ষা করে।
৩. দেহে ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে-এর জোগান দেয়।

কাজ: স্নেহ পদার্থ চেনার পরীক্ষণের জন্য এক টুকরো সাদা কাগজের উপর কয়েক ফোঁটা সয়াবিন তেল ফেলে কাগজের উপর ঘষে নাও। এবার আলোর দিকে কাগজটি ধর। কাগজের যে জায়গায় তেলের ফোঁটা ফেলা হয়েছে সে জায়গাটি স্বচ্ছ মনে হচ্ছে কী?

কাগজের উপরের স্বচ্ছ জায়গাটির ভেতর দিয়ে সামান্য আলো প্রবেশ করছে। এটা তেল বা চর্বি চেনার একটি সহজ পদ্ধতি।

ক্যালরি কী?
১ গ্রাম পানির তাপমাত্রা ১০ সেলসিয়াস বাড়াতে প্রয়োজনীয় তাপ হচ্ছে ১ ক্যালরি। ১০০০ ক্যালরি = ১ কিলোক্যালরি। শর্করা, প্রোটিন ও স্নেহ জাতীয় খাদ্য উপাদান থেকে দেহে তাপ উৎপন্ন হয়। এই তাপ আমাদের দেহের ভিতরে খাদ্যের পরিপাক, বিপাক, শ্বাসকার্য, রক্তসঞ্চালন ইত্যাদি কাজে সাহায্য করে। শারীরিক পরিশ্রমে শক্তি ব্যয় হয়। খাদ্যে শক্তি সঞ্চিত থাকে। আমরা খাবার থেকেই শক্তি পাই। খাদ্যের তাপশক্তি মাপার একক হলো কিলোক্যালরি।
যেসব খাদ্যে শর্করা, প্রোটিন ও স্নেহ পদার্থ থাকে, সেসব খাদ্য থেকে বেশি ক্যালরি পাওয়া যায়। যেসব খাদ্যে পানি ও সেলুলোজের পরিমাণ বেশি থাকে, সেসব খাদ্যে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে। তেল বা চর্বি জাতীয় পদার্থে ক্যালরির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি থাকে।

নিচের সারণিটি দেখ। এতে কয়েকটি উচ্চ ও নিম্ন ক্যালরিযুক্ত খাদ্যের তালিকা দেখানো হলো:

উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাদ্য

নিম ক্যালরিযুক্ত খাদ্য

ভোজ্যতেল

চাল কুমড়া

ঘি

বাধাকপি

মাখন

ঝিঙা

মাছের তেল

শালগম

ঘন নারকেলের দুধ

টমেটো

মাখন তোলা গুঁড়া দুধ

ডাঁটা

ভাজা চিনা বাদাম

লাউ

চিনি

পালংশাক

মধু

কলমি ডাঁটা

খেজুরের গুড়

মূলা

ছোলার ডাল

ওলকপি

সয়াবিন

ধুন্দল

শিমের বিচি

পটল

প্রতিদিন কার কত ক্যালরি বা তাপশক্তি প্রয়োজন তা নির্ভর করে প্রধানত বয়স, ওজন, দৈহিক উচ্চতা ও পরিশ্রমের ধরনের উপর।

কাজ: তোমার এলাকায় পাওয়া যায় এমন সব কম ক্যালরিযুক্ত ও বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবারের নমুনা ও তালিকার একটি চার্ট তৈরি কর।

নতুন শব্দ: ক্যালরি, প্রাণিজ স্নেহ ও উদ্ভিজ্জ স্নেহ।

Content added By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...