অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বিজ্ঞান - ব্যাপন, অভিস্রবণ ও প্রস্বেদন | NCTB BOOK

অভিস্রবণ প্রক্রিয়াটি বোঝার জন্য আমাদের যে বিষয়ের ধারণা দরকার তার মধ্যে অন্যতম হলো ভিন্ন ঘনত্ব বিশিষ্ট দুইটি দ্রবণের মধ্যে অবস্থিত পর্দার বৈশিষ্ট্য জানা। পর্দাকে সাধারণত তিনভাগে ভাগ করা যায়। যেমন, অভেদ্য পর্দা, ভেদ্য পর্দা ও অর্ধভেদ্য পর্দা।

অভেদ্য পর্দা : যে পর্দা দিয়ে দ্রাবক ও প্রাব উভয় প্রকার পদার্থের অণুগুলো চলাচল করতে পারে না তাকে অভেদ্য পর্দা বলে। যেমন- পলিথিন, কিউটিনযুক্ত কোষপ্রাচীর। ভেদ্য পর্দা : যে পর্দা দিয়ে দ্রাবক ও দ্রাব উভয়েরই অণু সহজে চলাচল করতে পারে তাকে ভেদ্য পর্দা বলে ৷ যেমন— কোষপ্রাচীর।

অর্ধভেদ্য পর্দা : যে পর্দা দিয়ে কেবল দ্রবণের দ্রাবক অণু (উদ্ভিদের ক্ষেত্রে পানি) চলাচল করতে পারে কিন্তু দ্রাব অণু চলাচল করতে পারে না তাকে অর্ধভেদ্য পর্দা বলে। যেমন— কোষপর্দা, ডিমের খোসার ভিতরের পর্দা, মাছের পটকার পর্দা ইত্যাদি।

আমরা লক্ষ করেছি যদি একটা শুকনা কিশমিশকে পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখি তাহলে সেটি ফুলে উঠে। এটি কিশমিশ দ্বারা পানি শোষণের কারণে ঘটে এবং পানি শোষণ অভিস্রবণ দ্বারা ঘটে। অভিস্রবণও এক প্রকার ব্যাপন। অভিস্রবণ কেবলমাত্র তরলের ক্ষেত্রে ঘটে এবং একটি অর্ধভেদ্য পর্দা অভিস্রবণের সময় দুটি তরলকে পৃথক করে রাখে। কিশমিশের উদাহরণ দিয়ে বিষয়টা এখানে বোঝানো হলো।

চিত্র ৩.২ : কিশমিশের সাহায্যে অভিস্রবণ পরীক্ষা

আমরা জানি দুটি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ একত্রে মিশ্রিত হলে স্বাভাবিকভাবেই এদের মধ্যে ব্যাপন সংঘটিত হয়। লক্ষ করে দেখ কিশমিশের ভিতরের পানি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে কিশমিশগুলো কুচকে গেছে। কিশমিশগুলো পানিতে রাখলে পানি শোষণ করে ফুলে উঠবে। কারণ কিশমিশের ভিতরে শর্করার গাঢ় দ্রবণ একটি পর্দা দ্বারা পানি থেকে পৃথক হয়ে আছে। ফলে শুধু পানির অণু কিশমিশের অভ্যন্তরে অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করেছে, কিন্তু শর্করা অণু এই রকম পর্দা ভেদ করে বাইরে আসতে পারছে না। এ ধরনের পর্দাকে অর্ধভেদ্য পর্দা বলে। যে প্রক্রিয়ায় একই পদার্থের কম ঘনত্ব এবং বেশি ঘনত্বের দুটি দ্রবণ অর্ধভেদ্য পর্দা দ্বারা পৃথক করা হলে দ্রাবক পদার্থের অণুগুলো কম ঘনত্বের দ্রবণ থেকে অধিক ঘনত্বের দ্রবণের দিকে যায় তাকে অভিস্রবণ বা অসমোসিস বলে (চিত্র ৩.৩)।

Content added || updated By

Promotion