অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বিজ্ঞান - ব্যাপন, অভিস্রবণ ও প্রস্বেদন | NCTB BOOK

উদ্ভিদের পানি শোষণ পদ্ধতি : মাটি থেকে পানি ও পানিতে দ্রবীভূত খনিজ লবণ উদ্ভিদ দেহের সজীব কোষে টেনে নেওয়ার পদ্ধতিকে সাধারণভাবে শোষণ বলা যেতে পারে। স্থলে বসবাসকারী উদ্ভিদগুলো মূলরোমের সাহায্যে মাটি থেকে পানি শোষণ করে। পানিতে নিমজ্জিত উদ্ভিদ সারাদেহ দিয়ে পানি শোষণ করে। স্থলজ উদ্ভিদগুলোর মূলরোম মাটির সূক্ষ্মকণার ফাঁকে লেগে থাকা কৈশিক পানি অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় নিজ দেহে টেনে নেয়।

চিত্র ৩.৫ : মূলের বিভিन অঞ্চল

 

মূলরোমের প্রাচীরটি ভেদ্য, তাই প্রথমে ইমবাইবিশন প্রক্রিয়ায় পানি শোষণ করে এবং কোষপ্রাচীরের নিচে অবস্থিত অর্থভেদ্য প্লাজমা পর্দার সংস্পর্শে আসে। মূলরোমের কোষীয় দ্রবণের ঘনত্বের তুলনায় তার পরিবেশের স্রবণের ঘনত্ব কম থাকায় পানি (দ্রাবক) কোষের মধ্যে অন্তঃঅতিপ্রবণ প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করে। মূলের বাইরের আবরণ থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সব কোষের কোষ রসের ঘনত্ব সমান নয়। কলে কোষান্তর অভিস্রবণের কারণে মূলের এক কোষ থেকে অন্য কোবে পানির গতি অব্যাহত থাকে এবং পরিশেষে পানি কান্ডের জাইলেম বাহিকার মাধ্যমে পাতায় পৌঁছায়।

ইমবাইবিশন : অধিকাংশ করেধর্মী পদার্থই পানিগ্রাহী। উদ্ভিদদেহে বিভিন্ন ধরনের কারেভধর্মী পদার্থ বিদ্যমান। যথা- স্টার্চ, সেলুলোজ, জিলেটিন ইত্যাদি। এসব পদার্থ তাদের কলয়েডধর্মী গুণের জন্যই পানি শোষণ করতে সক্ষম। কলয়েডধর্মী বিভিন্ন পদার্থ (উদ্ভিদের ক্ষেত্রে কোষপ্রাচীর) যে প্রক্রিয়ায় নানা ধরনের তরল পদার্থ (উদ্ভিদের ক্ষেত্রে পানি শোষণ করে তাকে ইমবাইবিশন বলে।

উদ্ভিদের খনিজ লবণ শোষণ পতি উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য কতগুলো খনিজ লবণের প্রয়োজন হয় । উদ্ভিদের জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ লবণের উৎস মাটির পানি। মাটি পানিতে খনিজ লবণ দ্রবীভূত অবস্থায় থাকে।

চিত্র ৩-৬ : মূলের কোষে অতিপ্রবণ প্রক্রিয়ার পানি শোষণ

 

খনিজ লবণগুলো মাটিস্থ পানিতে দ্রবীভূত থাকলেও পানি শোষণের সঙ্গে উদ্ভিদের লবণ শোষণের কোনো সম্পর্ক নেই, দুটি প্রক্রিয়াই ভিন্নধর্মী । উদ্ভিদ কখনো লবণের সম্পূর্ণ অণুকে শোষণ করতে পারে না। লবণগুলো কেবল আয়ন হিসেবে শোষিত হয়। উদ্ভিদ মাটির রস থেকে খনিজ লবণ শোষণ দুইভাবে সম্পন্ন করে। যথা- ১. নিষ্ক্রিয় শোষণ ২. সক্রিয় শোষণ।

চিত্র ৩.৭ : মূল দ্বারা পানি ও খনিজ লবণ শোষণ
Content added || updated By