নবম-দশম শ্রেণি (দাখিল) - শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা - মাদকাসক্তি ও এইডস | NCTB BOOK

মাদকাসক্তি বর্তমান সমাজের জন্য একটি বড় সমস্যা। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও মাদকাসক্ত ব্যক্তির সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে এবং তা ক্রমান্বয়ে প্রকট আকার ধারণ করছে। যারা মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে তারা তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুমুখে পতিত হয় না বটে, কিন্তু ভাই-বোন, মাদক গ্রহণের কারণে তারা নানা ধরনের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হয়। মাদকের কারণে শুধু যে মাদকাসক্ত ব্যক্তিই ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা নয়, মাদকাসক্ত ব্যক্তির মা-বাবা, ছেলে-মেয়ে, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সবার জীবনে এর প্রভাব পড়ে এবং সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা মাদকের অর্থ যোগাড় করার জন্য চুরি, ডাকাতি, খুন, রাহাজানিসহ বিভিন্ন অসামাজিক ও বেআইনি কাজকর্মে লিপ্ত হয় যা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও জাতির জন্য খুবই ক্ষতিকর। মাদকাসক্তির ভয়াবহ পরিণতি থেকে যুব সমাজসহ দেশের সবাইকে রক্ষা করতে হলে মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন ও সোচ্চার করতে হবে। মাদকদ্রব্য যাতে সহজে না পাওয়া যায় তার জন্য যে আইন আছে সে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন করে তুলতে জনমত গঠন করতে হবে।
বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে স্লোগান ব্যবহার করা ছাড়াও আরও যেভাবে মাদকের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করা যায় সেগুলো হচ্ছে-

১. রেডিও-টেলিভিশন, পত্র-পত্রিকা ইত্যাদিতে বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য গ্রহণের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরা।

২. মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও ভয়াবহতা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য প্রচার করা ।

৩. মাদকবিরোধী সভা-সমিতি, পথ নাটক, গান, কবিতা, নাটক, যাত্রা পালা, অভিনয়, র‍্যালি ইত্যাদির ব্যবস্থা করা। ৪. মসজিদ, মন্দির, গির্জায় মাদকবিরোধী ধর্মীয় বিধান তুলে ধরা ও মাদক গ্রহণের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আলোচনা এবং মাদক গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা।

৫. মাদক ও ধূমপানবিরোধী দিবস পালনসহ অন্যান্য সময়ে মাদ্রাসায় মাদকবিরোধী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা। যেমন— দলগত আলোচনা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, লিফলেট বিতরণ, পোস্টার প্রদর্শন ইত্যাদি।

৬. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন অফিস, সংস্থা, দপ্তরকে ধূমপান ও মাদকমুক্ত এলাকা ঘোষণাপূর্বক তা কার্যকর করা

৭. মাদ্রাসার খাতা, নোটবুকের মলাটে মাদকবিরোধী স্লোগান দিয়ে সকলকে সচেতন করা।

জনসচেতনতা সৃষ্টির সময় “মাদক কিছুই দেয় না বরং কেড়ে নেয় সবকিছু” এরূপ স্লোগান দিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারণা চালাতে হবে। মাদকসেবীরা মনে করে মাদক মানুষকে দুঃখ ভুলতে সাহায্য করে এবং আনন্দ দেয়— এটা একেবারেই ভুল ধারণা। মাদক বরং আরও যন্ত্রণা টেনে আনে। কাজেই পরিচিতজনের মধ্যে কেউ মাদকাসক্ত হয়ে পড়লে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সবাই মিলে তাকে এই সর্বনাশা পথ থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা উচিত।

কাজ-১ : এমন একটি স্লোগান তৈরি কর যার সাহায্যে মাদকের বিরুদ্ধে জনগণকে আকৃষ্ট ও সচেতন করা যাবে।

কাজ-২ : তোমার এলাকায় ধূমপানবিরোধী প্রচারণা চালাতে তুমি কী করবে?

 



 

Content added By