একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র | NCTB BOOK

সংগঠিতকরণের সমার্থক শব্দ হলো সুসংবদ্ধকরণ, গঠনকরণ, নির্মাণ, সংগঠন ইত্যাদি । অর্থাৎ বিভিন্ন উপাদানকে বা আলাদা আলাদা কোনোকিছুকে যখন একত্রে সুসংবদ্ধ ও সম্পর্কযুক্ত করা হয় তখন তাকে সংগঠিতকরণ বলে । কাজ বিবেচনায় সংগঠন ও সংগঠিতকরণ একই অর্থে ব্যবহৃত হয় । অন্যদিকে গুণ বা ভাব অর্থে কিছু লোক মিলে গড়ে তোলা দল বা প্রতিষ্ঠানকে সংগঠন বলে । কিছু লোক যখন একই উদ্দেশ্যে একত্রিত হয় তখন তাদের মধ্যে একটা সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। সেখানে কেউ নেতা ও কেউ অনুসারী বা কেউ ঊর্ধ্বতন (Boss) ও কেউ অধস্তন (Subordinate) হিসেবে কাজ করে । এক্ষেত্রে প্রত্যেকের কাজ, দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব নির্দিষ্ট করে দেয়া হয় । কে কার নিকট থেকে কাজের নির্দেশ লাভ করবে ও কার নিকট জবাবদিহি করবে তাও বলে দেয়া হয় । এভাবে সংঘবদ্ধ ব্যক্তিবর্গের মধ্যে একটা সম্পর্কের কাঠামো গড়ে ওঠে । সংঘবদ্ধ ব্যক্তিবর্গের মধ্যকার এরূপ সম্পর্কের কাঠামোকে তাই সংগঠন নামে অভিহিত করা হয় ।

'Organising' শব্দটি 'Organism' হতে এসেছে। যার অর্থ হলো কোনো পৃথক সত্তাবিশিষ্ট অংশগুলোকে এতখানি সমন্বিত করা যার ফলে প্রত্যেক অংশের পারস্পরিক সম্পর্কের মধ্য দিয়ে সামগ্রিক (Whole) কোনো কিছুর সৃষ্টি হয় । শিশুরা যেমন কতকগুলো প্লাস্টিকের বিল্ডিং তৈরির উপযোগী ছোট ছোট অংশকে একত্রে জুড়ে দিয়ে খেলনা বাড়ি তৈরি করে, একজন সংগঠকও তেমনি বিভিন্ন উপায়-উপকরণকে একত্রিত করে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে । খেলনার ছোট ছোট অংশ হতে কার্যত কোনো কিছুই অনুমান করা যায় না, কিন্তু যখন এগুলোকে একত্রে জুড়ে দিয়ে তাদের সম্পর্ক স্থাপন করা হয়, তখনই তা একটা বাড়ির রূপ ধারণ করে । ঠিক একইভাবে একটি প্রতিষ্ঠানে উপায়-উপকরণ যা থাকে তা আলাদাভাবে কোনো কিছুই সৃষ্টি করতে পারে না। যখন এগুলোকে কাজ অনুযায়ী আলাদা ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে প্রত্যেক কাজের জন্য উপায়-উপকরণ নির্দিষ্ট করা হয় এবং এ কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের দায়-দায়িত্ব ও তাদের মধ্যকার সম্পর্ক নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয় তখন তা লক্ষ্য অর্জনের জন্য উপযোগী একটা প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের রূপলাভ করে । তাই উদ্দেশ্য অনুযায়ী কাজকে বিভাজন, প্রতিটা বিভাগের দায়িত্ব-কর্তৃত্ব নির্দিষ্টকরণ ও অর্পণ এবং তাদের মধ্যে সম্পর্ক নির্দিষ্ট করার কাজকেই সংগঠন নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে ।

Content added By