একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র | NCTB BOOK

জনাব তালুকদার পারিবারিক সদস্যদের নিয়ে একটা কোম্পানি গঠনপূর্বক নিজেই এম.ডির দায়িত্ব নিয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন । তার অধীনে উৎপাদন ব্যবস্থাপক ও বিক্রয় ব্যবস্থাপক স্ব-স্ব বিভাগের সর্বময় কর্তা হিসেবে বিভাগ চালিয়েছেন । কিন্তু প্রতিষ্ঠান বড় হওয়ায় এখন আরও কিছু বিভাগ খুলেছেন । উৎপাদন ব্যবস্থাপক ও বিক্রয় ব্যবস্থাপকদ্বয়ের একার পক্ষে বিভাগের সকল কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন কষ্টসাধ্য মনে করে প্রত্যেকের অধীনে একজন করে সহকারী ব্যবস্থাপক নিয়োগ করেছেন । এতে উৎপাদন ব্যবস্থাপক ও বিক্রয় ব্যবস্থাপকের কাজের ভার কিছুটা কম হওয়ায় তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন । এক্ষেত্রে জনাব তালুকদারের প্রথম গড়া সংগঠন কাঠামো ছিল সরলরৈখিক সংগঠন কিন্তু পরে সহকারী নিয়োগ দেয়ায় সংগঠন কাঠামোর প্রকৃতিতে পরিবর্তন এসেছে এবং তা সরলরৈখিক ও পদস্থ কর্মী সংগঠনে রূপায়িত হয়েছে ।

যে সংগঠন কাঠামোতে কর্তৃত্ব রেখা ওপর থেকে নিচের দিকে সরলরেখার আকারে নেমে আসে এবং সরলরৈখিক নির্বাহীকে সহযোগিতা করার জন্য সহযোগী বা পদস্থ কর্মী নিয়োগ করা হয় তাকে সরলরৈখিক ও পদস্থকর্মী সংগঠন বলে । উৎপাদন ব্যবস্থাপককে সহযোগিতা করার জন্য সহকারী উৎপাদন ব্যবস্থাপক নিয়োগ বা এরূপ পদ সৃষ্টি এ ধরনের সংগঠনের উদাহরণ । কলেজগুলোতে প্রিন্সিপ্যালকে সহযোগিতা করার জন্য ভাইস প্রিন্সিপ্যাল নিয়োগ এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে গণ্য । মূলত সরলরৈখিক সংগঠনের মধ্যদিয়ে সংগঠন কাঠামোর অগ্রযাত্রা শুরু । পরবর্তীতে কাজের পরিসর বৃদ্ধি পাওয়ায় দেখা যায় যে, একজন উৎপাদন ব্যবস্থাপক বা বিক্রয় ব্যবস্থাপকের পক্ষে বিভাগীয় সকল কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন সম্ভব হচ্ছে না । আবার একই সাথে দু'জন উৎপাদন ব্যবস্থাপকও নিয়োগ দেয়া সম্ভব নয় । তাই কর্মভারগ্রস্ত এরূপ ব্যবস্থাপকদের সহযোগিতার জন্য সহযোগী, সহকারী বা পদস্থকর্মী নিয়োগ দান শুরু হয় । এতে যে নতুন সংগঠন কাঠামো রূপলাভ করে তাই সরলরৈখিক ও পদন্তকর্মী সংগঠন নামে অভিহিত। তুলনামূলকভাবে বড় ও বিস্তৃত কার্যক্ষেত্রে এরূপ সংগঠন কাঠামো ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় । পদস্থ কর্মী (Staff) এর সহযোগিতার ওপর এক্ষেত্রে বিশেষ জোর দেয়ার কারণে একে অনেকেই পদস্থকর্মী সংগঠন (Staff organization) নামে অভিহিত করেন। নিম্নে এরূপ সংগঠন কাঠামো রেখাচিত্রে প্রদর্শিত হলো : 

চিত্র : সরলরৈখিক ও পদস্থ কর্মী সংগঠন কাঠামো চিত্র

সরলরৈখিক ও পদস্থ কর্মী সংগঠনের বৈশিষ্ট্য :

১. এরূপ সংগঠনে দু'ধরনের কর্মী থাকে; একদল সরলরৈখিক কর্মী বা নির্বাহী ও অন্যদল উপদেষ্টা কর্মী;

২. দু'ধরনের কর্মী থাকায় এক্ষেত্রে দু'ধরনের কর্তৃত্ব বিরাজ করে; যথা- সরলরৈখিক কর্তৃত্ব ও সহযোগী কর্তত্ব;

৩. এক্ষেত্রে সংগঠনের কর্তৃত্বরেখা ব্যবস্থাপনার শীর্ষস্তর হতে ক্রমান্বয়ে নিম্নস্তরে নেমে আসে;

৪. এক্ষেত্রে সরলরৈখিক কর্মকর্তার পাশে উপদেষ্টা কর্মীগণ প্রয়োজনীয় অবস্থান গ্রহণ করে;

৫. দু'ধরনের কর্মী থাকলেও সরলরৈখিক কর্মকর্তাগণই এক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার মূল দায়িত্বে নিয়োজিত থাকে এবং 

৬. পদস্থ বা সহযোগী কর্মীদের কাজ হলো সরলরৈখিক কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও উপদেশ প্রদান এবং কার্যক্ষেত্রে সহযোগিতা করা ।

উল্লেখ্য উপরের চিত্রে যদি মহা-ব্যবস্থাপকের অধীনে সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক এবং তার অধীনে বিভাগীয় ব্যবস্থাপকগণ থাকতেন তবে সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক সরলরৈখিক নির্বাহী গণ্য হতেন ।

Content added By