একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র | NCTB BOOK

বৃহদায়তন প্রতিষ্ঠানসমূহে সরলরৈখিক ও পদস্থ কর্মী সংগঠনের ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ করা গেলেও এরূপ সংগঠন ত্রুটিমুক্ত এ কথা বলা যায় না। প্রকৃতিগত কারণেই এক্ষেত্রে যেমনি কিছু সমস্যা লক্ষণীয় তেমনি দু- ধরনের নির্বাহীদের কর্তৃত্ব প্রয়োগে ব্যক্তিগত সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা অনেক সময়ই এক্ষেত্রে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দেয় । নিম্নে এরূপ সংগঠনের অসুবিধাসমূহ আলোচনা করা হলো:

১. ব্যয় বৃদ্ধি-(Increase in expenditure) : এ ধরনের সংগঠনে সরলরৈখিক নির্বাহীকে সহযোগিতা করার জন্য প্রয়োজনে এক বা একাধিক পদস্থ কর্মী নিয়োগ করা হয়। অনেক সময় পদস্থ কর্মী নিয়োগকে নির্বাহী নিজের জন্য অধিক মর্যাদাকর গণ্য করে । ফলে প্রয়োজনের বাইরেও পদস্থ কর্মী নিয়োগের প্রবণতা লক্ষ করা যায় । এতে প্রতিষ্ঠানে ব্যয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় ।

২. সহযোগীদের কর্তৃত্ব ও কার্য বিষয়ে অস্পষ্টতা (Lack of clarity in delegation of authority and responsibility) : এক্ষেত্রে সরলরৈখিক নির্বাহীদের কর্তৃত্ব ও দায়িত্ব সুস্পষ্টভাবে সংগঠন কাঠামোতে বর্ণিত হলেও পদস্থ কর্মীদের ক্ষেত্রে তা থাকে না। পদস্থ কর্মীর কাজ হয় নির্বাহীর ইচ্ছা মোতাবেক প্রয়োজনীয় কাজ সম্পাদন করা । ফলে তার কাজে অস্পষ্টতা ও দ্বিধা-দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় এবং সমস্যা দেখা দেয়।

৩. বিশেষজ্ঞ কর্মীদের উপেক্ষিত হওয়ার আশঙ্কা (Chance of being neglected of the expertise) : এরূপ সংগঠনে সরলরৈখিক নির্বাহীরা সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী থাকে। পদস্থ বা বিশেষজ্ঞ কর্মীদের কার্যত কোনো কর্তৃত্ব এতে থাকে না। সরলরৈখিক নির্বাহীদের দেয়া কাজ বা দায়-দায়িত্ব তারা পালন করে এবং উক্ত নির্বাহীর নিকটই কাজের জন্য জবাবদিহি করে। বিশেষজ্ঞ কর্মী কোনো উপদেশ বা পরামর্শ দিলেও তা মানতে নির্বাহী বাধ্য থাকে না । ফলে বিশেষজ্ঞ কর্মী বা উপদেষ্টারা অনেক সময়ই উপেক্ষিত হয় ।

৪. কর্মকর্তাদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি (Generating conflict among the executives) : এরূপ সংগঠনে অনেক সময় স্বেচ্ছাচারী নির্বাহী ও উপেক্ষিত বিশেষজ্ঞ কর্মীর মধ্যে মনোমালিন্য লক্ষ করা যায় । যা সহযোগিতার পরিবর্তে অসহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করে ও জটিল পরিবেশের জন্ম দেয়। আমাদের দেশের অনেক প্রতিষ্ঠানেই গ্রুপিং-লবিং এর বড় কারণ হলো উভয় ধরনের কর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বা মনোমালিন্য ।

৫. সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব (Delay in decision making) : এরূপ সংগঠনে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় নির্বাহীগণ অনেক সময়ই উপদেষ্টা কর্মীদের সাথে শলা-পরামর্শে অধিক সময় ব্যয় করে বা তাদের ওপর নির্ভর করে যা ক্ষেত্রবিশেষে ত্বরিত সিদ্ধান্ত গ্রহণে অহেতুক বিলম্বের কারণ হয় ।

৬. বিশেষজ্ঞ কর্মীদের যোগ্যতার বিকাশে বাধা (Barrier to the flourish of the quality of expertise) : এরূপ সংগঠনে বিশেষজ্ঞ কর্মীগণ দায়িত্ব-কর্তৃত্ব ছাড়াই নির্দিষ্ট গণ্ডিতে সহায়তাকারী হিসেবে কার্যে নিয়োজিত থাকায় অধিক দায়িত্ব, কর্তৃত্ব ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে তারা নিরুৎসাহবোধ করে । ফলে তাদের যোগ্যতার বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হয়।

Content added By