একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র | NCTB BOOK

কমিটি কতিপয় সুবিধার কারণে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হলেও এর অসুবিধার পরিমাণও কম নয় । আজকাল সাধারণভাবেই মনে করা হয়, কোনো কাজে বা সিদ্ধান্তে বিলম্ব করতে চাইলে এর সহজ উপায় হলো একটা কমিটি করে দেয়া । এ ছাড়া নানানভাবেই কমিটিকে সমালোচনা করা হয়ে থাকে । যে সকল অসুবিধার কারণে কমিটি সমালোচিত হয় তা নিম্নরূপ :

১. বিভক্ত দায়িত্ব (Divided responsibility) : দায়িত্ব এককভাবে কারও ওপর নির্দিষ্ট না করে একাধিক ব্যক্তির ওপর তা অর্পিত হলে একে বিভক্ত দায়িত্ব বলে । কমিটির ক্ষেত্রে কার্যকরণের দায়-দায়িত্ব সকল সদস্যের সমান । তাই এতে “সকলের দায়িত্ব অর্থ কারও দায়িত্ব নয়” (Everybody's responsibility is nobody's responsibility)- প্রবাদ এর বাস্তব প্রতিফলন ঘটে। কমিটির কাজের বাইরে এর সদস্যদের দায়িত্ব নির্দিষ্ট থাকায় তারা সেই কাজের ব্যাপারে যতটুকু আন্তরিক হয় সামষ্টিক দায়িত্বের ক্ষেত্রে তা হয় না । যার কারণে লক্ষ্যার্জন ব্যাহত হয় ।

২. ধীরগতিসম্পন্ন (Slowness) : নির্বাহীগণ কাজের ফাঁকে মিটিং-এ বসাকে কষ্টকর বাড়তি কাজ মনে করে । ফলে মিটিং ডাকার পরও তা হয় না বা দেরিতে শুরু হয় । নানা কথাবার্তা, বাক-বিতণ্ডা, দ্বিমত, সভা মুলতবি ইত্যাদি কারণে কমিটির কাজ অত্যন্ত ধীরগতিতে চলে । ফলশ্রুতিতে ফলাফল শুভ হয় না ।

৩. সিদ্ধান্তহীনতার প্রতি ঝোঁক (Tendency towards indecision) : সিদ্ধান্তহীনতার প্রতি ঝোঁক প্রবণতা কমিটির কাজে আরেকটি বড় বাধা । একদিকে কমিটির মিটিং-এ বসায় এক সমস্যা অন্যদিকে মিটিং-এ “নানা মুনির নানা মত” তাই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো অনেকক্ষেত্রেই জটিল হয়ে পড়ে । বিভক্ত দায়িত্বের কারণে এরূপ অবস্থা সবার জন্য তেমন মাথাব্যথার কারণ হয় না। ফলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো অসম্ভব হয় ।

৪. আপসমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণের আশঙ্কা (Danger of compromising decision) : কমিটির আলোচনায় মতামতের ভিন্নতা, সংখ্যালঘু সদস্যদের বাড়াবাড়ি এবং এ ছাড়া সিদ্ধান্তের পক্ষে সকল সদস্যের মত লাভের প্রবণতা স্বাভাবিকভাবেই আপসমূলক সিদ্ধান্তের জন্ম দেয় । আর এরূপ আপসমূলক সিদ্ধান্ত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভালো ফল দেয় না ।

৫. নিজস্ব মতামত প্রতিষ্ঠার প্রবণতা (Tendency to establish own opinion) : কমিটির সভায় সকল সদস্যের সমান অধিকার থাকায় সদস্যদের মতামত প্রতিষ্ঠার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। সভায় প্রত্যেক সদস্যের অধিকার সমান হওয়ায় কেউ কথা বলতে চাইলে তাকে বাধা দেয়া যায় না । কমিটির সভাপতির মধ্যে এরূপ প্রবণতা সুদৃঢ় হলে কমিটির কাজে আরো মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয় ।

Content added By