Blog

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

এআই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিষয়ে বছর দুয়েক আগে প্রথম আলাপচারিতা হয়েছিলো আমেরিকা প্রবাসি এক বড় ভাইয়ের সাথে৷ উনি তখন যা বলেছিলেন তার কিছুই আমার এন্টেনায় ধরেনি৷   সাম্প্রতিক সময়ে এবিষয়ে বিস্তর আলোচনা হচ্ছে বিশ্বজুড়ে ৷ এই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে ChatGPT. সিলিকন ভ্যালির ওপেনএআই উদ্ভাবিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই ইনোভেশন সমগ্র পৃথিবীতে আলোড়ন তৈরি করেছে ৷

বিষয়টি সম্পর্কে জানার ও বোঝার জন্য ইন্টারনেট ঘেটে একটু পড়াশোনা করলাম এবং দেখলাম এবিষয়টির সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকগুলো ভিডিও কনটেন্ট ৷ পরিবর্তিত পৃথিবীতে এই ইনোভেশন একদিকে যেমন মানুষের কাজকে সহজ ও গতিশীল করবে তেমনি কোটি মানুষের কর্ম হারানোর পথ তৈরি হবে এই প্রযুক্তির হাত ধরে ৷ ফলে লক্ষ কোটি মানুষ বেকার হয়ে পরবে এমনকি খোদ গুগল এর মতো জায়ান্ট কোম্পানি আশংকায় আছে আগামীতে তারা কিভাবে এই চ্যালেঞ্জকে মিটিগেট করবে ৷

বলা হচ্ছে ইন্টারনেট আবিষ্কারের পর থেকে আজ অবধি কোনো স্টার্টআপ শুরুতেই এতো ইউজার পায়নি যা ChatGPT মাত্র পাঁচ দিনে পেয়েছে ৷ ChatGPT হলো এমন একটি চ্যাটবট যা মূলতঃ প্রি ট্রেইনড এবং এর মাধ্যমে যে শুধু রিসার্চ আর্টিকেল, বই, কবিতা, গ্রাফিক্সস ডিজাইন, বিজনেস মার্কেটিং, কোডিং লেখালেখি, প্রশ্নোত্তর সুবিধা পাওয়া যাবে তা নয় বরং এর মাধ্যমে কাজের ক্ষেত্রে মানুষের রিপ্লেসমেন্ট ঘটবে। এছাড়া ChatGPT কাজ করবে নন করভাসেশনাল এআই হিসেবে। যার অবশ্যম্ভাবি ফলশ্রুতি হিসেবে মিডিওকার অথবা এভারেজ সাইজ ইনটেলিজেন্ট ম্যানপাওয়ারের চাহিদা ব্যপকহারে হৃাস পাবে।

অথচ বিষ্ময়কর ব্যাপার হলো প্রযুক্তির এই অভাবনীয় অগ্রগতির ব্যাপারে আমরা এখনও নির্বিকার। এদেশে ক্রমাগতভাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে সেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দুরে থাক প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সাথে সামান্যতম সম্পৃক্ততা আছে এমন শিক্ষাক্রম নেই বরং সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হচ্ছে ইতিহাস, দর্শন অথবা সমাজবিজ্ঞান। আমরা মানি আর না মানি প্রযুক্তির এই ঢেউ এদেশেও এসে পড়বে এবং তার প্রভাব মোকাবিলা করার সামর্থ্য আমাদের নেই এবং অদূরভবিষ্যতে তৈরি হবে এমন সম্ভবনাও ক্ষীণ। এমনিতেই দেশে বেকার জনগোষ্ঠির অভাব নেই তারপর যদি এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারনে একটা বড় জনগোষ্ঠি বেকারে পরিণত হয় তাহলে সেই সংকটকে মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি, দক্ষ জনশক্তি তৈরি এবং টেক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বাংলাদেশি মেধাবীদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে মনোসংযোগ দেওয়া উচিত। মিডিয়াকেয়ার পাওয়া তথাকথিত বিজ্ঞানীদের দিয়ে ইতিহাস আর সমাজবিজ্ঞান বই লেখানো ও সম্পাদনার চেয়ে এই কাজটি অধিক গুরুত্বপুর্ণ এটা যত দ্রুত আমাদের কর্তাব্যক্তিরা বুঝবেন ততই মঙ্গল।

জুয়েল মল্লিক, বগুড়া।

289

Author

All Comments

Promotion