রেজিষ্ট্যান্স

এসএসসি(ভোকেশনাল) - রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং-১ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | | NCTB BOOK
9

যে ধর্মের জন্য পরিবাহকে ইলেকট্রন প্রবাহের পথে বাধা প্রদান করে তাকে রেজিষ্ট্যান্স বলে। যেমন পাইপ দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ার সময় কিছু না কিছু বাধা প্রাপ্ত হয়। অনুরূপ ভাবে তারের মধ্যে দিয়ে কারেন্ট প্রবাহিত হওয়ার সময় ইলেকট্রন কিছু না কিছু বাধা প্রাপ্ত হয়, সেই বাধাকে রেজিষ্ট্যান্স বলে। বাংলা ভাষায় এটাকে রোধ বলে। রেজিষ্ট্যান্সকে (ওমেগা) দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। রেজিষ্ট্যাপের একক ওহম। রেজিষ্ট্যান্স ওহম মিটার দিয়ে পরিমাপ করা হয়। 

রেজিস্টর (Resistor)

ইলেকট্রনিক্স সার্কিটের যে ডিভাইস বিদ্যুৎ প্রবাহে বাধা প্রদান করার কাজে ব্যবহার করা হয তাকে রেজিস্টর বা রোধক বলে। রেজিস্টরের মানের একক ওহম।

রেজিস্টরের প্রকারভেদ (Classification of Resistor) 

রেজিস্টর প্রধানত দুই প্রকার-

ক) অপরিবর্তনশীল রেজিস্টর বা ফিক্সড রেজিস্টর (Fixed Resistor) 

খ) পরিবর্তনশীল রেজিস্টর বা ভ্যারিয়েবল রেজিস্টর (Variable Resistor)

ফিক্সড রেজিস্টরের বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমন- 

ক) কার্বন রেজিস্টর (Carbon Resistor) 

খ) ওয়্যার উন্ড রেজিস্টর (Wire Wound Resistor)

গ) মেটাল ফিল্‌ড রেজিস্টর (Metal Filled Resistor) 

ঘ) কার্বন ফিল্ম রেজিস্টর (Carbon Film Resistor) 

ঙ) ফয়েল রেজিস্টর (Foil Resistor), ইত্যাদি।

সাধারণত তিন ধরনের রেজিষ্টর ইলেকট্রনিক্স সার্কিটে বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে।

কার্বন রেজিস্টর (Carbon Resistor) 

কার্বন রেজিস্টর গ্রাফাইট পাউডারের লেই (Pest) দিয়ে তৈরি করা হয়। এটার মান ১ MΩ থেকে ২MΩ পর্যন্ত থাকে এবং পাওয়ার <math xmlns="http://www.w3.org/1998/Math/MathML"><mfrac><mn>1</mn><mn>4</mn></mfrac></math> থেকে 2 Watt পর্যন্ত হয়ে থাকে।

ওয়্যার উন্ড রেজিস্টর (Wire wound Resistor) 

ইন্সুলেশন জাতীয় পদার্থের উপর নির্দিষ্ট ক্ষমতা সম্পন্ন তার পেঁচিয়ে এ ধরনের রেজিষ্টর তৈরি করা হয়। তাপ প্রতিরোধক হিসেবে সিরামিক বা সিমেন্টের প্রলেপ দিয়ে সম্পূর্ণরূপে ঢুকিয়ে দেয়া হয় যাতে করে তার দেখা না যায়। এটার পাওয়ার (Power) ৫ হতে ২০০ ওয়াট পর্যন্ত হয়ে থাকে।

মেটাল ফিল্ম রেজিষ্টর (Metal Film Resistor) 

একটি ইন্সুলেটিং গোলাকার ফর্মার উপর গোলাকার রুপে গ্রুপ (Group) কাটা থাকে। উক্ত গ্রুপের মধ্যে মেটাল আন্তরন দিয়ে ভরাট করে এ ধরনের রেজিষ্টর তৈরি করা হয়। এটার পাওয়ার Power ০.১ থেকে ১০ ওয়াট পর্যন্ত হয়ে থাকে।

কার্বন ফিল্ম রেজিষ্টর (Carbon Film Resistor) 

এ ধরনের রেজিস্টরের গঠন মেটাল ফিল্ম রেজিস্টরের মতই। পার্থক্য শুধু মেটাল ফিল্ম এর পরিবর্তে কার্বন মেটাল ফিল্ম ব্যবহার করা হয়।

এ্যাডজাস্টেবল রেজিস্টর (Adjustable Resistor) 

এ ধরনের রেজিস্টর তার পেঁচিয়ে তৈরি করা হয়। এটার মাঝখানে টার্মিনাল সংযোগ দেয়ায় তাকে উভয় দিকে নড়া চড়া করে রেজিষ্টরের মান পরিবর্তন করা যায়।

রেজিস্টরের ব্যবহার (Uses Of Resistor)

ওয়্যার উন্ড ভেরিয়্যাবল রেজিষ্টর কারেন্ট বহন ক্ষমতা বেশি থাকার সার্কিটের পাওয়ার স্টেজের লোড রেজিষ্টর হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ওয়্যার উন্ড রেজিষ্টর সার্কিটের কন্ট্রোল ও ব্রাইটনেস কন্ট্রোলের জন্য সার্কিটে ব্যবহার হয়ে থাকে। পটেনকিরিমিটার রেজিষ্টর ল্যাবরেটরিতে হুইটস্টোন ব্রীজ ব্যবহৃত হয়।

রেজিস্ট্যান্স এর কালার কোড (Color Code of Resistance) 

রেজিষ্ট্যান্সের কালার কোড (Color Code Of Resistance) : সাধারণত কার্বন এবং মেটাল রেজিষ্টরের গায়ে রেজিষ্টেন্সের মান লেখা থাকে না । মান লেখার পরিবর্তে ৩ টি অথবা ৪টি রিং অথবা বিভিন্ন রং এর ফোটা দেয়া থাকে । বিভিন্ন রং এর জন্য ভিন্ন ভিন্ন মান নির্ধারিত আছে। এই রং এর সংকেত ব্যবহার করে মান নির্ণয় করা যায়।

কালার কোডের প্রয়োজনীয়তা (Necessity of Color Code) 

কার্বন বা মেটাল রেজিষ্টর খুব ছোট মানের হয়ে থাকে। রেজিষ্টরগুলো ইলেকট্রনিক্স সার্কিটে বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এ রেজিষ্টরগুলো খুব ক্ষুদ্র হওয়াতে গায়ে মান লেখা সম্ভব হয় না। কাজেই রেজিষ্টরের গায়ে মানের পরিবর্তে কালার কোড ব্যবহার করায় খুব সহজেই মান নির্ণয় করা যায়। এ জন্যই কালার কোডের প্রয়োজনীয়তা আছে ।

কালার কোডের সংখ্যা

টলারেন্স (Talarence ) 

টলারেন্স হচ্ছে মোট রেজিষ্ট্যান্সের শতকরা হিসাব করা। অর্থাৎ রেজিস্টরের নির্ধারিত মান থেকে শতকরা কত ভাগ রেজিষ্ট্যান্স কম বা বেশি হতে পারবে তাই টলারেন্স।

কালার কোডের সাহায্যে রেজিষ্ট্যান্সের মান নির্ণয় 

কালার কোডের সাহায্যে রেজিষ্টরের মান নির্ণয় করার ক্ষেত্রে রেজিষ্টর এমন ভাবে ধরতে হবে, যাতে রেজিষ্টরের ব্যান্ড বা ফোটাগুলো বাম দিকে আসে। এরপর রং এর ব্যান্ড বা ফোটাগুলো বাম দিক থেকে ডানে ক্রমানুসারে সনাক্ত করতে হয় এবং সংখ্যাটি লিখতে হয়। প্রথম রং এর সংখ্যাটি প্রথমে এবং দ্বিতীয় রং এর সংখ্যাটি দ্বিতীয় স্থানে এবং তৃতীয় রং এর সংখ্যামানের সমান সংখ্যক শুন্য ডানে বসাতে হবে (কাল রং এর জন্য অন্য বসাতে হবে না) অথবা চিত্র-১.৩৪ এর ন্যার গুণ পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে এবং চতুর্থ রং এর সংখ্যাটি দিয়ে টলারেল নির্ধারণ করা হয়। এভাবে সংখ্যাটি একবার পড়লে রেজিষ্ট্যাল এর মান পাওয়া যায় ।

বিঃ দ্রঃ রেজিস্টরের প্রথম ডিজিটে কখনও কালো, সোনালী ও রূপালী রং হয় না। রেজিস্টরের যে অংশে ঘন রং আছে, সে অংশ হতে গণনা আরম্ভ করতে হয় এবং যে অংশ পাতলা রং থাকে সেই অংশ টলারেন্স ধরতে হয়। উদাহরণ: চিত্র-১.৩৫ রেজিস্টরের রেজিস্ট্যান্স কত হবে বের করি।

রেজিস্টর পরীক্ষা (Test Resistor)

ওহমস মিটার দিয়ে রেজিস্টর পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। ওহম মিটার দিয়ে পরীক্ষা করার আগে রেজিস্ট্যান্সের মান রং এর ব্র্যান্ডের মাধ্যমে বের করে নিতে হবে। যে মানের রেজিস্টর হবে, তার চেয়ে বেশি মানের রেঞ্জে ওহম মিটার এর সিলেক্টর নব (Knob) সেট করতে হবে। অতঃপর মিটারের গ্লোবঘর রেজিস্টরের দু'গ্রাঙ্কে ধরে স্কেল ডায়াল হতে মান দেখে নিতে হবে। রেজিস্টরের মান নির্দিষ্ট মানের চেয়ে বেশি বা কম হলে রেজিস্টরটি নষ্ট বলে গণ্য হবে।

বিদ্রঃ ১) সাধারণত রেজিস্টর কোয়ার্টার মানের চেয়ে কম হয় না। 

২) ৫ ব্যান্ডের রেজিস্টর সাধারণত কম ব্যবহৃত হয়। কিন্তু মেজারিং ইনট্রুমেন্টে ব্যবহার হয়ে থাকে।

৩)ওহমকে কিলো ওহম করতে হলে ১০০০ দিয়ে গুণ এবং মেগা ওহমস করতে হলে ১০ দিয়ে গুণ করতে হবে।

 

 

Content added By
Promotion