Job
বাংলা - বাংলা সাহিত্য - বাংলা সাহিত্যের শাখা
Please, contribute to add content into বাংলা সাহিত্যের শাখা.
Content
Please, contribute to add content into বাংলা কবিতা.
Content
Please, contribute to add content into সনেট.
Content
Please, contribute to add content into অমিত্রাক্ষর ছন্দ.
Content
অন্ত্যমিল আছে
অন্ত্যমিল নেই
চরণের প্রথমে মিল থাকে
বিশ মাত্রার পর্ব থাকে
কায়কোবাদ
সুকান্ত ভট্রাচার্য
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
মাইকেল মধুসূধন দত্ত
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
চরণের প্রথমে মিল থাকে
বিশ মাত্রার পর্ব থাকে
অন্তমিল থাকে না
অন্তমিল থাকে
Please, contribute to add content into বাংলা নাটক.
Content
রবীন্দ্রনাথের নাটক
বুদ্ধদেব বসুর কাব্যগ্রন্থ
তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস
সৈয়দ শামসুল হকের নাটক
Please, contribute to add content into বাংলা প্রবন্ধ.
Content

মানব সভ্যতার বহমান পথ পরিক্রমায় ভ্রমণ সাহিত্য প্রাচীনত্বের দাবি করতেই পারে। অথচ বাংলা সাহিত্যে কোনটি প্রথম ভ্রমণ কাহিনী সেটি নিয়ে আলোচনা হয়না বললেই চলে। কিন্তু এমন ভ্রমণ কাহিনী রয়েছে সেগুলি পাঠ করে স্বাদ পেতে পারেন পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরে আসার। কল্পনায় আপনি ঘুরে বেড়াতে পারেন আকাশচুম্বী পাহাড় পর্বতে, অ্যামাজনের গহীন জঙ্গলে, আন্টার্কটিকায় সীল মাছগুলোর সাথে কিংবা তারা ভরা আকাশের নীচে সাহারা মরুভূমিতে।

বাংলা সাহিত্যে সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত “পালামৌ” প্রথম বাংলা ভ্রমণ কাহিনী। রচনাটি ৬ কিস্তিতে প্র.না.ব ছদ্মনামে ১৮৮০-৮২ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গদর্শন পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। সঞ্জীবচন্দ্রের জীবৎকালে “পালামৌ” স্বতন্ত্র পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়নি। তাঁর মৃত্যুর পর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় “সঞ্জীবণী সুধা” নাম দিয়ে সঞ্জীবচন্দ্রের রচনাগুলির সংকলন প্রকাশ করেন, সেখানেই “পালামৌ” সর্বপ্রথম পুস্তকাকারে মুদ্রণ গৌরব লাভ করে। “পালামৌ” রচনা প্রসঙ্গে সুকুমার সেন লিখেছিলেন - “বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বড় ভাই সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'পালামৌ' কে বাংলা গদ্য সাহিত্যে প্রথম সার্থক ভ্রমণ কাহিনী হিসেবে গন্য করা যায়।”

 

বাংলা সাহিত্যে ভ্রমণ কাহিনীর তালিকা যেমন দীর্ঘ, তেমনি গুণে, মানে বাংলা ভ্রমণ সাহিত্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ। বাংলা সাহিত্যে জনপ্রিয় কিছু ভ্রমণ কাহিনীর তালিকা নিম্নে উল্লেখ করা হল –


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর :
• য়ুরোপ প্রবাসীর পত্র (১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দ, প্রথম ইংল্যান্ড যাত্রা)
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর “য়ুরোপ প্রবাসীর পত্র” রচনা সম্পর্কে চারুচন্দ্র দত্ত কে বলেছিলেন - “সেই প্রথম বয়সে যখন ইংল্যান্ড গিয়েছিলুম, ঠিক মুসাফেরের মতো যায়নি। অর্থাৎ রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে বাহির থেকে চোখ বুলিয়ে যাওয়া বরাদ ছিল না – ছিলেম অতিথির মতো, ঘরের মধ্যে প্রবেশ পেয়েছিলুম(রবীন্দ্র রচনাবলী, দশম, জন্ম শতবার্ষিক সংস্করণ, পৃ-৩৪০)।”
• য়ুরোপ যাত্রীর ডায়েরি (১৮৯০ খ্রিস্টাব্দ, দ্বিতীয় ইংল্যান্ড যাত্রা)
• পথের সঞ্চয় (১৯১২-১৩ খ্রিস্টাব্দ, তৃতীয়বার ইংল্যান্ড যাত্রা)
• জাপান যাত্রী (১৯১৬ খ্রিস্টাব্দ, প্রথম জাপান যাত্রা)
• পশ্চিম যাত্রীর ডায়েরি (১৯২৪-২৫ খ্রিস্টাব্দ, দক্ষিণ আমেরিকা যাত্রা)
• জাভা যাত্রীর পত্র (১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ, জাভা ও বালি যাত্রা)
• রাশিয়ার চিঠি (১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ, রাশিয়া ভ্রমণ)
• পারস্য যাত্রী (১৯৩২ খ্রিস্টাব্দ, পারস্য ও ইরাক ভ্রমণ)


বুদ্ধদেব বসু :
• আমি চঞ্চল হে (১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দ, সস্ত্রীক ভুবনেশ্বর, পুরী, কোনার্ক, চিল্কা ভ্রমণ)
• সমুদ্র তীর (১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দ, ক্রিসমাসে স্ত্রী ও শিশুকন্যা সহ গোপালপুর ও ওয়ালটেয়ার ভ্রমণ)
• সব পেয়েছির দেশ (১৯৪১ খ্রিস্টাব্দ, শান্তিনিকেতন ভ্রমণ)
• দেশান্তর (১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দ, বক্তৃতা ও অধ্যাপনার কারণে জাপান, হনলুলু, আমেরিকা, পিটসবার্গ, মিশর, ইউরোপ ভ্রমণ)
বুদ্ধদেব বসুর প্রথম বই দুটি সম্পর্কে চঞ্চল কুমার চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন - “বুদ্ধদেবের সূক্ষ্ম দৃষ্টিভঙ্গি সরস সাহিত্যের আমেজ তাঁর লেখনী কে করে তুলেছে অনন্য। পাঠকের ইচ্ছে হবে সমুদ্র তীরের দেশগুলোতে পুনর্বার নতুন চোখে বেড়িয়ে আসতে (পরিচয়, ১৩৪৪ বঙ্গাব্দ পৌষ সংখ্যা)।”

 

অন্নদাশঙ্কর রায় :
• পথে প্রবাসে
• জাপানে
“পথে প্রবাসে” প্রসঙ্গে প্রথম চৌধুরী বলেছেন - “এ শুধু ভ্রমণ বৃত্তান্ত নয়, একখানি যথার্থ সাহিত্য গ্রন্থ।”

জসীমউদ্দীন :
• চলে মুসাফির ১৯৫২
• হলদে পরির দেশে ১৯৬৭
• যে দেশে মানুষ বড় ১৯৬৮
• জার্মানির শহরে বন্দরে ১৯৭৫

বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায় :
• কালনা থেকে রংপুর (নৌকা যোগে ২৭ দিনে কালনা থেকে রংপুর যাওয়ার অভিজ্ঞতা)
বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায় হলেন আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের পিতামহ। এই ভ্রমণ বৃত্তান্ত সম্পর্কে ড. দীনেশ চন্দ্র সেন লিখেছিলেন - “এই ভ্রমণ বৃত্তান্ত ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দের, অর্থাৎ রাজা রামমোহন রায়ের মৃত্যুর মাত্র ৭ বৎসর পর লিখিত হয়। উক্ত রাজার বহু শতাব্দী পূর্ব হইতে সাধারণের মধ্যে বাংলা গদ্যের যে ধারা প্রচলিত ছিল, মৃত্যুঞ্জয় প্রভৃতি সংস্কৃত পণ্ডিত ও রাজা রামমোহন রায় প্রমুখ ইংরেজির পক্ষপাতী শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিগন সেই প্রাচীন ধারাটি গ্রাহ্য করেন নাই।”


জলধর সেন :
• টপকেশ্বর ও গুচ্ছপানি (ভারতী ও বালক পত্রিকায় মাঘ ১২৯৯ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত)
• প্রবাসচিত্র ১৮৯৯
• হিমালয় ১৯০০
• পথিক ১৯০১
• হিমাচল বক্ষে ১৯০৪
• হিমাদ্রি ১৯১১
• দশদিন ১৯১৬


সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় :
• কবিতার জন্য সারা পৃথিবী
• তিন সমুদ্র সাতাশ নদী
• ছবির দেশে কবিতার দেশে

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় :
• চাঁদের পাহাড় (১৯৩৭)


দীনবন্ধু মিত্র :
• সুরধুনী কাব্য ১৮৭১


বিনয় মুখোপাধ্যায় (যাযাবর) :
• দৃষ্টিপাত


ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় :
• A Visit to Europe ১৮৮৯ (পরিমল গোস্বামী তাঁর এই বইটির বঙ্গানুবাদ করে নাম দেন “আমার ইউরোপ ভ্রমণ”)


রমেশচন্দ্র দত্ত :
• Three Years in Europe ১৮৯৬

শিবনাথ শাস্ত্রী :
• ইংল্যান্ডের ডায়েরি

কেশর সেন :
• Dairy in England

প্রবোধ কুমার সান্যাল :
• মহাপ্রস্থানের পথে

অবধূত :
• মরুতীর্থ হিংলাজ

কৃষ্ণকমল ভট্টাচার্য :
• দুরাকাঙ্খার বৃথা ভ্রমণ ১৮৫৮

প্রবোধ সান্যাল :
• রাশিয়ার ডায়েরি


নারায়ণ সান্যাল :
• জাপান থেকে ফিরে


বিকাশ বিশ্বাস :
• উদিত ভানুর দেশ জাপান

যদুনাথ সর্বাধিকারী :
• তীর্থ ভ্রমণের রোজনামচা ১৯১৫

ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় :
• শ্রীশ্রীগয়াতীর্থ বিস্তার

ঈশ্বরচন্দ্র বাগচী :
• তীর্থমুকুর

রাজেন্দ্র মোহন বসু :
• কাশ্মীর কুসুম ১৮৭৫

দুর্গাচরণ রক্ষিত :
• সচিত্র ভারত প্রদক্ষিণ ১৯০৩ (রয়েছে ভ্রমণ রসের পাশাপাশি সে সময়ের ১৮ টি দুর্লভ ছবি)

 

বাংলা সাহিত্যে মহিলা লিখিত  ভ্রমণ কাহিনী :


বাংলা সাহিত্যে মহিলা লিখিত প্রথম ভ্রমণ কাহিনী রচনা করেন কৃষ্ণভাবিনী দাস। তাঁর রচিত রচনাটির নাম - “ইংল্যান্ডে বঙ্গমহিলা” (১৮৯১)।


হরিপ্রভা দেবী :
• বঙ্গ মহিলার জাপান যাত্রা ১৯১৫

মৈত্রেয়ী দেবী :
• মহাসোভিয়েত

নবনীতা দেবসেন :
• করুণা তোমার কোন পথ দিয়ে (কুম্ভস্নান)
• ট্রাকবাহনে ম্যাকমোহনে
• হে পূর্ণ তবে চরণের কাছে

প্রসন্নময়ী দেবী :
• আর্য্যাবর্ত্তে বঙ্গমহিলা

জগৎমোহনী চৌধুরী :
• ইংল্যান্ডে সাত মাস ১৯০২

বিমলা দাশগুপ্ত :
• নরওয়ে ভ্রমণ ১৯১৫


শরৎরেণু দেবী :
• পারস্যে বঙ্গ রমনী ১৯১৬

অবলা বসু :
• জাপান ভ্রমণ ১৯১৬ (মুকুল পত্রিকায় প্রকাশিত)


• প্রথম ভারতীয় ও বাঙালি ভূপর্যটক বিমল মুখার্জি যিনি দুচাকার বাইসাইকেলে ভ্রমণ করার অভিজ্ঞতা থেকে রচনা করেন - “দু চাকায় দুনিয়া” (১৯৮৬)।

Content added By
Please, contribute to add content into বিখ্যাত রম্যরচনা (বাংলায়).
Content

বিখ্যাত বাংলা উপন্যাস :

ঔপন্যাসিকউপন্যাসের নাম ও প্রকাশকাল
আখতারুজ্জামান ইলিয়াসচিলে কোঠার সেপাই (১৯৮৭), খোয়াবনামা (১৯৯৩)।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যয়দুর্গেশনন্দিনী (১৮৬৫) বিষবৃক্ষ (১৮৭৩), কৃষ্ণকান্তের উইল (১৮৭৮), আনন্দমঠ (১৮৮২), দেবী চৌধুরানী (১৮৮৪)।
প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায়রমা সুন্দরী (১৯০৮), রতœদ্বীপ (১৯১৫), মনের মানুষ (১৯২২), সতীর পতি (১৯২৮)।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়বড়দিদি (১৯১৩), বিরাজ বৌ (১৯১৪), পরিনীতা, মেজদিদি (১৯১৫), কাশীনাথ (১৯১৭), শেষপ্রশ্ন (১৯৩১)।
রমেশচন্দ্র দত্তবঙ্গবিজেতা (১৮৭৪), সংসার (১৮৮৬), সমাজ (১৮৯৪)।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরনৌকাডুবি (১৯০৬), গোরা (১৯১০), ঘরে বাইরে (১৯১৬), চতুরঙ্গ (১৯১৬), শেষের কবিতা (১৯২৯)।
তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়ধাত্রী দেবতা (১৯৩৯), গণদেবতা (১৯৪২), হাঁসুলী বাঁকের উপকথা (১৯৪৭), জলসা ঘর (১৯৪২), পঞ্চগ্রাম (১৯৪৩)।
মানিক বন্দোপাধ্যয়পদ্মা নদীর মাঝি (১৯৩৬), পুতুল নাচের ইতিকথা ( ১৯৩৬), শহরতলী (১৯৪০), শহর বাসের ইতিকথা (১৯৪৬), অহিংসা (১৯৪১), সোনার চেয়ে দামী (১৯৫১)।
বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়পথের পাঁচালী (১৯২৯), অপরাজিতা (১৯৩১), আরণ্যক (১৯৩৮), দৃষ্টি প্রদীপ (১৯৩৫), ইছামতি (১৯৪৯)।
টেকচাঁদ ঠাকুরআলালের ঘরে দুলাল (১৮৫৮) | বাংলা উপন্যাস
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহলাল সালু (১৯৪৮), চাঁদের অমাবস্যা (১৯৪৫), কাঁদো নদী কাঁদো (১৯৬৫)।

 

মুক্তিযুদ্ধের ১০ উপন্যাসঃঃ

 

রাইফেল রোটি আওরাত
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ শুরুর পরের তিন দিনের গল্প আনোয়ার পাশা 'রাইফেল রোটি আওরাত'। এপ্রিলে লেখা শুরু করে শেষ করেছিলেন জুনে। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম উপন্যাস এটি।যুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যে, প্রত্যক্ষ বাস্তবতার ভেতর তিনি উপন্যাসটি লেখেন। যুদ্ধের এমন প্রত্যক্ষ, এমন মৌলিক ব্যাপ্তি সত্যিই বিরল। এ উপন্যাস শুধু বিপন্ন বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি নয়, রুখে দাঁড়ানোর প্রত্যয়ে উদ্ভাসিত এক নতুন বাংলাদেশ। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র সুদীপ্ত শাহীন-ই যেন সেই বাংলাদেশ। তিনি ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে নিহত হন।

নেকড়ে অরণ্য
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে শওকত ওসমান একাধিক উপন্যাস লিখেছেন। ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত ৬৪ পৃষ্ঠার ছোট্ট একটি উপন্যাস 'নেকড়ে অরণ্য' ছাড়াও তাঁর উল্লেখযোগ্য মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস 'জাহান্নাম হইতে বিদায়', 'দুই সৈনিক' এবং 'জলাংগী'। 'নেকড়ে অরণ্য' উপন্যাসে লেখক একটি গুদামঘরের বর্ণনা দিয়েছেন। টিনে ছাওয়া, সমতল মেঝের বিশাল এক গুদামঘর। একসময় এই ঘরটিই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ক্যাপ্টেন রেজা খান, আলী খানদের নারী ধর্ষণের প্রধান ক্ষেত্র হয়ে ওঠে। সে আস্তানায় তানিমা, জায়েদা, রশিদারা ধর্ষিত হয় কখনো পাকিস্তানি ক্যাপ্টেনের দ্বারা, কখনো সাধারণ সৈনিকের দ্বারা। তাদের চিৎকার, আর্তনাদ, স্বপ্নভঙ্গের বেদনা, বিপর্যস্ততার নির্মোহ রূপটি তুলে আনেন লেখক এ উপন্যাসে। বনের ভেতর নেকড়ের নৃশংসতাও হার মানে যেন ছোট্ট একটুকরো গুদামঘরে। কিন্তু তার পরও থেমে থাকে না প্রতিবাদ। ক্যাপ্টেনের গুলি বুক পেতে নেয় তানিমা। আর আত্মহত্যার মাধ্যমে বন্দিদশা থেকে মুক্তি পায় এইসব বীরাঙ্গানারা।

যাত্রা
যুদ্ধের প্রথম দিকের ঘটনা ও সময় নিয়ে রচিত উপন্যাস শওকত আলীর 'যাত্রা'। শুরুর প্রাক্কালে দলে দলে মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে; আবার পেছন ফিরে তাকাচ্ছে। এ পলায়ন শুধু চেতনাগত নয়, মানসিকভাবেও পলায়ন। কিন্তু ওই যে ফিরে তাকানো, সেখানেই আছে উপন্যাসের অন্তর্নিহিত মনস্তত্ত্ব। আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর গোপন ইচ্ছাটুকু ওখানেই আছে। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র অধ্যাপক রায়হান মুক্তিযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছেন। একসময় প্রগতিশীল রাজনীতিক রায়হান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেবেন কি নেবেন না- এ সংশয় ও দ্বিধায় শেষাবধি যুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। ১৯৭২ সালে রচিত হয় 'যাত্রা' উপন্যাসটি। তবে প্রকাশ পায় ১৯৭৬ সালে।

হাঙর নদী গ্রেনেড
মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষিতে বেশ কিছু উপন্যাস লিখেছেন সেলিনা হোসেন। তার মধ্যে ভীষণ আলোচিত উপন্যাস 'হাঙর নদী গ্রেনেড'। মুক্তিযুদ্ধের এক আবেগী ও প্রতিবাদী উপন্যাস এটি। হলদী গ্রামের এক বয়স্ক নারীর জীবন এই উপন্যাসে মূর্ত হয়ে ওঠে। এই নারী তাঁর নিজের ছেলেদের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে যেমন উদ্বুদ্ধ করেন, তেমনি মুক্তিযোদ্ধাদের বাঁচাতে নিজের মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলেকে তুলে দেন পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে। উপন্যাসে এই মায়ের আত্মসংগ্রাম, দেশের জন্য ত্যাগের অপার মহিমা ভাস্বর হয়ে ওঠে। আর উপন্যাসে বর্ণিত গ্রামটিও যেন মুক্তিযুদ্ধের প্রতীকী এক বাংলাদেশ।

জীবন আমার বোন
মাহমুদুল হকের বহুল পঠিত উপন্যাস 'জীবন আমার বোন'। বরাবরই মধ্যবিত্তের জীবনসংগ্রাম, তাদের দ্বিধাগ্রস্ততা, অপূর্ণতা আর সুবিধাবাদী চরিত্র অসাধারণভাবে এঁকেছেন এই শিল্পী তাঁর প্রতিটি উপন্যাসে। 'জীবন আমার বোন' উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র জাহেদুল করিমের মধ্যবিত্তীয় সুবিধাবাদী মানসিকতার পাশাপাশি যুদ্ধের নানা বাস্তবতায় নিজের বোঝাপড়াও লেখক তুলে ধরেন পাঠকের সামনে। লেখকের অসামান্য উপস্থাপনা, ভাষার কাব্যিক ব্যঞ্জনায় ছোট্ট, হৃদয়গ্রাহী উপন্যাসটি যতই পড়া যায় ততই বিষমবেদনায় ভারাক্রান্ত করে।

দ্বিতীয় দিনের কাহিনী
'বৃষ্টি ও বিদ্রোহীগণ', 'নীল দংশন', 'নিষিদ্ধ লোবান'-এর পর সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের মুক্তিযুদ্ধের আরেকটি উপন্যাস 'দ্বিতীয় দিনের কাহিনী' (১৯৮৪)। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতাকে চমৎকারভাবে চিহ্নিত করেছেন তিনি। বাঙালি জাতিসত্তার আত্মপরিচয়, সংগ্রাম, স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার কথা পরম মমতায় তুলে ধরেছেন এ উপন্যাসে। একজন প্রধান শিক্ষক তাহের উদ্দীন খন্দকারের আত্মোপলব্ধি, অন্বেষণ ও স্মৃতিচারণার মধ্য দিয়ে উঠে আসে মুক্তিযুদ্ধে জলেশ্বরীর দুর্বার ভূমিকার কথা। বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা জলেশ্বরীর সন্তানদের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার বিষয়টিও উঠে আসে তাহেরের স্মৃতিচারণায়।

খাঁচায়
মুক্তিযুদ্ধের একেবারে শুরুর দিকে রচিত উপন্যাস রশীদ হায়াদারের 'খাঁচায়'। অবরুদ্ধ ঢাকার বন্দি নগরবাসীর চিত্র তিনি এ উপন্যাসে চমৎকারভাবে তুলে এনেছেন। এ শহরে অবরুদ্ধ জাফরের শঙ্কাময় উপলব্ধি, অনুভূতির কথা আমরা জানতে পারি উপন্যাস থেকে। যখন সে ভাবে, 'সমস্ত অনুভূতি নিষ্ক্রিয় হয়ে রাস্তার মতো হয়ে গেছে, যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে আমেরিকা, খাঁচাটা আরো সংকুচিত হয়ে আসছে, খাঁচার চারপাশে উদ্যত মারণাস্ত্র'; তখন এই বিপন্নতা স্পর্শ করে পাঠককেও।

জোছনা ও জননীর গল্প
মৃত্যুর মাত্র কয়েক বছর আগে কথার জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ লেখেন 'জোছনা ও জননীর গল্প' উপন্যাসটি। এটি যতটা উপন্যাস, ততটাই মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য দলিল। মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন তথ্য, বিবরণ, ঐতিহাসিক চরিত্র ও তার ভূমিকা, নিজের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণকে উপজীব্য করে লিখেছেন দীর্ঘ এই উপন্যাসটি। একাত্তরের পুরো ৯ মাসের গল্প পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে উঠে এসেছে 'জোছনা ও জননীর গল্প' উপন্যাসে। কোনো একটি নির্দিষ্ট চরিত্র বা ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এই রচনা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া সম্ভব নয়। লেখকের চিরায়ত গল্প বলার সৌন্দর্য এ উপন্যাসেও যে পাঠক উপভোগ করেন, তা বলা বাহুল্য।

সাড়ে তিন হাত ভূমি
একটি কবরের আয়তন কত? এই প্রশ্নের উত্তর, 'সাড়ে তিন হাত ভূমি'। জনপ্রিয় কথাশিল্পী ইমদাদুল হক মিলনের বেশ কিছু মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাসের মধ্যে এটিও উল্লেখযোগ্য একটি উপন্যাস। মুক্তিযোদ্ধা রবি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে গ্রামে আসেন পরিবারের খোঁজ নিতে। এসে দেখেন উঠানে পড়ে আছে বাবার মৃতদেহ, ঘরে মা ও বোনের লাশ। আর সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর মৃতদেহ পড়ে আছে বাড়ির পেছনে। হতবিহ্বল, অসাড়, অনুভূতিহীন রবি উঠানে নিজ হাতেই খুঁড়ে চলেন প্রিয় স্বজনদের কবর। যেন খুঁড়ে চলেন স্মৃতির গহিন পরিখা। মা-বাবা, বোন, স্ত্রী; এমনকি অনাগত সন্তানের সঙ্গেও স্মৃতির ঝাঁপি পাখা মেলে। আর তা দৃশ্যমান হতে থাকে পাঠকের চোখের সামনে। উপস্থাপনার দিক থেকে উপন্যাসটি একেবারেই আলাদা।

জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা
প্রয়াত লেখক শহীদুল জহিরের 'জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা' উপন্যাসটি মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের গল্প হলেও এর সূত্রপাত মুক্তিযুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে। উপন্যাসে উল্লেখযোগ্য একটি চরিত্র বদু মওলানা। একাত্তরের কুখ্যাত এক রাজাকার সে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও দেশের নানা অস্থিতিশীলতা, প্রগতিশীল শক্তির ঐক্যবদ্ধতার অভাব আর ক্ষমতার রাজনীতির সুযোগে বদু মওলানাদের রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসিত হওয়ার গল্প। আজকের এ সময়ের পরিপ্রেক্ষিতেও কী ভীষণ বাস্তব সে দৃশ্য! উপন্যাসের এক চরিত্র আবদুল মজিদের চোখে দেখা মোমেনার নৃশংস অবয়বের বর্ণনার মতো নির্মম বাস্তবতার গল্প 'জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা'।

 

Content added By
Content updated By
বিদ্রোহী-কাব্য গ্রন্থ
শেষের কবিতা-নাট্য গ্রন্থ
বিষবৃক্ষ-উপন্যাস
নৌকা ডুবি-গল্প গ্রন্থ
Please, contribute to add content into বাংলা ছোট গল্প.
Content
Please, contribute to add content into ছন্দ.
Content
নজরুল ইসলাম
মধুসূদন দত্ত
জীবনানন্দ দাশ
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সতেন্দ্রনাথ দত্ত
বিহারীলাল মজুমদার
সুকুমার রায
Please, contribute to add content into গ্রন্থ.
Content
Please, contribute to add content into কাব্য.
Content
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
নবীনচন্দ্র সেন
যোগীন্দ্রনাথ বসু
Please, contribute to add content into চলচ্চিত্র.
Content