বিক্রয় ব্যবস্থাপক জনাব মুহিবুল্লাহ নিজের চেয়ে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করেন। প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়ের কাজ বারে বারে সম্পাদন করতে হয়। তাই মুহিবুল্লাহকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় যে, সে নগদে না বাকিতে পণ্য বিক্রয় করবে। অভিজ্ঞতার আলোকে পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনা করে সে বাকিতে পণ্য বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন ।
আলট্রা কোম্পানি তাদের সারাদেশের বাজারগুলোকে দখল করার জন্য দেশের মোট বাজারকে কতগুলো অঞ্চলে ভাগ করে সে অনুযায়ী একেক অঞ্চলের জন্য একেক ধরনের পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। কোম্পানিটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গৃহীত পরিকল্পনায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করার সুযোগ রাখেন। ফলে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে পরিকল্পনায় দ্রুত পরিবর্তন এনে সে অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যেতে পারেন।
হাসান পদ্মা লিঃ এর একজন ব্যবস্থাপক। তিনি কাজের সুবিধার্থে কাজগুলোকে প্রকৃতি অনুসারে বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করেন। পরে প্রতিটি বিভাগের কাজ এক একজন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তির হাতে ন্যস্ত করেন, যারা কোন কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা ভোগ করেন না। তবে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্তরে কে কতজন অধিনস্থের কাজ দেখভাল করবেন তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না থাকায় পদ্মা লিঃ জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। যা এক সময় বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয়।
চন্দনা একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। মেধাবী হওয়ার সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানে কোনো পদ খালি না থাকায় তিনি অনেকদিন একই পদে কর্মরত আছেন। হঠাৎ একটি পদ খালি হওয়ায় ব্যবস্থাপনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চন্দনাকে উক্ত পদে নিয়োগ প্রদান করেন। নতুন নিয়োগের ফলে বেতন বৃদ্ধিসহ দামী গাড়ী ও সুসজ্জিত বাসস্থান পাওয়ায় সমাজে তার মান-মর্যাদা, সম্মান ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে।
মিঃ স্বপ্ন ও বাঁধন দুইজন দুইটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক। কর্মীরা যাতে ভালভাবে মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারে সে জন্য স্বপ্ন প্রতিষ্ঠানের পরিবেশকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে রেখেছেন। তিনি কর্মীদের সাথে ভাল ব্যবহারসহ কাজের প্রশংসাও করেন। ফলে কর্মীগণ তার প্রতিষ্ঠানে কাজ করে সন্তুষ্ট। অপরদিকে বাঁধন কর্মীদের উৎসাহ দানের জন্য মাঝে মাঝে মুনাফার অংশ, ন্যায্য পারিশ্রমিক দিলেও কাজের পরিবেশ ও নিরাপত্তা ভালো না থাকার কারণে কর্মীরা প্রায়ই কাজ ছেড়ে চলে যায় ।
মিঃ পরিমল একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক। ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে তিনি বেশ কিছু বিষয়ে প্রায়ই অসুবিধায় পড়েন। হঠাৎ একদিন হার্ট সুপারশপে কেনাকাটা করার সময় অন্য একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের সাথে দেখা হওয়ায় তিনি তার অসুবিধার বিষয় নিয়ে আলোচনা করে সমাধান করেন। অন্যদিকে জামাল সাহেব একটি প্রতিষ্ঠানে ক্রয় ব্যবস্থাপক। তিনি এ ধরনের কোনো সমস্যায় পড়লে একই প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় ব্যবস্থাপকের সাথে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করেন।
জনাব আকাশ প্রতিষ্ঠানের সকল ক্ষমতা নিজের কাছে কেন্দ্রীভূত করে এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন। অধীনস্থদের মতামতকে কোনো গুরুত্বও দেননা এবং ভয়-ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে অধীনস্থদের কাজ করিয়ে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ঠিকই অর্জন করেন। জনাব আকাশের ভবিষ্যত উপলব্ধি ও অনুমান করার সামর্থ প্রবল হওয়ায় সময় উপযোগী সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম হন। ফলে উল্লিখিত সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও তিনি অনেক ক্ষেত্রে যোগ্য ও সফল ব্যবস্থাপক হিসেবে বিবেচিত।
মিঃ সুব্রত সরকার ও শামীম চৌধুরী ভিন্ন ভিন্ন দুইটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। সুব্রত সরকার তার প্রতিষ্ঠানে কোনো পদ শূন্য হলে অপেক্ষাকৃত যোগ্য কর্মীকে পদোন্নতি প্রদানের মাধ্যমে উক্ত শূন্য পদ পূরণ করে থাকেন। অপরদিকে জনাব চৌধুরী তার প্রতিষ্ঠানের শূন্য পদ পূরণে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রদান করে বিপুল সংখ্যাক কর্মীর মধ্য থেকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যোগ্য কর্মী বাছাই করেন। পরে কর্মীদেরকে সমপর্যায়ের বিভিন্ন পদে বাস্তব কাজ করার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান করে অল্প সময়েই তাকে কর্মদক্ষ করে তোলেন ।
জনাব রফিক নির্দেশ প্রদান করার পূর্বে অনেক সময় অধীনস্থদের সাথে নির্দেশনার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেন। তবে নির্দেশনার বিষয়বস্তু নির্ধারণের অধিকার তিনিই সংরক্ষণ করেন। ফলে অধস্তনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্দেশনা পালনে অংশগ্রহণ করেন। অপরদিকে জনাব আসাদ তার প্রতিষ্ঠানের কাজকে প্রকৃতি অনুযায়ী বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে সু- নির্দিষ্টভাবে বণ্টন করে দেন। ফলে কাজের তত্ত্বাবধান ও জবাবদিহিতা আদায় সহজ হয়।
আলফা লিঃ একটি উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটিতে ২০১৮ সালে এক লক্ষ একক পণ্য উৎপাদিত হয়। প্রতি একক পণ্য উৎপাদনে কাঁচামাল লাগে ১০০০ টাকার এবং একক প্রতি মজুরি ২০০ টাকা ব্যয় হয়। এক বছরে প্রতিষ্ঠানের বিল্ডিং ভাড়া ২,৫০,০০০ টাকা, বিদ্যুৎ বিল ৫০,০০০ টাকা এবং কর্মকর্তাদের বেতন ৫,০০,০০ টাকা। প্রতি একক পণ্যের বিক্রয় মূল্য ২০০০ টাকা।