প্রশ্ন:আন্তঃঅভ্যন্তরীণ অবস্থান্তর মৌল, বিরল মৃত্তিকা মৌল, ল্যান্থানাইড ও অ্যাকটিনাইড কী?
উত্তর: যে সকল মৌলের s ও p অরবিটাল পরিপূর্ণ থাকে কিন্তু ভেতরের d ও f অরবিটাল ফাঁকা থাকে। থাকে তাদেরকে আন্তঃঅভ্যন্তরীণ অবস্থান্তর মৌল বলা হয়। এদেরকে পর্যায় সারণির নিচে আলাদাভাবে স্থান দেয়া হয়েছে। 4f ইলেকট্রন বিন্যাস বিশিষ্ট মৌলসমূহ ল্যান্থানাইডস নামে পরিচিত এরা মত্তিকায় খুবই কম পাওয়া। পাওয়া যায় বলে এদেরকে বিরল মৃত্তিকা মৌল (Rare Earth Elements) বলা হয়। 5f ইলেকট্রন বিশিষ্ট মৌলসমূহ অ্যাকটিনাইডস নামে পরিচিত। পরিচিত।
ল্যান্থানাইড শ্রেণির মৌলসমূহের সাধারণ ধর্মাবলি নিম্নরূপ:
i.এরা ত্রি-যোজ্যতা এবং জারণ অবস্থা প্রদর্শন করে।
ii. ল্যান্থানাইড লবণগুলো কেলাস পানি বিশিষ্ট হয়ে থাকে।
iii. এরা ল্যান্থানাইড সংকোচন প্রদর্শন করে।
অ্যাকটিনাইড মৌলসমূহের সাধারণ ধর্মাবলি নিম্নরূপ :
i. এরাও ত্রি-যোজ্যতা বিশিষ্ট এবং জারণ সংখ্যা প্রদর্শন করে।
ii. এরা সকলেই তেজস্ক্রিয়তা প্রদর্শন করে।
প্রশ্ন:-িব্লক মৌল কী?
উত্তর: যে সব মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসে সর্বশেষ ইলেকট্রনটি f অরবিটালে প্রবেশ করে সেগুলোকে f-ব্লক মৌল বলা হয়। ল্যান্থানাইড (4f সিরিজ) এবং অ্যাকটিনাইড (5f সিরিজ) মৌলসমূহ ব্লকের অন্তর্ভুক্ত।
এদের বহিঃস্তরে ইলেকট্রন বিন্যাস (n-2) f1-14 (n- 1)d1-10 ns1-2 [n হলো প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা, যা পর্যায় সংখ্যা নির্দেশ করে]।
প্রশ্ন:অন্তঃ অবস্থান্তর মৌল কী?
উত্তর: যে সব মৌলের স্থিতিশীল আয়নের ইলেকট্রন বিন্যাসে f অরবিটাল আংশিক পূর্ণ (f1 হতে f13) হয় তাদেরকে অন্তঃ অবস্থান্তর মৌল (Inner Transition Element) বলা হয়। যেমন- সেরিয়াম Ce (58)
প্রশ্ন: অভ্যন্তরীণ অবস্থান্তর মৌল কী?
উত্তর: যে সব মৌলের স্থিতিশীল আয়নের ইলেকট্রন বিন্যাস (n - 2) fl-13 তাদের অভ্যন্তরীণ অবস্থান্তর মৌল বলে।
প্রশ্ন:-ব্লক মৌলসমূহের সাধারণ ধর্মাবলি লিখ?
উত্তর: পর্যায় সারণীর ৬ষ্ঠ পর্যায়ের ল্যান্থানাম La(57) থেকে পরবর্তী লুটেসিয়াম Lu(71) পর্যন্ত ১৫টি মৌলকে পর্যায় সারণির ৬ষ্ঠ পর্যায়ের ল্যান্থানাম La(57) থেকে পরবর্তী লুটেসিয়াম ল্যান্থানাইড সিরিজ (Lanthanide) বলা হয় । অ্যাক্টিনিয়াম Ac(89) থেকে পরবর্তী লরেনসিয়াম Lr (105) পর্যন্ত ১৫টি মৌলকে অ্যাকটিনাইড সিরিজ (Actinides) বলা হয়।এদের বহিঃস্তরে ইলেকট্রন বিন্যাস (n-2)f1-14 (n-1) d 1-10 ns1 2 [ n হলো প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা,যা পর্যায় সংখ্যা নির্দেশ করে]। এ ৩০টি মৌলকে আধুনিকতম পর্যায় সারা লেখা হয়েছে। এদের মধ্যে কিছু মৌল অন্তঃ অবস্থান্তর মৌল।
যে সব মৌলের স্থিতিশীল আয়নের ইলেকট্রন বিন্যাসে অরবিটাল আংশিক পূর্ণ (f1 হতে f13) হয় তাদেরকে অন্তঃ অবস্থান্তর মৌল (Inner Transition Element) বলা হয়। যেমন- সেরিয়াম
Ce (58)
f-ব্লক মৌলের সাধারণ বৈশিষ্ট্যসমূহ :
১. সমস্ত f-ব্লক মৌল তড়িৎ ঋণাত্মক ও অত্যন্ত সক্রিয় ধাতু
২. সাধারণভাবে এদের উচ্চ গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক দেখা যায়।
৩. এরা একাধিক জারণ অবস্থা দেখায়। যদিও +3 জারণ অবস্থাটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
৪. এদের জটিল যৌগ গঠন করার প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়।
৫.অ্যাক্টিনাইড শ্রেণির বেশির ভাগ মৌল তেজস্ক্রিয় (radioactive) মৌল।
৬.এদের জটিল যৌগ রঙিন (coloured) হয়।
৭. অযুগ্ম ইলেকট্রনের উপস্থিতির জন্য কোনো কোনো -ব্লক মৌল প্যারাচুম্বক (paramagnetic)
প্রকৃতির হয়।
৮. এদের একই ধরনের রাসায়নিক ধর্ম দেখা যায় এবং প্রত্যেকের +3 স্থায়ী জারণ অবস্থা বর্তমান।
৯. এদের উচ্চ ঘনত্ব দেখা যায় ।
১০.f-ব্লক মৌলসমূহের পরমাণুর আকার প্রায় একই বলে এদের পৃথক করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। এদের অস্বাভাবিক আয়তন সংকোচন হয় যা ল্যান্থানাইড সংকোচন নামে অভিহিত।
প্রশ্ন: বিরল মৃত্তিকা মৌল কী?
উত্তর: পর্যায় সারণির ৬ষ্ঠ পর্যায়ে ল্যান্থানাইড La(57) এর পরবর্তী মৌল সেরিয়াম, Ce (58) থেকে লুটেসিয়াম, Lu(71) পর্যন্ত 14 টি মৌল ল্যান্থানাইড মৌলকে মধ্যে ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মের সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়। এ 14টি মৌলকে পর্যায় সারণির নিচে একটি সম্পূর্ন আলাদা আনুভূমিক সোরিতে তে সারিতে স্থান দেয়া হয়েছে। এ 14 টি মৌলকে ল্যান্থানাইড বলা হয়। প্রকৃতিতে এর অতি অল্প পরিমাণে পাওয়া যায় বলে বিরল মৃত্তিকা বলে ।
প্রশ্ন: ল্যান্থানাইড সংকোচন কী?
উত্তর: ল্যান্থানাইড La(57) এর পরবর্তী মৌল সেরিয়াম, Ce(58) থেকে লুটেসিয়াম, Lu(71) পর্যন্ত 14 টি মৌল ল্যান্থানাইড মৌল নামে পরিচিত। এ মৌলসমূহের সাধারণ ইলকট্রন বিন্যাস 4f2-14 5s2 5p6 5d0-1 6s2। এ মৌলসমূহের আরে পারমাণবিক সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে নতুন আগত ইলকট্রন 6s এরপর 5d উপকক্ষে প্রবেশ না করে 4f উপশক্তিস্তরে প্রবেশ করে। এ-অরবিটালের জ্যামিতিক গঠনের কারণে বিস্তৃত এলাকার ইলেকট্রন মেঘ ছড়িয়ে পড়ে।
এজন্য f-অরবিটালের ইলেকট্রনগুলোর আবরণী প্রভাব খুবই কম হয়। 4f অরবিটালে ইলেকট্রন প্রবেশ করার সাথে সাথে মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা এক একক করে বৃদ্ধি পেতে থাকে। কিন্তু 4f অরবিটালের ইলেকট্রনগুলোর আবরণী প্রভাব বিশেষ বৃদ্ধি ঘটে না। ফলে নিউক্লিয়াসের ধনাত্মক আধানের আকর্ষণ পরবর্তী উপশক্তিস্তরের ইলেকট্রনগুলোকে আকৃষ্ট করে। ফলে মৌলগুলোর পারমাণবিক ও আয়নিক ব্যাসার্ধের ক্রমান্বয়ে হ্রাস ঘটে। যদিও আয়নিক ব্যাসার্ধের হ্রাস পারমাণবিক ব্যাসার্ধের হ্রাস অপেক্ষা অধিক নিয়মিত।
প্রশ্ন: অ্যাকটিনাইড সংকোচন (Actinide Contraction) কী?
উত্তর: অ্যাকটিনিয়াম, AC(89) এর পরবর্তী মৌল থোরিয়াম Th(90) থেকে লরেন্সিয়াম Lr (103) পর্যন্ত 14 টি মৌল ল্যান্থানাইড মৌল নামে পরিচিত। এ মৌলসমূহের সাধারণ ইলকট্রন বিন্যাস 5f2-14 6s2 6p 6d0-17s2। এ মৌলসমূহের আরে পারমাণবিক সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে নতুন আগত ইলকট্রন 7s এরপর 6d উপকক্ষে প্রবেশ না করে 5f উপশক্তিস্তরে প্রবেশ করে।এ-অরবিটালের জ্যামিতিক গঠনের কারণে বিস্তৃত এলাকার ইলেকট্রন মেঘ ছড়িয়ে পড়ে। এজন্য f-অরবিটালের ইলেকট্রনগুলোর আবরণী প্রভাব খুবই কম হয়। 5f অরবিটালে ইলেকট্রন প্রবেশ করার সাথে সাথে মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা এক একক করে বৃদ্ধি পেতে থাকে। কিন্তু 5f অরবিটালের ইলেকট্রনগুলোর আবরণী প্রভাব বিশেষ বৃদ্ধি ঘটে না। ফলে নিউক্লিয়াসের ধনাত্মক আধানের আকর্ষণ পরবর্তী উপশক্তিস্তরের ইলেকট্রনগুলোকে আকৃষ্ট করে। ফলে মৌলগুলোর পারমাণবিক ও আয়নিক ব্যাসার্ধের ক্রমান্বয়ে হ্রাস ঘটে। যদিও আয়নিক ব্যাসার্ধের হ্রাস পারমাণবিক ব্যাসার্ধের হ্রাস অপেক্ষা অধিক নিয়মিত।
আরও দেখুন...